ফরিদপুরে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ মো. মনজুরুল ইসলামের (৫৮) ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ফরিদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।

সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয় ‘ফরিদপুর শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের’ উদ্যোগে। 

সকাল ১০টার দিকে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অম্বিকা সড়ক ধরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সামনে যায়। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি ব্রাহ্ম সমাজ সড়ক হয়ে মুজিব সড়ক দিয়ে আলীপুর মোড় এলাকায় গিয়ে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে। এসময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। 

চার রাস্তার মোড়ে অবস্থিত শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টি অবরোধ করায় আশেপাশের বিভিন্ন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো.

কামরুল হাসান মোল্লা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রেখে আসামি ধরার জন্য আরও কিছু সময় চান।

জেলা প্রশাসক বলেন, এ হামলার বিষয়টি সরকারি ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রোববার জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। আসামি সনাক্ত করতে ও তদন্তে সময় লাগছে। কাউকে হেরাজমেন্ট করা হবে না। আসামি সনাক্ত ও গ্রেপ্তার হলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, পর্যালোচনা ও আসামিদের সনাক্ত করার জন্য আরেকটু সময় চাই। এ নিশ্চয়তা দিচ্ছি সনাক্ত হওয়ার পর আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এ অবস্থায় আপনারা এমন সব কর্মসূচি থেকে বিরত থাকবেন যাতে জনদুর্ভোগ না হয়।

এরপর বক্তব্য দেন এ আন্দোলনের সমন্বয়কারী বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম শহীদুল ইসলাম। তিনি জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দুই দিন সময় দিয়ে বলেন, আগামী দুই দিনের মধ্যে আসামি ধরা না হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

অন্যদের মধ্যে সরকারি ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান খান, সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ তালুকদার আনিসুর ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, জামাল শেখ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর সরকারি ইয়াছিন কলেজ, মুসলিম মিশন কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনসস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।

প্রসঙ্গত গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের পাশে আব্দুল করিম সড়কে ‘ফ্রেস ফুড এন্ড পেস্ট্রি’ শপের সামনে হামলার শিকার হন অধ্যক্ষ মনজুরুল ইসলাম। ওই সময় তিনি তার ছেলেকে নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। এসময় পেছন দিক থেকে মোটরসাইকেলে আসা এক আরোহী স্টিলের লাঠি দিয়ে অধ্যক্ষের মাথায় আঘাত করলে তিনি সড়কের উপর লুটিয়ে পড়েন।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, হামলার আসামিদের এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামি সনাক্ত করা যায়নি। তবে আমরা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি সনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ কল জ র অবর ধ সরক র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩
  • টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২