সামিউল কবির: আপনাদের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম কেমন চলছে?

সামিউল কবির: আমাদের ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকের সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এ সেবার মাধ্যমে এমন গ্রাহকরাও ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছেন, যাদের জন্য প্রচলিত শাখাভিত্তিক ব্যাংকসেবা সহজলভ্য নয়। সারাদেশে ৪৬ জেলায় আমাদের ১৯৪টি এজেন্ট আউটলেট আছে। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সম্পর্কে জানতে বা নিকটস্থ এজেন্টের ঠিকানা পেতে গ্রাহকরা আমাদের হেল্পলাইন বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

 সমকাল: এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রামের অর্থনীতিতে কীভাবে অবদান রাখছে?

সামিউল কবির: এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এর মাধ্যমে গ্রামবাসীরা সহজেই সঞ্চয়, ঋণ গ্রহণ, বিল পরিশোধ এবং টাকা পাঠানোর সুযোগ পাচ্ছেন। যেসব মানুষ আগে ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন, তারা এখন এর মাধ্যমে এ সেবাগুলো নিতে পারছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং কৃষকরা সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসা বা চাষাবাদ সম্প্রসারণ করতে পারছেন। গ্রামবাসীকে শহরে গিয়ে ব্যাংকিং সেবা নিতে হয় না। ফলে তাদের সময় ও পরিবহন খরচ কমছে। লেনদেন বাড়ার ফলে স্থানীয় বাজারের কার্যক্রমও উন্নত হচ্ছে। সুতরাং এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।

 সমকাল: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রসারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আর কী করণীয় রয়েছে বলে মনে করেন? ব্যাংকগুলো কী করতে পারে?

 সামিউল কবির: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রসারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা যে উদ্যোগগুলো নিতে পারে সেগুলো হচ্ছে– নীতিমালা আরও সহজ ও স্বচ্ছ করা, জাতীয় পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা, স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা, উৎসাহমূলক প্রণোদনা প্রদান এবং যথাযথ সুপারভিশন ও মনিটরিং। ব্যাংকগুলোর করণীয়র মধ্যে রয়েছে–উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, অধিক এজেন্ট নিয়োগ, কাস্টমাইজড পণ্য ও সেবা চালু, ত্বরিত সেবা প্রদান, সচেতনতা ও বিপণন কার্যক্রম, সেবার মান উন্নয়ন ইত্যাদি। 

 সমকাল: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণ আদায়ের হার ও আমানতের ক্ষেত্রে সাড়া কেমন? কোনো সীমাবদ্ধতার জায়গা দেখেন?
 

সামিউল কবির: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণ আদায়ের হার সন্তোষজনক। কারণ গ্রামীণ সমাজে সামাজিক সম্পর্কের গুরুত্ব বেশি। কিছু ক্ষেত্রে ঋণ আদায়ে চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। যেমন- প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব। কৃষিঋণের ক্ষেত্রে বন্যা, খরা বা অন্যান্য দুর্যোগ ঋণ পরিশোধে সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সঠিকভাবে পরিচালনার অভিজ্ঞতা না থাকলে তাদের ঋণ শোধে সমস্যা হতে পারে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণ সঞ্চয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে। প্রান্তিক জনগণ যাদের আগে সঞ্চয়ের সুযোগ ছিল না, তারা এখন সহজেই এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে অল্প পরিমাণে হলেও নিয়মিত সঞ্চয় করছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিয়ের জন্য আলাদা সঞ্চয় স্কিমের প্রতি গ্রামের মানুষের আগ্রহ বেশি। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে কিছু সীমাবদ্ধতা দেখা যায়। যেমন প্রযুক্তিগত সমস্যা, ইন্টারনেট সংযোগের অভাব বা ধীরগতির কারণে লেনদেনে বিলম্ব হতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এজেন্টদের দক্ষতার অভাবও দেখা যায়। আবার অনেক এলাকায় এখনও যথেষ্ট সংখ্যক এজেন্ট নেই; যার ফলে সেবা পেতে ভোগান্তি হয়। নগদ অর্থ বহন এবং সাইবার নিরাপত্তা দুর্বল হলে প্রতারণা ও চুরির ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়া অনেক মানুষ এখনও এজেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্কে পুরোপুরি জানেন না বা সেবাগুলোতে আস্থা রাখতে পারেন না।
সীমাবদ্ধগুলো কাটিয়ে উঠতে প্রযুক্তি উন্নত করা এবং ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা, সচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারণা, এজেন্টদের জন্য কমিশন এবং প্রণোদনা বাড়ানো, ঋণগ্রহীতার জন্য ব্যবসা ও অর্থ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করা সম্ভব।

 সমকাল: নতুন বছরে এজেন্ট ব্যাংকিং নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী? 

সামিউল কবির: নতুন বছরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের বিস্তৃতিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। গ্রাম এলাকায় এজেন্ট নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আরও এজেন্ট নিয়োগ করা, এলাকাভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী সেবা প্রদানের উদ্যোগ থাকছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে মোবাইল অ্যাপ ও ই-ওয়ালেট সমন্বয় করা, সেবা আরও দ্রুত ও সহজলভ্য করার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি; কৃষি, ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণ স্কিম চালু, ঋণের শর্ত সহজ করে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া, এজেন্টদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান, গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা সম্পর্কে আরও সচেতন করা, সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা, লেনদেনের সময় এজেন্ট ও গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ রয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ র ব যবস র জন য সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলিম সভ্যতায় দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবা

মুসলিম সভ্যতার ইতিহাসে প্রায়ই বিজ্ঞান, স্থাপত্য বা শাসনব্যবস্থার কথা আলোচিত হয়। কিন্তু এর মানবিক দিক অধরা রয়ে যায়। বিশেষ করে দরিদ্রদের প্রতি দয়া ও চিকিৎসাসেবার গল্প আড়ালে রয়ে গেছে সব সময়।

মুসলিম সভ্যতায় কীভাবে দরিদ্র ও অসুস্থদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসা, আশ্রয় এবং মানসিক সান্ত্বনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তা এক অপূর্ব কাহিনি।

বিমারিস্তান: দরিদ্রদের জন্য চিকিৎসার আশ্রয়

মুসলিম সভ্যতায় দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবায় ‘বিমারিস্তান’ নামের হাসপাতাল ছিল একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এগুলো শুধু চিকিৎসার জায়গা ছিল না, বরং দরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে আশ্রয়, খাদ্য ও যত্নের ব্যবস্থা ছিল। বেশির ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত নগরে, বিশেষ করে বড় রাজধানীগুলোতে বিমারিস্তান ছিল। দামেস্কে বিমারিস্তানের নাম ছিল ‘নুরি’, বাগদাদে ‘আদুদি’।

প্রতিটি অন্ধ বৃদ্ধের জন্য এমন একজন সাহায্যকারী নিয়োগ কর, যে তাকে অত্যাচার বা অবহেলা না করে।খলিফা উমর ইবন আবদুল আজিজ (রহ.)

প্রথম বিমারিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবন আবদুল মালিকের সময়, ৭০৭ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি এতে চিকিৎসক নিয়োগ করেন এবং তাঁদের বেতনের ব্যবস্থা করেন। সমাজের স্বাস্থ্য রক্ষায় কুষ্ঠরোগীদের জন্য পৃথক স্থানে বিনা মূল্যে খাদ্য ও যত্ন দেওয়া হতো।

অন্ধদের জন্য রাষ্ট্রীয় ভাতা ও সাহায্যকারী নিয়োগ করা হতো। খলিফা উমর ইবন আবদুল আজিজ নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘প্রতিটি অন্ধ বৃদ্ধের জন্য এমন একজন সাহায্যকারী নিয়োগ কর, যে তাকে অত্যাচার বা অবহেলা না করে।’ (ইবনে আসাকির, তারিখে দিমাশক, ৪৪/১২৩, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৯৯৫)

আরও পড়ুন“আল্লাহ ধনী, তোমরা দরিদ্র”০১ অক্টোবর ২০২৫

ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালও ছিল, যা যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের চিকিৎসার জন্য গড়ে তোলা হতো। দূরবর্তী অঞ্চলে মহামারি মোকাবিলায় ৪০টি উটের কাফেলায় চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হতো।

মিসরে প্রথম বিমারিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয় আহমদ ইবন তুলুনের সময়, ৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে, ফুসতাতে। এর নাম ছিল ‘বিমারিস্তান আতিক’।

এর জন্য ওয়াক্‌ফ তহবিল রাখা হয়েছিল, এবং শর্ত ছিল যে এটি শুধু সাধারণ মানুষের জন্য, সৈন্য বা দাসদের জন্য নয়। এর বার্ষিক খরচ ছিল ৬০ হাজার দিনার (স্বর্ণমুদ্রা)। ইবন তুলুন নিজে প্রতি সপ্তাহে এটি পরিদর্শন করতেন এবং জুমার দিনে মুসল্লিদের জন্য জরুরি সেবার ব্যবস্থা করেছিলেন। এতে ছিল ১ লাখের বেশি বইয়ের গ্রন্থাগার। (মাকরিজি, খিতাত, ২/৪০৫, দারু সাদির, কায়রো, ১৮৫৩)

সংগীতজ্ঞ ও গল্পকারেরা এখানে রোগীদের মনোবল বাড়াতেন। ঘরে সুগন্ধি গাছ রাখা হতো, রোগীদের হাতপাখা দেওয়া হতো গরম ও পোকামাকড় থেকে রক্ষার জন্য।

সালাহউদ্দিন আইয়ুবি বিমারিস্তান ‘নাসিরি’ প্রতিষ্ঠা করেন। তবে মিসর ও মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ বিমারিস্তান ছিল মনসুর কালাউনের প্রতিষ্ঠিত বিমারিস্তান, ১২৮৪ খ্রিষ্টাব্দে। এখানে নারী-পুরুষ সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল, চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সময়সীমা ছিল না। এখানে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হতো।

সংগীতজ্ঞ ও গল্পকারেরা এখানে রোগীদের মনোবল বাড়াতেন। রাতের দীর্ঘ সময় রোগীদের জন্য কষ্টকর হতো, তাই ফজরের আজান দুই ঘণ্টা আগে দেওয়া হতো, যাতে রোগীরা সকালের আশায় উৎফুল্ল হয়। ঘরে সুগন্ধি গাছ রাখা হতো, রোগীদের হাতপাখা দেওয়া হতো গরম ও পোকামাকড় থেকে রক্ষার জন্য।

সুস্থ হওয়ার পর রোগীদের পোশাক ও কিছু টাকা দেওয়া হতো, যাতে তারা তাড়াতাড়ি কাজে ফিরতে না বাধ্য হয়। এই বিমারিস্তান ২০০ জনের বেশি দরিদ্র রোগীকে বাড়িতে চিকিৎসা দিত। (মাকরিজি, খিতাত, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪০৭)

দরিদ্রদের জন্য চিকিৎসাগ্রন্থ

মুসলিম সভ্যতার চিকিৎসকেরা লক্ষ করেন, চিকিৎসা কখনো কখনো ধনীদের কাছে ব্যবসায় পরিণত হন। তাই তাঁরা দরিদ্রদের জন্য সহজলভ্য চিকিৎসা গ্রন্থ রচনা করেন, যাতে তারা নিজেরা নিজেদের চিকিৎসা করতে পারে বা ছোট চিকিৎসকেরা তাদের সহজে চিকিৎসা দিতে পারেন। এই গ্রন্থগুলোয় স্থানীয় ও সাশ্রয়ী উপকরণ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হতো; কারণ, ভারত বা চীন থেকে আমদানি করা ওষুধ ছিল দামি।

আরও পড়ুনইসলামে দারিদ্র্য দূরীকরণের ৮টি ব্যবহারিক উপায়০২ নভেম্বর ২০২৫

আবু বকর আর-রাজি: তিনি দরিদ্রদের প্রতি অসাধারণ দয়া দেখাতেন এবং তাদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করতেন। তিনি দুটি গ্রন্থ রচনা করেন: ‘বুরউ সা’আত’ (তাৎক্ষণিক চিকিৎসা) এবং ‘মান লা ইয়াহদুরুহু তাবিব’ (যার কাছে চিকিৎসক নেই), যাকে ‘তিব্বুল ফুকারা ওয়াল মাসাকিন’ (দরিদ্রদের চিকিৎসা) বলা হয়।

তিনি লিখেছেন, ‘অনেক চিকিৎসক ওষুধ ও খাবারের কথা লেখেন, যা শুধু রাজাদের ভান্ডারে পাওয়া যায়। আমি সাধারণ ও সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে চিকিৎসার একটি সংক্ষিপ্ত গ্রন্থ লিখতে চাই, যাতে সবাই এর সুবিধা পায়।’ (আল-রাজি, মান লা ইয়াহদুরুহু তাবিব, পৃষ্ঠা ১৫, দারুল কুতুব, বৈরুত, ১৯৮৫)

মুসলিম সভ্যতা দরিদ্রদের চিকিৎসায় অসাধারণ মানবিকতা দেখিয়েছে। বিমারিস্তান ছিল দরিদ্রদের জন্য আশ্রয়, যেখানে শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা দেওয়া হতো।

ইবনে জাজ্জার কায়রাওয়ানি: তিনি কখনো দরিদ্রদের কাছ থেকে চিকিৎসার ফি নিতেন না। তিনি তিব্বুল ফুকারা ওয়াল মাসাকিন গ্রন্থে লিখেছেন, ‘দরিদ্ররা স্বাস্থ্য ও রোগ–সম্পর্কিত বইয়ের সুবিধা পায় না। তাই আমি এমন একটি গ্রন্থ লিখলাম, যাতে সহজলভ্য ওষুধ দিয়ে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করা যায়।’ (ইবনে জাজ্জার, তিব্বুল ফুকারা, পৃষ্ঠা ১০, দারুল ফিকর, কায়রো, ১৯৯০)

ইবনে আকফানি: তিনি গুনইয়াতুল লাবিব ফি গাইবাতিত তাবিব (চিকিৎসক না থাকলে জ্ঞানীর সম্পদ) গ্রন্থে জরুরি রোগের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য রক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন।

জামালুদ্দিন ইউসুফ মাকদিসি: তিনি ‘তিব্বুল ফুকারা’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘ধনীরা সুস্বাদু খাবার খায়, তাই তাদের রোগ বেশি। দরিদ্ররা সাধারণ খাবারে সন্তুষ্ট থাকে, তাই তাদের রোগ কম। কিন্তু দরিদ্ররা অসুস্থ হলে তাদের জন্য সহজ ও সস্তা ওষুধ দরকার।’ (মাকদিসি, তিব্বুল ফুকারা, পৃষ্ঠা ৮, দারুল মারিফা, বৈরুত, ১৯৯২)

মুসলিম সভ্যতা দরিদ্রদের চিকিৎসায় অসাধারণ মানবিকতা দেখিয়েছে। বিমারিস্তান ছিল দরিদ্রদের জন্য আশ্রয়, যেখানে শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা দেওয়া হতো। চিকিৎসকেরা দরিদ্রদের জন্য সহজলভ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন, যাতে তারা নিজেদের চিকিৎসা করতে পারে। এই ঐতিহ্য দেখায়, ইসলামি সভ্যতা কেবল জ্ঞান বা শক্তিতে নয়, মানবিকতা ও দয়াতেও শ্রেষ্ঠ ছিল।

আরও পড়ুনআপনার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো২১ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুসলিম সভ্যতায় দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবা