শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়ার মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা চাইলেন ড. ইউনূস
Published: 13th, January 2025 GMT
বাংলাদেশি শ্রমিকদের মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা দিতে মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুহাদা ওসমান সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা পেলে বাংলাদেশি শ্রমিকরা প্রয়োজন অনুযায়ী দেশে ফিরতে পারবেন। আবার যেতেও পারবেন।
গত বছরের মে মাসে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মালয়েশিয়ায় কাজে যোগ দিতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিককে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। এ সময় হাইকমিশনার সুহাদা ওসমান জানান, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে কুয়ালালামপুরে বৈঠক করেছে। আজ মঙ্গলবার একই বিষয়ে আরেকটি বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা গত ১ জানুয়ারি থেকে আসিয়ান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশকে আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার এবং পূর্ণ সদস্য হতে সমর্থন দিতে দেশটির প্রতি আহ্বানও জানান।
বাংলাদেশে আরও বেশি মালয়েশীয় বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশা করি আপনার (হাইকমিশনার সুহাদা ওসমান) বাংলাদেশে অবস্থানকালে অর্থনীতি এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।’
অনুষ্ঠানে এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
জাবি উপাচার্যের সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টা ড.
বহুল প্রতীক্ষিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে উপাচার্য কামরুল আহসান এ সময় প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ চান।
প্রধান উপদেষ্টা এ সময় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় যদি চায়, তাহলে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। নির্বাচনটি আপনাদের নেতৃত্বে আয়োজন করুন।
এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জাবি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন ড. ইউনূস। শিক্ষায় অগ্রগতিতেও সন্তোষ জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান ও অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রব প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
রবিবার বিকেল থেকে ইরানজুড়ে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
রবিবার রাতে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইদ খাতিবজাদেহ ইসরায়েলি হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি জানান, রবিবার রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
এক্স-পোস্টে সাইদ বলেছেন, “ইসরায়েলের অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভবনে ইচ্ছাকৃত এবং নির্মম হামলা চালিয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
উপ-মন্ত্রী আরো বলেন, “এই হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন, আমার বেশ কয়েকজন সহকর্মীও আহত হয়েছেন, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
সাইদ বলেন, “এটি আরো একটি স্পষ্ট যুদ্ধাপরাধ, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর চলমান ও নিয়মতান্ত্রিক আগ্রাসন অভিযানের অংশ।”
এর আগে শনিবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তেহরানের অস্ত্র উৎপাদন ক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে ইরানের আইআরজিসি ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে রবিবার নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলায় ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), গার্ডস কুদস ফোর্স এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো জানিয়েছে, ইরানজুড়ে অসংখ্য অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানি বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই হামলায় আইআরজিসিরি গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার সহকারী হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মোহসেন বাঘারি নামে আইআরজিসির আরো একজন জেনারেল নিহত হয়েছেন। এর প্রতিশোধ নিতে রবিবার রাতে ইসরায়েলে ৫০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও শতাধিক ড্রোন ছুড়েছে ইরান।
ইসরায়েলের ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিসের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, উত্তর ইসরায়েলে দুটি এবং হাইফায় একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার খবর পেয়েছে তারা।
ইসরায়েলি জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা জানিয়েছে, হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সাতজন আহত হয়েছেন। এছাড়া কিরিয়াত গাটের কাছে দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহরে একজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইরানের ওপর আক্রমণ আরো তীব্র করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একটি বিবৃতি জারি করে ইসরায়েরি সেনাপ্রধান বলেছেন, “আমরা আমাদের অভিযান তীব্রতর করে যাব এবং এটি করে, আগামী বছরগুলোতে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার করব। আমরা জানতাম এর একটি মূল্য দিতে হবে এবং এটিই বোঝায় যে, আমরা কেন এখনই পদক্ষেপ নিয়েছি, তা অনেক দেরি হওয়ার আগেই।”
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় ২২৪ জন নিহত এবং ৯০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন নিহত এবং ৩৭০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ