শিল্পকারখানার সঙ্গে আবাসিকেও গ্যাসের দাম বাড়তে পারে। বাসাবাড়ির মিটারহীন গ্রাহকদের গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে তিতাস গ্যাস কোম্পানি। নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের সঙ্গে আবাসিকের প্রস্তাবটিও দেওয়া হবে। তিতাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেছন, সংকটের কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় বাসাবাড়ির লাইনে গ্যাস থাকে না। রান্না করতে হয় বৈদ্যুতিক বা এলপি গ্যাসে। এরপরও দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ হবে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। 
এদিকে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে ৩৭ পয়সা বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনে বিইআরসি এ তথ্য জানিয়েছে।  

বাসাবাড়ির গ্যাস
গত মাসে এক বৈঠকে নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ সংযোগে গ্যাসের দাম আমদানি করা এলএনজির সমান করার সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি বিভাগ। এর পরই ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) নতুন শিল্পকারখানা ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে গ্যাসের দাম যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটার ৩০ ও ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা। আইনগতভাবে পেট্রোবাংলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ নেই। কেবল লাইসেন্সধারী সংস্থা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারে। এ কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব চায় বিইআরসি। এ জন্য ৭ জানুয়ারি একটি ইস্যু করা পত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে মূল্য পরিবর্তনের প্রস্তাব কমিশনে দাখিল করতে বলে।
এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহক অনেক বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের বিল ও দুই চুলা ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে মিটার ছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের ১০০ ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস ব্যবহারের রেকর্ড রয়েছে। বেশি ব্যবহার করলেও মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের বিল নির্ধারিত। অপচয় রোধে দাম বাড়ানো উচিত। নতুন শিল্প আর মিটারহীন আবাসিকে একসঙ্গে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে।
বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। আবাসিকে গ্যাসের ক্ষেত্রে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯৯০ টাকা আর দুই চুলার দর ১ হাজার ৮০ টাকা করা হয়। মিটারযুক্ত আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটারের দাম হয় ১৮ টাকা। দেশে আবাসিক গ্রাহক সংখ্যা ২৮ লাখ ৫৭ হাজার। এর মধ্যে প্রিপেইড মিটার গ্রাহক রয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার।

এলপিজির দাম বাড়ল
এদিকে ভ্যাট সমন্বয় করায় প্রতি কেজি এলপিজির দাম ১২১ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা করা হয়েছে। 
এতে বহুল ব্যবহৃত ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৫৫ থেকে বেড়ে ১ হাজার ৪৫৯ টাকা হয়েছে। শুধু ১২ কেজি নয়; ৫ কেজি, সাড়ে ১২ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে।

গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজি বা অটোগ্যাসের দাম এক টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি ৬৭ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি এলপিজির দাম প্রতি কেজি ১২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, এলপিজির ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার পরিবর্তনের ফলে জানুয়ারির জন্য সরকারি-বেসরকারি এলপিজির মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
সোমবার এলপি গ্যাস উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করার বিশেষ আদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর পরও এলপিজির দাম কেন বাড়ানো হলো– জানতে চাইলে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, এর আগে এলপিজিতে উৎপাদক পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে আরও ২ শতাংশ– মোট ৭ শতাংশ ভ্যাট ছিল। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এলপ জ র দ ম ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

হাদিকে গুলির ঘটনা আ.লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ: নাহিদ

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই মন্তব্য করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান

দুর্নীতি-সন্ত্রাসের অভিযোগ পেলে প্রার্থিতা বাতিল: নাহিদ 

নাহিদ ইসলাম বলেন, “হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আওয়ামী লীগের নির্বাচনবিরোধী ছকের অংশ।”

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে নরমালাইজ করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা দেখছি।”

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় সব জায়গায় আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করা, প্রশাসনিকভাবে প্রতিহত করা এবং ভারতের হস্তক্ষেপ বন্ধ করার কথা বলেছি।”

পতিতরা নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচনি পরিবেশ ফেরাতে হবে।”

নাহিদ বলেন, “আমরা সর্বাত্মকভাবে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখব বলেছি। হামলাকারী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি।”

এর আগে সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে তিনটি দলের দুজন করে প্রতিনিধি অংশ নেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি দলে ছিলেন-দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

এছাড়া এনসিপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন- দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ