অ্যালেক্স হেলি তার ‘রুটস’ উপন্যাসে বলেছেন, ‘ঠিকঠাক ভাবে লেখা হলে কেবল বিজয়ী নয়, বিজিতদের ইতিহাসও মহত্তর হতে পারে।’’

আজ চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে। শুধু তাই না অর্ধেকেরও কম শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। 

আরো পড়ুন:

ত্বক সতেজ রাখতে এই ফল খেতে পারেন

যুক্তরাষ্ট্রের ‘এরিয়া ৫১’ সম্পর্কে জানলে চমকে যাবেন

আজ যারা ফেল করেছে, তাদের ফেল করার পেছনে ছোট ছোট অনেক কারণ যেমন থাকতে পারে, অনেক বড় কারণও থাকতে পারে। ফেল করা শিক্ষার্থীদের কথা যদি একটু মনোযোগ শোনার চেষ্টা করুন—আপনার এই সহানুভূতিশীল আচরণটুকু তার দায়বদ্ধতা বাড়াতে পারে, তাকে অদম্য করে তুলতে পারে, এবং নতুনভাবে শুরু করার প্রেরণা জোগাতে পারে।

আমরা সাধারণত দেখি যে, ফেল করা শিক্ষার্থীকে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া–প্রতিবেশী ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে চান না। 

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, ‘‘পরীক্ষার ফলাফল হলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের পারফরম্যান্স, কিন্তু তা কখনোই কারও মেধা বা সম্ভাবনার পূর্ণ চিত্র নয়।’’

জার্নাল অব পজিটিভ সাইকোলজির তথ্য ‘‘ব্যর্থতার পর যারা নিকটজনদের কাছ থেকে কৃতজ্ঞতা বা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পান তারা পুনরায় উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে দ্রুত পান।’’

বাবা মায়ের উচিত এ সময় কিছুটা সময় নিয়ে সন্তানের আগ্রহ নিয়ে কথা বলা। তাকে এ কথা বলা যে, নতুন পথ খোঁজার সুযোগ সবসময়ই থাকে।

শিক্ষার্থীর আত্মসম্মান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন, ‘‘কিশোর বয়সে আত্মসম্মান ও মানসিক চাপের ভারসাম্য রাখা ভবিষ্যৎ মানসিক সুস্থতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি।’’—সুতরাং সন্তানের আগামীর কথা চিন্তা করে হলেও তার সঙ্গে এমন আচরণ করুন, যাতে তার মানসিক চাপ না বাড়ে। 

ফেল করা শিক্ষার্থীর সহানুভূতি দরকার

পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সহানুভূতির চর্চা করা দরকার। এতে শিক্ষার্থী নিজেও নিজের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারবে। কেননা পরিবারের আবেগীয় পরিবেশই নির্ধারণ করে সন্তানের প্রতিক্রিয়া কতটা ইতিবাচক হবে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—

ফেল করা শিক্ষার্থী পরাজয়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তাকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মানসিক সমর্থন দিন। পিতা-মাতা, ভাই–বোন, নিকটাত্মীয়দের পক্ষে সম্ভব হলে ওই শিক্ষার্থীকে একটি উপহার দিন, কাছে বা দূরে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যান, তাকে পছন্দের খাবার খাওয়ান। 

বাবা-মায়েরা আপনার ফেল করা সন্তানকে আদরমাখা স্পর্শ দিন, বুকে জড়িয়ে নিন। এই আবেগীয় সমর্থনটুকু এখন আপনার সন্তানের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সন ত ন র সহ ন ভ ত ফ ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট বোর্ডে ১৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার, কমেছে জিপিএ-৫

সিলেট বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় এবারের পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা গত ১৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী।
সিলেট বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর ২০০৬ সাল থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ক্রমেই বেড়েছে। ওই বছর পাসের হার ছিল ৬৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এবারই প্রথম সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৬০ শতাংশের নিচে নেমেছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ফলাফলে সব সূচকে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। এবারের পরীক্ষায় ৪১ হাজার ৪০৮ জন ছাত্রী অংশ নিয়ে ২২ হাজার ১ জন পাস করেছেন। পাসের হার ৫৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২১ জন ছাত্রী।

অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৪৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ২৭ হাজার ৭৬৪ জন ছাত্র। এর মধ্যে পাস করেছেন ১৩ হাজার ৮৭০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৮১ জন।

বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭৯ জন। মানবিক বিভাগে পাসের হার ৪৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৫৩ জন। ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৫০ দশমিক ১৮ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭০ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া, সিলেট বোর্ডের অধীনে এবারের পরীক্ষায় চারটি প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেননি।

বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৬৯ হাজার ১৭২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৩৫ হাজার ৮৭১ জন; জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০২ জন। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত করোনা মহামারি, বন্যা পরিস্থিতি এবং ছাত্র আন্দোলনের কারণে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়নি। এবার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা ও ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্যের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলাফলে প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি কম হওয়াও পাসের হার কম হওয়ার অন্যতম কারণ।

আনোয়ার হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, সিলেট বোর্ডের পাসের হার বৃদ্ধি করতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বোর্ডের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগভিত্তিক যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ