কারখানার সাততলার পুরো ভবনটিই জ্বলছে, ছড়াচ্ছে পাশের ভবনেও
Published: 16th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় কারখানার আগুন ছড়িয়ে পড়ে সাততলার পুরো ভবনটিই জ্বলছে। সাত ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। থেমে থেমে কারখানাটির ভেতরে ছোট আকারে বিস্ফোরণ হচ্ছে। আগুনের তাপের কারণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কাছে যেতে পারছেন না। দূর থেকে এক পাশে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। এর মধ্যে আগুন পাশের একটি তিনতলা ভবনেও ছড়িয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ওই এলাকার অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। অ্যাডামস তোয়ালে, ক্যাপ এবং জিহং মেডিকেল সার্জিক্যাল গাউন তৈরির কারখানা। কারখানা ভবনটি সাততলার। দুটি কারখানার গুদামই সাততলায়, যেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও কারখানার মালিকপক্ষ জানিয়েছে, ভেতরে কোনো শ্রমিক আটকে নেই। সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে রাত সাড়ে আটটার দিকে দেখা যায়, আগুনের তাপের কারণে ভবনটির ১০০ মিটার পর্যন্ত কেউ যেতে পারছেন না। তাপের তীব্রতায় ভবনের ছাদ ধসে পড়ছে। এই ভবন থেকে আগুনের ফুলকি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আশপাশের ভবনে পানি ছিটিয়ে এ আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করার চেষ্টা করছেন। চারপাশে ভিড় করেছেন উৎসুক মানুষ। সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা তাঁদের ভবনের পাশ থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। উদ্ধার সহায়তায় দুই প্লাটুন বিজিবিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, আগুনের তাপের কারণে কারখানাটির কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আগুন নেভানোর পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কাজ করছেন তাঁরা। ভেতরে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে কারখানা দুটিতে আগুন লাগার পর আশপাশের কারখানাগুলোও বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এ এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
এ এলাকায় কিছু কারখানা রাতের পালায় চালু থাকত। জানতে চাইলে একটি কারখানার নিরাপত্তাকর্মী সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, তাঁর আজকের রাতের পালায় ডিউটি ছিল। ভবনটির পাশেই তাঁদের কারখানা; কিন্তু তাঁকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকার নির্বাহী পরিচালক আবদুস সুবহান বলেন, আশপাশের কোনো কারখানা খোলা রাখা হয়নি। আশপাশের কারখানায় যাতে আগুন না লাগে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুনইপিজেডে কারখানার আগুন চার ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ১৯টি ইউনিট২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আশপ শ র আগ ন ন আগ ন র স ততল
এছাড়াও পড়ুন:
গণপূর্তের কর্মকর্তা সরকারি বাসার দরজা-জানালা ‘খুলে নিয়ে গেছেন’
পাবনায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক উপসহকারী প্রকৌশলী বদলির সময় সরকারি বাসার দরজা-জানালা খুলে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বাসাটি পরিত্যক্ত স্থাপনায় পরিণত হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম ইব্রাহিম বিশ্বাস। তিনি ছয় মাস আগে পাবনা থেকে বদলি হয়েছেন। বর্তমানে রাঙামাটিতে কর্মরত।
স্থানীয় লোকজন ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসাটি একতলা হওয়ায় বেশ কিছু দিন সেখানে কেউ থাকতেন না। এতে ভবনটি কিছুটা বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল। উপসহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম বিশ্বাস পাবনায় দায়িত্ব পালনকালে বাসাটিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিছু মেরামত ও রঙের কাজ করে তিনি সেখানে থাকতেন। ছয় মাস আগে রাঙামাটিতে তাঁর বদলি হয়। এ সময় তিনি বাসাটি ছেড়ে রাঙামাটিতে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি সরকারি বাসার কিছু আসবাবপত্র ও দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যান।
ইব্রাহিম বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ওটা একটা পরিত্যক্ত বাসা ছিল। তাই দরজা-জানালা খুলে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার লাগানো হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা ভবনটির অবস্থা অনেকটা কঙ্কালের মতো। অবকাঠামো আছে, দরজা-জানালা কিছু নেই। ভবনের ভেতরটা পুরো ফাঁকা।
গণপূর্ত বিভাগের কয়েকজন কর্মচারীর দাবি, ভবনটিতে ওঠার সময় ইব্রাহিম বিশ্বাস কিছু মেরামতের কাজ করেছিলেন। খরচের টাকা না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। পরে বদলির সময় দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যান। এতে পুরো ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে গেছে।
প্রায় ছয় মাস পর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় শহরের ইছামতী নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি ও শিক্ষক মাহবুবুল আলম বলেন, জানামতে সরকারি সম্পদে খরচ করা যায়। কিন্তু নিয়ে যাওয়ার কোনো বিধান নেই। ওই কর্মকর্তা যে কাজ করেছেন, সেটি একটি অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, সরকারি সম্পদ জনগণের সম্পদ। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন দায়িত্বহীন আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয়। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার।
এ প্রসঙ্গে গণপূর্ত বিভাগ পাবনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ কবির বলেন, কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত ছিল। ইব্রাহিম বিশ্বাস যেসব জিনিস নিয়ে গেছেন, সেগুলো দ্রুতই আবার প্রতিস্থাপন করা হবে।