রাজশাহীর পবা উপজেলায় ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে বিএনপির দুই নারী কর্মী মারধর ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নগরের অলকার মোড়ে একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন দুই বোন। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তি জামায়াতে ইসলামীর কর্মী। তবে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ব্যক্তি।

অভিযোগকারী দুজন হলেন উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নের নিলুফার ইয়াসমিন ও তাঁর বোন নূরভানু। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, গত মঙ্গলবার বোন নূরভানুসহ বিএনপির কয়েকজন নারী কর্মীকে নিয়ে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে দলটির প্রার্থী শফিকুল হকের পক্ষে প্রচারণায় যান। পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়নে তাঁরা লিফলেট বিতরণ করছিলেন। সন্ধ্যায় কাজ শেষে ফেরার পথে আশরাফের মোড় এলাকায় নাজমুল নামের এক ব্যক্তি তাঁদের জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে বলেন। এ সময় সেখানে জামায়াতের কর্মী নুরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

নিলুফার আরও বলেন বলেন, ‘আমরা বলি, আমরা বিএনপির কর্মী, ধানের শীষের জন্য ভোট চাই; জামায়াতের ভোট কেন চাইব?—এ কথা বলার পর তাঁরা (জামায়াতের নেতা-কর্মীরা) বিএনপিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করলে নুরুল ইসলাম একপর্যায়ে পায়ের স্যান্ডেল খুলে আমার বোন নূরভানুর ঘাড়ে আঘাত করেন এবং আমার পেটেও লাথি মারেন। ভোটের কথা বলায় আমাদের এভাবে মারধর করা হলো।’

নিলুফারের অভিযোগ, ঘটনার পর কাঁটাখালী থানায় অভিযোগ করা হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং তাঁদের হুমকি দিচ্ছেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী শফিকুল হক বলেন, ‘এটি শুধু বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা নয়, নির্বাচনে বিরোধীপক্ষের প্রচারণায় বাধা দেওয়ার একটি ফ্যাসিবাদী অপচেষ্টা। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, পবা উপজেলার হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব আবদুর রাজ্জাকসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ওই দুই নারীকে স্যান্ডেল দিয়ে মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নুরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বউ নৌকায় ভোট দিছে’—এটি বলে কটূক্তি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারীদের শুধু ধাক্কা দিয়েছিলাম। এই কথা আমার আত্মসম্মানে লাগে। আমার এক পা আগের রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত, অন্য পায়েও সমস্যা। রাগের মাথায় ধাক্কা দিয়েছি, কিন্তু স্যান্ডেল দিয়ে মারিনি।’

নুরুলের দাবি, অভিযোগকারী নিলুফার বিএনপির কর্মী নন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলীয় পরিচয় জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী এবং সংগঠনের ‘রোকন’ হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন। রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথি ছিলেন।

জানতে চাইলে পবা উপজেলা জামায়াতের আমির আযম আলী বলেন, নুরুল ইসলাম জামায়াতের একজন সমর্থক। তবে ওই দিন কী ঘটনা ঘটেছে, সেটি তিনি জানেন না।

এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কাঁটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন। তিনি বলেন, জিডিটি আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম ব এনপ র র কর ম ম রধর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এর সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আজ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর আগে আলী রীয়াজ সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ছিলেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ চূড়ান্ত করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি সুপারিশ পেশ করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ