Samakal:
2025-08-02@10:31:07 GMT

দেরি করে ফেললেন লিটন

Published: 13th, January 2025 GMT

দেরি করে ফেললেন লিটন

খালেদ মাহমুদ সুজন কয়েক দিন আগে বলেছিলেন, লিটন কুমার দাসের ব্যাটিংয়ের ভক্ত তিনি। জাতীয় দলের সব সংস্করণে নিয়মিত দেখতে চান উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারকে। কিন্তু ছবির মতো ব্যাটিং করা লিটন যে রানের ছবি আঁকতে পারছেন না অনেক দিন ধরে। এক-দুটি দারুণ শটে জ্বলে ওঠার বার্তা দিয়েও ধপ করে নিভে যেতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এতটাই খারাপ সময় পার করছেন, শেষ ১৩ ইনিংসে কোনো ফিফটি নেই। শেষের ৭ ইনিংসে আউট হয়েছেন এক অঙ্কের রানে। লিটনের অধারাবাহিকতার ধারাবাহিকতা নির্বাচকদের আস্থার জায়গা নড়বড়ে করে দিয়েছে। 

টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসার জায়গায়ও ছিলেন না ডানহাতি এ ব্যাটার। তাই গতকাল ঘোষিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ১৫ জনের দলে রাখা হয়নি লিটনকে। তাঁর জায়গায় নেওয়া হয়েছে উদীয়মান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে। এক দিনের ক্রিকেটে এখনও যাঁর অভিষেক হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল যখন চূড়ান্ত করা হয়ে গেছে, লিটন তখন রানে ফেরার বার্তা দেন। নির্বাচকদের আস্থা হারানো লিটন শেষ দুই ম্যাচে খেলেন দুটি বড় ইনিংস। গতকাল ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ার খবর শুনে নেমেছিলেন ম্যাচ খেলতে। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে হার না মানা ৫৫ বলে ১২৫ রানের ইনিংস খেলেন। লিটনের এই ইনিংস দেখার পর টিম ম্যানেজমেন্টের আক্ষেপ হওয়ার কথা। একজন নির্বাচক তো সমকালকে বলেই দেন, ‘এক সপ্তাহ দেরি হয়ে গেছে।’

ইমন ছাড়া কোনো চমক নেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে। চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে না থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয় দলে ফিরেছেন। পিতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান দলে ফেরায় জায়গা হারাতে হয়েছে হাসান মাহমুদকে। যদিও উইন্ডিজ সফরে খেলেছে পাঁচ পেসার নিয়ে। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও তাঁকে যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নেওয়া হবে না, তা জানাই ছিল ক্রিকেটানুরাগীদের। তবে সাকিবের চেয়েও বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে লিটনের বাদ পড়া। 

এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর কাছে জানতে চাওয়া হলে দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ছন্দে না থাকা, আউটের ধরন অনেকটা একই রকম। সাদা বলে পাওয়ার প্লেতে যে সুবিধা নেওয়া দরকার, উইকেটে থাকতে পারছে না। স্ট্রাইক রেট বাড়ছে। তিন নম্বর এক্সপোজ হয়ে যাচ্ছে। তবু সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু আস্থার জায়গাটা এই মুহূর্তে সেই অবস্থানে নেই। দ্বিতীয়ত সৌম্য ও তামিম জুটি হিসেবে ভালো করছে। এই দুইজন সম্ভবত ইনিংস শুরু করবে। তাই প্রথম একাদশে লিটনের জায়গা নেই। তার ক্লাস নিয়ে সন্দেহ নেই। ফর্মে সংকট দেখা দিলে সেখান থেকে বের করতে যদি কাজ করতে পারি, তাহলে তাকে ভালোভাবে বের করে আনতে পারব। আমাদের বিশেষজ্ঞরা কাজ করার সুযোগ পাবে এই সময়ে।’

সাকিবের বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিবেচনা করা হয়নি বলে জানান প্রধান নির্বাচক। যদিও ব্যাটার সাকিবও জাতীয় দলে খেলার যোগ্য। তাই কানাঘুষার সূত্র ধরে সংবাদ সম্মেলনে লিপুর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সাকিবের ব্যাটারে সরকারের দিক থেকে সবুজ সংকেত ছিল কিনা। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি লিপু। তবে ইমনকে দলে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি, ‘ওর হয়তো হিউজ কোনো কন্ট্রিবিউশন নেই। তবে আমাদের যেটা মনে হয়েছে, আমরা যেটা খুঁজছি.

.. পাওয়ার প্লেতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং, সেটা ওর মধ্যে আছে। বিকল্প কাউকে লাগলে সে (তানজিদ-সৌম্যর মতো) একই মেজাজে খেলতে পারবে। দলকে জেতাতে মূল লক্ষ্য ঠিক রাখতে সে সব সময় আক্রমণাত্মক থাকে। এটা একটা বড় বিবেচনার বিষয়। সামনে হয়তো সে অবদান রাখতে পারবে। তাই বড় টুর্নামেন্টে তাকে নেওয়া হয়েছে।’

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ