১০ নং ওয়ার্ড বিএনপি`র সভাপতির শেল্টারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা
Published: 16th, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির অন্তর্গত ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনিস শিকদারের বিরুদ্ধে বিএনপির হাই কমান্ডে লিখিত অভিযোগ জমা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা যারা গত ১৫ বছর রাজপথে হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তারা আনিস শিকদারের বহিষ্কারের দাবিতে এই অভিযোগ দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন তারা। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের সাথে মিলে ব্যবসা-বাণিজ্য করে এখন বিএনপি'র পরিচয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শেল্টার দেওয়ার অভিযোগ আনিস শিকদারের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াসউদ্দিনের স্বাক্ষরিত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান সিকদার বিগত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হাজী ইফতেখার আলম খোকন ও রুহুল আমিন মোল্লার নির্বাচনী সমন্বয়ক ছিল।
আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন এবং রুহুল আমিন মোল্লার সাথে আনিস শিকদারের ছিল গভীর সুসম্পর্ক। এই সুসম্পর্কের কারণে গরুর হাট, পুকুরের মাছ, গার্মেন্টসের জুটসহ বিভিন্ন ব্যবসা থেকে লাখ লাখ টাকার ভাগ বাটোয়ারা পেতো আনিস শিকদার।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাসিনা সরকার পতন হওয়ার পর সভাপতি আনিস শিকদার গার্মেন্টসের জুট, পুকুরের মাছ, মিরপাড়া ইব্রাহিম মিলের জেটি দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের বড় বড় জাহাজ থেকে গম লোড আনলোড করে লাখ লাখ টাকা আনিস শিকদার পকেটে ভরেছে।
গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক এখনো রয়েছে ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনিস শিকদারের। তাই তাদেরকে এলাকায় সেলটার দিচ্ছেন তিনি।
বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের হামলা মামলা হয়রানি শিকার হয়ে দেশ-বিদেশে পালিয়ে বেরিয়েছে, তখন আনিস শিকদার এসি রুমে বসে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে আঁতাত করে ব্যবসা-বাণিজ্য করেছে এবং লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছে।
যখন আওয়ামী লীগের বড় মাপের নেতারা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন তখন আওয়ামী লীগের পরিচালনাধীন চিত্ত রঞ্জন মিলের বড় পুকুর ও খেলার মাঠে বড় পুকুর ও ইব্রাহীম মিলের ইট খোলার বড় পুকুর থেকে প্রায় ৪০-৫০ লাখ টাকার চাষ করা মাছ বিক্রি করেছেন আনিস শিকদার।
সাবেক ১০ নং কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন ও ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার নিয়ন্ত্রনে থাকা ইব্রাহীম মিলের বসুন্ধরা গ্রুপের গমের লোড-আনলোডের লাখ লাখ টাকার ব্যবসা দেখাশুনা করছেন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের নেতাকর্মীদের বিএনপির লোক বানিয়ে এলাকায় শেল্টার দিচ্ছেন। আনিছ সিকদারকে আইনের আওতায় আনলে এই দুই খুনী কাউন্সিলরকে অতি সহজে ধরা যাবে বলে মনে করে তৃণমূল।
ভয়ংকর খুনি আজমেরী ওসমানের অন্যতম সহযোগী কাজী আমিরের ইব্রাহীম মিলের ইট খোলার মাছের পুকুর, চিত্তরঞ্জন মিলের বড় পুকুর ও ফুটবল খেলার মাঠের পুকুরে চাষ করা লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করে কাজী আমিরকে কিছু টাকা পাঠিয়ে বাদবাকী টাকা আনিস শিকদারের পকেটে।
আনিছ সিকদারের চাচাতো ভাই রাজ্জাক সিকদার আজমেরী ওসমানের উপহার স্বরূপ দেওয়া মটর সাইকেল ব্যবহার করে এখনো এলাকায় ঘুরছে। এই গাড়ি জব্দ করলেই বুঝা যাবে গাড়ীটি কার।
আওয়ামী লীগের অনেক নেতার সাথে আনিছ সিকদারের যোগাযোগ আছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো দুর্র্ধষ খুনী আজমেরী ওসমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড কাজী আমির, কাজী নাজমুল ইসলাম বাবুল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানো আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসী মহসিন ভূইয়া, সাইফুল ভুইয়া, স্বৈরাচারের দোসর গড়ডফাদার শামীম ওসমানের সহযোগী ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন ও ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা।
আনিছ সিকদারকে গ্রেপ্তার করলে ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, কাজী নাজমুল ইসলাম বাবুল, কাজী আমিয়, মহসিন ভুইয়া, সাইফুল ভুইয়া-সহ অনেক আওয়ামী লীগের নেতাদের আইনের আওতায় আনা যাবে।
আওয়ামী লীগের আমলে ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুল আমিন মোল্লা, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকনের সাথে মিলে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন আনিস শিকদার।
বর্তমানে বিএনপি নেতা বলে পূর্বের ন্যায় এখনও হাট বাজার গার্মেন্টেসের জুট, ইব্রাহীম মিলের বসুন্ধরা গ্রুপের গমের বস্তা লোড-আনলোড, মীরপাড়া খেয়াঘাট, চিত্তরঞ্জনের খেয়াঘাট ও ইব্রাহীম মিলের ইট খোলার মাছের পুকুর আওয়ামী লীগের সময়ের মতই এখনও ব্যবসা বানিজ্যে এককভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ৮নং ও ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আনিছ সিকদার সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে।
আনিস শিকদার আওয়ামীলীগের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তদন্ত করা হোক এবং সত্যতা পেলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক।
এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর লিখিত অভিযোগ জানানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে আনিস শিকদারের মুঠো ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ন র য়ণগঞ জ র ন ত কর ম ব এনপ র স বড় প ক র ওসম ন র ব যবস আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।