সমীকরণটা এভাবেও বলা যায়, হামজা চৌধুরী ২:২ নেপাল। যেভাবে খেলাটা শেষ হলো তাতে ঢাকা স্টেডিয়ামের প্রায় ২০ হাজার সমর্থকরা এই কথাই যেন বলছিলেন।

পাক্কা ৫ বছর পর নেপালকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ পেল বাংলাদেশ। হামজা চৌধুরীর ৫ মিনিটের ম‌্যাজিকে দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল পায় বাংলাদেশ। প্রথমটা দুর্দান্ত ওভারহেড কিক। পরেরটা পানেনকা শট। প্রথমার্ধে ১-০ ব‌্যবধানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিড পায়। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সমীকরণটা ছিল, বাংলাদেশ ২: নেপাল ১।

আরো পড়ুন:

‘যেভাবে বার্সেলোনা ছাড়ব ভেবেছিলাম, তা হয়নি’ মেসির হৃদয়ভরা আক্ষেপ

টিকা না দেওয়ায় আর্জেন্টিনা স্কোয়াডে তুলকালাম, বাদ তিন তারকা

অথচ শেষটায় সেই পুরোনো রোগে আক্রান্ত! অন্তিম মুহূর্তে গোল হজম করা অভ‌্যাসে পরিণত করেছে বাংলাদেশ। চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে হামজা উঠে যাওয়ার সময় সেই ভয়, শঙ্কা আরো জোরালো হয়। সেটাই হলো।

ম‌্যাচের যোগ করা সময়ে গোল হজম করে বাংলাদেশ। নেপাল ২-২ গোলে সমতা ফেরায়। শেষ পর্যন্ত এই সমীকরণেই শেষ হলো দুই দলের ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম‌্যাচের লড়াই।

গত ৫ বছরে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে সাতবার। এর মধ্যে সর্বশেষ ৬ ম্যাচেই জয়হীন বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয় ৫ বছর আগে। ২০২০ সালের ঠিক আজকের দিনে, ১৩ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ২–০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। চারটি ড্র হয়েছে। নেপাল জিতেছে দুটিতে।

আজকেই জয়ে ফিরতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু হতে হতেও হলো না। বাংলাদেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা হামজা জোড়া গোল করে দলকে জয়ের খুব কাছে রেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। বাকিরা পারলেন না হামজার ম‌্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে।

প্রথমার্ধে বাংলাদেশের পারফরম‌্যান্স ছিল গড়পড়তা। গোছানো আক্রমণ দেখা যায়নি। গোলও আসেনি। উল্টো গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে দল। ২৯তম মিনিটে নেপাল এগিয়ে যায়। সুমিত শ্রেষ্ঠার কাট ব্যাক থেকে ফাঁকায় বল পান রোহিদ চাঁদ। দূর থেকে নেওয়া রোহিতের শট খুঁজে পায় বাংলাদেশের জাল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোলের জন‌্য মরিয়া হয়ে উঠে বাংলাদেশ। প্রথম মিনিটেই আসে মাহেন্দ্রক্ষণ। ডানপাশ থেকে ফাহিমের ক্রস নেপালের এক খেলোয়াড় হেডে বিপদমুক্ত হয় ঠিকই। কিন্তু বক্সের বাইরে পেয়ে যান জামাল ভূঁইয়া। তার বাড়ানো বল ফাঁকা জায়গায় পান হামজা। সময় নিয়ে ওভারহেড কিক নেন। গোলরক্ষকের তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

সমতা আনার তিন মিনিট পর বাংলাদেশ পেনাল্টি পায়। একেবারে শান্ত হামজা নেন শট। পানেনকা শটে বাংলাদেশের সুপারস্টার মুগ্ধ করেন সবাইকে। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম‌্যাচ এগিয়ে যায়। নেপাল গোল শোধে মরিয়া হয়ে উঠে।

৮০তম মিনিটে হামজা পায়ে চোট পেলে মাঠ ছেড়ে উঠে যান। প্রথমবারের মতো কিউবা মিচেল মাঠে নামেন। তার স্মরণীয় দিনটির শেষটা ভালো হয়নি। যোগ করা ৫ মিনিটের তৃতীয় মিনিটে সব আশা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। কর্নার থেকে আসা বলে পা ছুঁইয়ে নেপালকে সমতায় ফেরান অনন্ত তামাং। ডাগআউটে তখন হামজার বিষণ্ন মুখটাই কেবল দেখা যাচ্ছিল।

এই মাঠে শেষ ম‌্যাচেও হংকং চায়নার বিপক্ষে ম‌্যাচে যোগ করা সময়ে গোল হজম করে বাংলাদেশ। ৪-৩ গোলে ম‌্যাচ হেরে পয়েন্ট হারায়। আজ প্রীতি ম‌্যাচেও ড্র করলো। শেষ প্রান্তে গিয়ে এভাবে ম‌্যাচ জিততে না পারা আর কতোদিন চলবে?

জাতীয় দলের জার্সিতে ৫ ম‌্যাচে হামজার গোল সংখ‌্যা ৪। নিঃসন্দেহে দেশের ফুটবলের জাগরণ হয়েছে তার সৌজন্যেই। কিন্তু মাঠ থেকে প্রাপ্তির আনন্দ, মুখে চওড়া হাসি নিতে পারছেন না তিনি।

১৭ নভেম্বর এই মাঠেই ভারতকে আতিথেয়তা দেবে বাংলাদেশ। সেদিন কি সুদিন ফিরবে? 

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

হামজার জোড়া গোলের পর ‘পুরোনো রোগে’ জয় বঞ্চিত বাংলাদেশ

সমীকরণটা এভাবেও বলা যায়, হামজা চৌধুরী ২:২ নেপাল। যেভাবে খেলাটা শেষ হলো তাতে ঢাকা স্টেডিয়ামের প্রায় ২০ হাজার সমর্থকরা এই কথাই যেন বলছিলেন।

পাক্কা ৫ বছর পর নেপালকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ পেল বাংলাদেশ। হামজা চৌধুরীর ৫ মিনিটের ম‌্যাজিকে দ্বিতীয়ার্ধে জোড়া গোল পায় বাংলাদেশ। প্রথমটা দুর্দান্ত ওভারহেড কিক। পরেরটা পানেনকা শট। প্রথমার্ধে ১-০ ব‌্যবধানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিড পায়। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সমীকরণটা ছিল, বাংলাদেশ ২: নেপাল ১।

আরো পড়ুন:

‘যেভাবে বার্সেলোনা ছাড়ব ভেবেছিলাম, তা হয়নি’ মেসির হৃদয়ভরা আক্ষেপ

টিকা না দেওয়ায় আর্জেন্টিনা স্কোয়াডে তুলকালাম, বাদ তিন তারকা

অথচ শেষটায় সেই পুরোনো রোগে আক্রান্ত! অন্তিম মুহূর্তে গোল হজম করা অভ‌্যাসে পরিণত করেছে বাংলাদেশ। চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে হামজা উঠে যাওয়ার সময় সেই ভয়, শঙ্কা আরো জোরালো হয়। সেটাই হলো।

ম‌্যাচের যোগ করা সময়ে গোল হজম করে বাংলাদেশ। নেপাল ২-২ গোলে সমতা ফেরায়। শেষ পর্যন্ত এই সমীকরণেই শেষ হলো দুই দলের ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম‌্যাচের লড়াই।

গত ৫ বছরে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে সাতবার। এর মধ্যে সর্বশেষ ৬ ম্যাচেই জয়হীন বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয় ৫ বছর আগে। ২০২০ সালের ঠিক আজকের দিনে, ১৩ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ২–০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। চারটি ড্র হয়েছে। নেপাল জিতেছে দুটিতে।

আজকেই জয়ে ফিরতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু হতে হতেও হলো না। বাংলাদেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা হামজা জোড়া গোল করে দলকে জয়ের খুব কাছে রেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। বাকিরা পারলেন না হামজার ম‌্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে।

প্রথমার্ধে বাংলাদেশের পারফরম‌্যান্স ছিল গড়পড়তা। গোছানো আক্রমণ দেখা যায়নি। গোলও আসেনি। উল্টো গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে দল। ২৯তম মিনিটে নেপাল এগিয়ে যায়। সুমিত শ্রেষ্ঠার কাট ব্যাক থেকে ফাঁকায় বল পান রোহিদ চাঁদ। দূর থেকে নেওয়া রোহিতের শট খুঁজে পায় বাংলাদেশের জাল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোলের জন‌্য মরিয়া হয়ে উঠে বাংলাদেশ। প্রথম মিনিটেই আসে মাহেন্দ্রক্ষণ। ডানপাশ থেকে ফাহিমের ক্রস নেপালের এক খেলোয়াড় হেডে বিপদমুক্ত হয় ঠিকই। কিন্তু বক্সের বাইরে পেয়ে যান জামাল ভূঁইয়া। তার বাড়ানো বল ফাঁকা জায়গায় পান হামজা। সময় নিয়ে ওভারহেড কিক নেন। গোলরক্ষকের তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

সমতা আনার তিন মিনিট পর বাংলাদেশ পেনাল্টি পায়। একেবারে শান্ত হামজা নেন শট। পানেনকা শটে বাংলাদেশের সুপারস্টার মুগ্ধ করেন সবাইকে। এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম‌্যাচ এগিয়ে যায়। নেপাল গোল শোধে মরিয়া হয়ে উঠে।

৮০তম মিনিটে হামজা পায়ে চোট পেলে মাঠ ছেড়ে উঠে যান। প্রথমবারের মতো কিউবা মিচেল মাঠে নামেন। তার স্মরণীয় দিনটির শেষটা ভালো হয়নি। যোগ করা ৫ মিনিটের তৃতীয় মিনিটে সব আশা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। কর্নার থেকে আসা বলে পা ছুঁইয়ে নেপালকে সমতায় ফেরান অনন্ত তামাং। ডাগআউটে তখন হামজার বিষণ্ন মুখটাই কেবল দেখা যাচ্ছিল।

এই মাঠে শেষ ম‌্যাচেও হংকং চায়নার বিপক্ষে ম‌্যাচে যোগ করা সময়ে গোল হজম করে বাংলাদেশ। ৪-৩ গোলে ম‌্যাচ হেরে পয়েন্ট হারায়। আজ প্রীতি ম‌্যাচেও ড্র করলো। শেষ প্রান্তে গিয়ে এভাবে ম‌্যাচ জিততে না পারা আর কতোদিন চলবে?

জাতীয় দলের জার্সিতে ৫ ম‌্যাচে হামজার গোল সংখ‌্যা ৪। নিঃসন্দেহে দেশের ফুটবলের জাগরণ হয়েছে তার সৌজন্যেই। কিন্তু মাঠ থেকে প্রাপ্তির আনন্দ, মুখে চওড়া হাসি নিতে পারছেন না তিনি।

১৭ নভেম্বর এই মাঠেই ভারতকে আতিথেয়তা দেবে বাংলাদেশ। সেদিন কি সুদিন ফিরবে? 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ