ট্রাইব্যুনাল ফেস না করে যানবাহনে আগুন মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না: প্রসিকিউটর
Published: 11th, November 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি (ফেস) না হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা, যানবাহনে আগুন দেওয়ার বিষয়টি সাধারণ মানুষ মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গাজী মোনাওয়ার এ কথা বলেন।
নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মন্তব্য করে এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ কেন এ ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে? ট্রাইব্যুনাল বা আদালত ফেস (মুখোমুখি) না করে রাস্তাঘাটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা, যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষের ওপর নির্যাতন বা মানুষের ভোগান্তির কারণ সৃষ্টি করা নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেবে না। সাধারণ মানুষ এটাকে মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে তাঁরা মনে করেন।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আজ ডিএমপির কমিশনার এসেছিলেন। নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে সার্বিকভাবে কোনো কথা হয়েছে কি না? আর রায়ের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন?
এর জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করা হবে। কবে রায় হবে, এটা ১৩ নভেম্বর জানা যাবে। সেটাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ বা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এরই ধারাবাহিকতায় হয়তো আজ ডিএমপির কমিশনার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এসেছিলেন উল্লেখ করে প্রসিকিউটর বলেন, ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে কমিশনারের সঙ্গে প্রসিকিউশনের কোনো কথা হয়নি। বাইরে কী করে গেছেন, এটা কমিশনার ভালো জানবেন। তাঁরা আশা করছেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, তাঁদের (প্রসিকিউশন) সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। কোনো ধরনের চাপ নেই। রায়ের তারিখ এলে রায় হবে। আজ আবু সাঈদের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।এভাবেই ট্রাইব্যুনাল স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
অন্য আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ১৩ নভেম্বর ঘিরে সার্বিকভাবে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে, ককটেল বিস্ফোরিত হচ্ছে—এই বিষয়গুলো কি স্বাভাবিক?
জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, এ জন্য সুপ্রিম কোর্ট, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, প্রসিকিউশন অফিসসহ আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ হয়েছে। সাধারণ বা যাঁরা অপ্রয়োজনীয় কাজে ঘোরেন বা ভবঘুরে আছেন, তাঁদের চলাচলের ব্যাপারে কিছু নিয়ন্ত্রণও আরোপ করা হয়েছে। এসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রসিকিউশন বা ট্রাইব্যুনালের কোনো সম্পর্ক নেই। যেকোনো পরিস্থিতিতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং সেটা নিচ্ছে বলেও দেখা যাচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রক ষ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
আ. লীগের ডাকা ‘লকডাউন’ কর্মসূচিতে কেউ মাঠে নামলেই গ্রেপ্তারের নির্দেশ
কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা ১৩ নভেম্বর ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। লকডাউনের কর্মসূচিতে কেউ মাঠে নামলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয় বৈঠকে। পাশাপাশি আগামী কয়েক দিন ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আইন শৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভাটি হওয়ার কথা ছিল আগামী মঙ্গলবার। আজ হঠাৎ করে এ বৈঠক ডাকা হয় মূলত আওয়ামী লীগের কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করতে। বৈঠকে পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশে বসে আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির একাধিক নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে যে প্রচার চালাচ্ছে, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এমনকি আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বরগুনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও গাজীপুর থেকে বেশ কিছু নেতা–কর্মী ঢাকায় এসেছেন বলে বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোস্ট বসানোর প্রস্তাব দেন একটি বাহিনীর প্রতিনিধি। পরে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের বরিশাল অঞ্চলের দুই নেতার নাম উল্লেখ করে তাঁদের অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়। এই দুই নেতা বিদেশ বসে আবারও অতীতের মতো কোনো কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারেন বলে আভাস দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা একটি সূত্র জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। আপাতত সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঠ থেকে না সরিয়ে আরও কিছুদিন রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কারণ মূলত আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে মাথায় রেখে।
এদিকে বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ১৩ নভেম্বর ঢাকা লকডাউন নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম এখন নিষিদ্ধ।
মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্য সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সেনাবাহিনী আগের মতোই মাঠে থাকবে। মাঠ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার করা হবে না।