বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) আগের মতোই ব্যাংক থেকে চাঁদা তোলা শুরু করেছে। সম্প্রতি সংগঠনটি প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণভান্ডারে কম্বল দিতে পরিমাণ উল্লেখ করে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে মোট ৪ কোটি টাকা অনুদান দিতে চাঁদা নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।

বিএবির এই পদক্ষেপ বিস্মিত করেছে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের। ছয়টি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা বিএবির পক্ষ থেকে এ ধরনের চিঠি পাঠানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৎকালীন বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংকগুলো থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে চাঁদা আদায় করতেন। এরপর মালিকেরা মিলে সেই অর্থ ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়ে আসতেন। বিনিময়ে ব্যাংকগুলো ব্যাংক কোম্পানি আইন ও নীতিমালার বিভিন্ন শর্ত থেকে ছাড় পায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সে কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএবি পর্ষদে পরিবর্তন আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএবি আগে গণহারে চাঁদাবাজি করে ব্যাংক খাতকে ডুবিয়েছে। নতুন কমিটিও একই কাজ শুরু করলে সেই উদ্যোগ অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা দরকার। জনগণের আমানত নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলা যাবে না। যে খাতে সামাজিক দায়বদ্ধতার টাকা খরচ করা যায়, সব ব্যাংক সেই সব খাতেই খরচ করবে। বিএবি এই টাকায় হাত দেওয়ার কেউ না।’

১৭ বছরে এক চেয়ারম্যান

২০০৮ সাল থেকে টানা ১৭ বছর বিএবির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। এ সময় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পান। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক ও চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বিএবির চেয়ারম্যান পদও হারান তিনি। সরকার বদলের পর নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিএবির দুই ভাইস চেয়ারম্যানও ব্যাংকের পরিচালক পদ হারান। তাঁরা হলেন আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ। অপরজন হলেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে সর্বশেষ ‘শেখ হাসিনা আন্তব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজন করে বিএবি। এ জন্যও ব্যাংকগুলো থেকে চাঁদা তোলা হয়। নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে বিএবি গত ১৫ বছরে বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাংকগুলো থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা তুলেছে বলে জানান ব্যাংকাররা। এ জন্য সরকার বদলের পর এসব টাকার ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, দাবি ওঠে নিরীক্ষার।

ব্যাংকগুলো গত ১০ বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা শুধু প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেয়। ২০২২ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক নির্দেশনায় জানায়, ব্যাংকগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের ৫ শতাংশ অর্থ প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাসহায়তা ট্রাস্ট তহবিলে অনুদান হিসেবে জমা দিতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়।

জানা যায়, এবার ম্যারাথনের জন্য সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়া হয়েছে। বেসরকারি খাতের শীর্ষ পর্যায়ের একটি ব্যাংকের এমডি নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৫ বছরে তিনি প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছেন। সরকার বদলের পর চিঠি পেয়ে কম্বল কিনে জমা দিয়েছেন। ম্যারাথনের জন্য টাকা চেয়ে চিঠি এসেছে। এ সপ্তাহেই তা দেওয়া হবে। এভাবে চাঁদা আদায়ের ফলে ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

নতুন কমিটিও আগের ধারাতেই

গত সেপ্টেম্বরে বিএবি নতুন অস্থায়ী (অ্যাডহক) কমিটি গঠন করে। চলতি মাসে তাঁরা পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান হয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার। ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান এবং ব্যাংক এশিয়ার চেয়ারম্যান রোমো রউফ চৌধুরী।

বিএবির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিএবি একটি পরামর্শ সেবা দেওয়া সংগঠন। ব্যাংক খাতের যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে থাকে বিএবি। সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখে।

১৯৯৩ সালে বেসরকারি খাতের ৯ ব্যাংকের উদ্যোক্তারা মিলে বিএবি গঠন করেন। ব্যাংকগুলোর চাঁদায় পরিচালিত হয় বিএবির কার্যক্রম। এখন ৩৮টি ব্যাংক বিএবির সদস্য।

বিএবির কমিটিতে যুক্ত একজন ব্যাংক চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বিএবি আগে যে ধারায় চলেছে, এখনো তা থেকে খুব একটা বের হতে পারেনি।

বিএবির নতুন কমিটি আগের চাঁদা আদায়ের বিষয়ে কোনো নিরীক্ষা করেনি বরং আগের ধারাতেই চলছে বলে বিভিন্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সর্বশেষ কম্বল ও ম্যারাথনের মতো আয়োজনের জন্য চাঁদা চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি। গত ১৫ ডিসেম্বর দেওয়া চিঠিতে প্রতিটি ব্যাংকের জন্য কম্বলের পরিমাণ নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে প্রতিটি কম্বলের ওজন কমপক্ষে ১ হাজার ২০০ গ্রাম হতে হবে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে সর্বশেষ ‘শেখ হাসিনা আন্তব্যাংক ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজন করে বিএবি। এ জন্যও ব্যাংকগুলো থেকে চাঁদা তোলা হয়।

এরপর ৫ জানুয়ারি আরেক চিঠিতে বিএবির চেয়ারম্যান ব্যাংকগুলোকে জানান, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ৪ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করে ৮ জানুয়ারির মধ্যে বিএবির হিসাবে সেই অর্থ জমা দিতে বলা হয়। ঢাকা আন্তর্জাতিক ম্যারাথন আয়োজক কমিটি বিএবিকে যে চিঠি দিয়েছে তাতে মূল স্পনসরের জন্য সর্বোচ্চ চাঁদা চাওয়া হয়েছে ২ কোটি টাকা। ফলে কেন ৪ কোটি টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

দুটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আগে শীত কিংবা গরম, ঝড় বা বৃষ্টি যেকোনো ইস্যু পেলেই ব্যাংক থেকে চাঁদা তোলা হয়েছে। এতে ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (সিএসআর) কার্যত শূন্য হয়ে পড়ে। এখনো একই পথে হাঁটছে বিএবি। এতে ব্যাংকগুলোর পক্ষে সত্যিকার সিএসআর কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিএবি নেতাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কথা বলা যায়নি।

গত দেড় দশকে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করে ঋণের ৯ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ, পরিচালকদের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য ব্যাংক আইন সংশোধন, বিভিন্ন ঋণ নীতিমালা শিথিল করতে সক্রিয় ভূমিকা রাখা ছাড়া বিএবিকে অন্য কোনো ভূমিকায় খুব একটা দেখা যায়নি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএবির চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। চাঁদার মাধ্যমে তারা শক্তিশালী হয়ে ওঠে, আইনও পরিবর্তন করে ফেলে। এর ফলে ব্যাংক খাতের করুণ অবস্থা দাঁড়িয়েছে। আইনে সিএসআরের অর্থের যে ব্যবহার হওয়ার কথা, শুধু সেই খাতে ব্যবহার করতে হবে। ব্যাংকগুলো নিজ উদ্যোগে এই অর্থ ব্যবহার করতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়া সংরক্ষণে কাজে আসেনি ২০ কোটি টাকার ‘গছানো’ লবণ

পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া পায় মূলত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলো। কিন্তু প্রতিবছর চামড়ার দর কমছে। প্রাথমিক সংগ্রহকারীরাও চামড়া সংরক্ষণে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাই এবার সরকার চামড়া সংরক্ষণ করার জন্য এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠানকে লবণ দিয়েছিল; কিন্তু এসব লবণ তেমন কাজে আসেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০ কোটি ব্যয়ে ১১ হাজার ৫৭১ টন লবণ কিনে ৬৪ জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রতিষ্ঠানকে লবণ বরাদ্দ দেওয়া হয়। লবণ নিয়ে বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। আবার তালিকায় নাম থাকলেও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের লবণ না পাওয়ার অভিযোগও আছে।

আমরা আড়াই মণ লবণ পেয়েছি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে চামড়া সংরক্ষণের দরকার পড়েনি। যারা চামড়া নিয়েছে, তাদের চামড়ার সঙ্গে লবণও দিয়ে দিয়েছিচট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আবু বকর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইউছুপ

গত ২৭ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে লবণ কেনার জন্য বরাদ্দের নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষককে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) তালিকা অনুযায়ী লবণ মিলমালিকদের কাছ থেকে জেলা প্রশাসকেরা লবণ সংগ্রহ করেন।

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার আবু বকর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইউছুপ বলেন, তাঁরা এবার চামড়া সংগ্রহ করেছেন ৪৭৯টি। ঈদের দিন বিকেলে সংগ্রহ শেষে রাতেই আড়তদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আড়াই মণ লবণ পেয়েছি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে চামড়া সংরক্ষণের দরকার পড়েনি। যারা চামড়া নিয়েছে, তাদের চামড়ার সঙ্গে লবণও দিয়ে দিয়েছি।’

যাদের লবণ দিয়েছি, তার মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি বলে জানিয়েছে। তারা সেসব লবণ পাশের মাদ্রাসায় যেখানে বেশি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে, সেখানে হস্তান্তর করে।জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম

সংরক্ষণ না করলেও অনেক প্রতিষ্ঠানে লবণ দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় এতিমখানা কমদমোবারকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজন না থাকলেও লবণ নিতে বলা হয়েছিল। আমাদের যেহেতু দরকার হবে না, তাই আমরা নিইনি।’

চট্টগ্রামে ৯৮ লাখ ৪২ হাজার টাকায় ৬৪০ টন লবণ দেওয়া হয়। জোর করে লবণ বরাদ্দের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যাদের লবণ দিয়েছি, তার মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি বলে জানিয়েছে। তারা সেসব লবণ পাশের মাদ্রাসায় যেখানে বেশি চামড়া সংগ্রহ হয়েছে, সেখানে হস্তান্তর করে।’

খাগড়াছড়িতে বরাদ্দ লবণ দেওয়া হয়েছে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে। জেলার জব্বারিয়া আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসায় চার টন লবণ দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু আমরা চামড়া সংরক্ষণ করিনি।’

এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘চাহিদার ভিত্তিতে লবণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ যেহেতু আসছে তাহলে বিষয়টি রিভিউ (পর্যালোচনা) করতে হবে।’

ফেনীতে লবণ পেয়েও অনেক প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি। অনেকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় লবণ নেয়নি। লবণ নিয়েছে এমন বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ না করেই বিক্রি করেছে। চামড়া সংরক্ষণ করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম।চামড়া সংরক্ষণ খুবই কম

ফেনীতে লবণ পেয়েও অনেক প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ করেনি। অনেকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় লবণ নেয়নি। লবণ নিয়েছে এমন বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান চামড়া সংরক্ষণ না করেই বিক্রি করেছে। চামড়া সংরক্ষণ করেছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম।

ফেনীর দাগনভূঞার তালতলী কওমি মাদ্রাসার মুহতামিম কামরুল আহসান বলেন, চামড়া সংরক্ষণের জন্য ৬২ বস্তা লবণ তাঁদের জোর করে দেওয়া হয়। কিন্তু চামড়া সংরক্ষণ না করেই তাঁরা বিক্রি করেন। প্রতিটি লবণের বস্তা বিক্রি করেন ৩০০ টাকা দরে।

ফুলগাজীর নুরপুর দারুল উলুম মহিউসুন্নাহ মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষা পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, উপজেলা প্রশাসন থেকে তাঁদের লবণ নিতে বলা হলেও চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা নেননি।

তবে প্রয়োজন থাকলেও লবণ পায়নি এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ফেনী সদরের শর্শদি দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল করিম বলেন, তাঁরা এবার এক হাজার চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু তাঁদের লবণ দেওয়া হয়নি। কেউ এ বিষয়ে যোগাযোগও করেনি।

ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, চামড়া সংরক্ষণ করার উদ্দেশেই লবণ দিয়েছে সরকার। তবে লবণ নিয়েও কারও কারও চামড়া সংরক্ষণ না করার বিষয়ে শুনেছেন। লবণ না পেলেও তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।


[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি ও সংবাদদাতা, ফেনী]

সম্পর্কিত নিবন্ধ