খালেদ মাহমুদ সুজন কয়েক দিন আগে বলেছিলেন, লিটন কুমার দাসের ব্যাটিংয়ের ভক্ত তিনি। জাতীয় দলের সব সংস্করণে নিয়মিত দেখতে চান উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারকে। কিন্তু ছবির মতো ব্যাটিং করা লিটন যে রানের ছবি আঁকতে পারছেন না অনেক দিন ধরে। এক-দুটি দারুণ শটে জ্বলে ওঠার বার্তা দিয়েও ধপ করে নিভে যেতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এতটাই খারাপ সময় পার করছেন, শেষ ১৩ ইনিংসে কোনো ফিফটি নেই। শেষের ৭ ইনিংসে আউট হয়েছেন এক অঙ্কের রানে। লিটনের অধারাবাহিকতার ধারাবাহিকতা নির্বাচকদের আস্থার জায়গা নড়বড়ে করে দিয়েছে।
টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসার জায়গায়ও ছিলেন না ডানহাতি এ ব্যাটার। তাই গতকাল ঘোষিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ১৫ জনের দলে রাখা হয়নি লিটনকে। তাঁর জায়গায় নেওয়া হয়েছে উদীয়মান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে। এক দিনের ক্রিকেটে এখনও যাঁর অভিষেক হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল যখন চূড়ান্ত করা হয়ে গেছে, লিটন তখন রানে ফেরার বার্তা দেন। নির্বাচকদের আস্থা হারানো লিটন শেষ দুই ম্যাচে খেলেন দুটি বড় ইনিংস। গতকাল ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ার খবর শুনে নেমেছিলেন ম্যাচ খেলতে। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে হার না মানা ৫৫ বলে ১২৫ রানের ইনিংস খেলেন। লিটনের এই ইনিংস দেখার পর টিম ম্যানেজমেন্টের আক্ষেপ হওয়ার কথা। একজন নির্বাচক তো সমকালকে বলেই দেন, ‘এক সপ্তাহ দেরি হয়ে গেছে।’
ইমন ছাড়া কোনো চমক নেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে। চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে না থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয় দলে ফিরেছেন। পিতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান দলে ফেরায় জায়গা হারাতে হয়েছে হাসান মাহমুদকে। যদিও উইন্ডিজ সফরে খেলেছে পাঁচ পেসার নিয়ে। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও তাঁকে যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নেওয়া হবে না, তা জানাই ছিল ক্রিকেটানুরাগীদের। তবে সাকিবের চেয়েও বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে লিটনের বাদ পড়া।
এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর কাছে জানতে চাওয়া হলে দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ছন্দে না থাকা, আউটের ধরন অনেকটা একই রকম। সাদা বলে পাওয়ার প্লেতে যে সুবিধা নেওয়া দরকার, উইকেটে থাকতে পারছে না। স্ট্রাইক রেট বাড়ছে। তিন নম্বর এক্সপোজ হয়ে যাচ্ছে। তবু সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু আস্থার জায়গাটা এই মুহূর্তে সেই অবস্থানে নেই। দ্বিতীয়ত সৌম্য ও তামিম জুটি হিসেবে ভালো করছে। এই দুইজন সম্ভবত ইনিংস শুরু করবে। তাই প্রথম একাদশে লিটনের জায়গা নেই। তার ক্লাস নিয়ে সন্দেহ নেই। ফর্মে সংকট দেখা দিলে সেখান থেকে বের করতে যদি কাজ করতে পারি, তাহলে তাকে ভালোভাবে বের করে আনতে পারব। আমাদের বিশেষজ্ঞরা কাজ করার সুযোগ পাবে এই সময়ে।’
সাকিবের বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিবেচনা করা হয়নি বলে জানান প্রধান নির্বাচক। যদিও ব্যাটার সাকিবও জাতীয় দলে খেলার যোগ্য। তাই কানাঘুষার সূত্র ধরে সংবাদ সম্মেলনে লিপুর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সাকিবের ব্যাটারে সরকারের দিক থেকে সবুজ সংকেত ছিল কিনা। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি লিপু। তবে ইমনকে দলে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি, ‘ওর হয়তো হিউজ কোনো কন্ট্রিবিউশন নেই। তবে আমাদের যেটা মনে হয়েছে, আমরা যেটা খুঁজছি.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস