ইউনূসের সফর ঘিরে জেনেভায় বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা আ.লীগের
Published: 14th, January 2025 GMT
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে আগামী ২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলন। মর্যাদাপূর্ণ এই সম্মেলনে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফর ঘিরে আগামী ২০ জানুয়ারি বিকেলে বিক্ষোভ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে আওয়ামী লীগ সুইজারল্যান্ড শাখা। ওইদিন দেশটিতে পৌঁছানোর কথা প্রধান উপদেষ্টার।
জানা গেছে, বিক্ষোভ সমাবেশকে ঘিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে আগস্টে পদত্যাগ করে ভারতে অবস্থান নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার।
আরো পড়ুন:
বরিশালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
‘খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশ গেছেন, আর হাসিনা পালিয়ে’
আওয়ামী লীগ সুইজারল্যান্ড শাখার উদ্যোগে জেনেভা জাতিসংঘ চত্বরে আগামী ২০ জানুয়ারি স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ড.
আওয়ামী লীগ সুইজারল্যান্ড শাখা সভাপতি জমাদার নজরুল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, স্বাধীনতার পক্ষের অন্যান্য সংগঠন ও ইউরোপে বসবাসরত আওয়ামী লীগ কর্মী-সদস্যদের সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সুইজারল্যান্ড শাখার পক্ষ থেকে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে।
সর্ব ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকারও কথা রয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে এবং ড. ইউনুসের পদত্যাগ দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনটি অভিজাতদের সমাবেশ হিসেবে পরিচিত।
২০ থেকে ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে বিশ্বের প্রায় ১০০-এর বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশ নেবেন। এই ফোরামে এক হাজার পার্টনার কোম্পানির প্রধান নির্বাহী এবং চেয়ারম্যান সক্রিয়ভাবে জড়িত। জি-৭ ও জি-২০ দেশগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রধানরাও সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া সুশীল সমাজ, শ্রম ও মিডিয়া সংস্থার প্রতিনিধিদের পাশাপাশি শীর্ষ থিংক ট্যাংক এবং শিক্ষাবিদরাও থাকেন।
দাভোস সম্মেলনে অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, বিভিন্ন কোম্পানি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা বার্ষিক এই সম্মেলনের বাইরে সাইডলাইন বৈঠক করে থাকেন।
সম্মেলনে প্রভাবশালী কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানরাও থাকবেন। ফলে তাদের সঙ্গে সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন বলে জানায় পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্র।
সম্মেলনে যোগদান শেষে ২৪ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব