মিরপুরে আগুনের ঘটনায় শ্রমিকেরা ‘সেফ এক্সিট’ পাননি
Published: 16th, October 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হওয়ার এক দিন পরও পুলিশ এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বুধবার রাতে নিহত পোশাকশ্রমিক ছানোয়ার হোসেনের ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে আলম রাসায়নিকের গুদামের মালিক শাহ আলমসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে রূপনগর থানায় মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে যোগাযোগ করা হলে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এজাহারভুক্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ‘আলম কেমিক্যাল গোডাউন’ নামের ওই রাসায়নিকের গুদামের ব্যবস্থাপক আকরাম, এভারগ্রিন কালার প্রিন্ট ফ্যাক্টরির মালিক, ব্যবস্থাপক, এনআরএস-ওয়াস ফ্যাক্টরির মালিক, এনআরএস-ওয়াস ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপক, শাহ আলী ওয়াস ফ্যাক্টরি মালিক, শাহজালী ওয়াস ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপক। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রূপনগর থানায় হওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়, শাহ আলম আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য শিয়ালবাড়ি আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অনুমোদনহীন ভবনে দাহ্য পদার্থ মজুত করেন। গত মঙ্গলবার এই গুদামে আগুন লাগলে তা দ্রুত আশপাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পাশের ভবনে থাকা এভারগ্রিন কালার প্রিন্ট ফ্যাক্টরি, এনআরএস ওয়াস ফ্যাক্টরি ও শাহ আলী ওয়াস ফ্যাক্টরিতেও আগুন লাগে। আগুনের ভয়ে এসব কারখানার শ্রমিকেরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করেন।
শ্রমিকেরা ভবনগুলো থেকে নামার কোনো সেফ এক্সিট পাননি। আবার কয়েকটি ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগানো ছিল। শ্রমিকেরা প্রাণ বাঁচাতে ভবনের ছাদে গিয়েও বের হতে পারেননি। সেখানেও তালা লাগানো ছিল। মামলার আসামিরা আবাসিক এলাকার ভবনগুলো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা মাথায় না রেখে কারখানা পরিচালনা করে আসছিলেন। ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ–ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এতে আগুনে পুড়ে ১৬ জন শ্রমিক নিহত হন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কারখানার যন্ত্রাংশ, কাঁচামালসহ বিভিন্ন রাসায়নিক এবং ঘটনাস্থলের পাশে থাকা ৩টি মোটরসাইকেল, ১৫টি গ্যাস সিলিন্ডার, রাস্তায় থাকা পিকআপের সামনের অংশসহ ২টি রিকশা পুড়ে যাওয়ায় প্রাথমিকভাবে ৩০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
১৬ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্নশিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে নিহত ১৬ জনের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। তাঁদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
বুধবার ছয় মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তাঁরা হলেন মাহিরা আক্তার (১৪), নার্গিস আক্তার (১৮), নুরে আলম (২৩), সানোয়ার হোসেন (২২), আবদুল্লাহ আল-মামুন (৩৯) ও রবিউল ইসলাম রবিন (১৯)।
বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়া ১০ মরদেহের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন মুনা আক্তার সামিরা (১৪), ফারজানা আক্তার (১৫) ও মুক্তা আক্তার (৩০)। বাকি এক নারী ও ছয় পুরুষের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ময়ন তদন ত ভবনগ ল শ হ আল
এছাড়াও পড়ুন:
ঐক্য না থাকলে ফ্যাসিস্টরা সুযোগ নেবে: লক্ষ্মীপুরে এ্যানি
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট হলে পলাতক ফ্যাসিস্টরা এর সুযোগ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আজ শুক্রবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহরের গোডাউন সড়কের বশির ভিলায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের জেলা শাখার নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে এ্যানি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে এখন সুদৃঢ় ঐক্য দরকার, যে ঐক্য বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল। সর্বশেষ জুলাইয়ে যে ঐক্য ছিল, যদি এটা না থাকে, তাহলে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সুযোগ নিতে পারবে। কিন্তু পতিত ফ্যাসিস্টকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটা ভিন্ন এবং ব্যতিক্রমধর্মী, যার কারণে আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দিয়েই গণসংযোগে নেমেছি। আমরা বিগত ১৭ বছর মাঠে-ময়দানে থেকে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করেছি, এখনো করছি। লক্ষ্মীপুরসহ সারা দেশে সুদৃঢ় ঐক্যের মধ্যে আমরা আছি। এর মধ্যে থেকেই আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাব।’
সভায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের সমালোচনা করেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আবুল হোসেনের অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি মো. আবুল হাশেম। সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হাছিবুর রহমান প্রমুখ।