তিন দিন ধরে মোটর বিকল, বালতির পানিতে সিজার
Published: 20th, January 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ব্লক রয়েছে তিনটি। এর মধ্যে পূর্ব পাশের নতুন ছয় তলা ব্লকের পানির মোটর বিকল হয়ে যায় গত শনিবার। এর পর তিন দিনেও সেটি মেরামত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেকে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন। স্বাভাবিক কার্যক্রমও বিঘ্নিত হয়েছে। এমনকি বালতিতে পানি এনে করা হয়েছে সিজার।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন পানি না থাকায় অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন চিকিৎসক ও নার্সরা। খাবার পানি আর টয়লেটের কাজ সারতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে রোগী ও স্বজনসহ সবাইকে। সব ধরনের কাজেই বিঘ্ন ঘটেছে। পানি সংকট থাকায় চলে গেছেন অন্তত ২৫ শতাংশ রোগী। বালতি দিয়ে পানি এনে একাধিক সিজার করতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসক। আজ সোমবার হাসপাতালে গিয়ে সহকারী পরিচালক ডা.                
      
				
সহকারী পরিচালক জানান, হাসপাতালের তিনটি ব্লকের মধ্যে শনিবার থেকে পূর্ব পাশের নতুন ছয় তলা ব্লকের মোটর বিকল হয়ে আছে। এ কারণে বাইরে থেকে বিকল্প ব্যবস্থায় পানি আনা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস তিন দিনে ১৪ হাজার ৮০০ লিটার পানি দিয়েছে। আর খাবার পানি দিচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। তবে নতুন মোটর বসানোর কাজ চলছে। দ্রুত পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। যদিও তিন দিন পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার পেছনে অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন অনেকে।
দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হাসপাতালে দু’মাস ধরে ভর্তি আছেন সদর উপজেলার সগড়া এলাকার রোগী তাজুল ইসলাম (৬০)। আর শনিবার ভর্তি হয়েছেন দুর্ঘটনার রোগী সদর উপজেলার বিন্নাটি গ্রামের সত্যেন্দ্র চন্দ্র সরকার (৭০)। তাদের ভাষ্য, খাবার পানি বাইরে থেকে কিনে আনা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে টয়লেটে যেতে। পুরো নোংরা হয়ে আছে।
হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন ভবনের ব্লকে ১২০ জন রোগী ছিল। পানি সংকটের কারণে ৩০ জনের মতো রোগী চলে গেছেন। এর মধ্যে কয়েকজনকে আগাম ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে। বাকিরা অন্য হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন। নতুন ব্লকেই রয়েছে অপারেশন থিয়েটার ও গাইনি ওয়ার্ড। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক জানিয়েছেন, সোমবার বালতি দিয়ে পানি এনে দুটি সিজার করতে হয়েছে।
হাসপাতালে তিন দিন পানি না থাকা খুবই অস্বাভাবিক বলে মনে করেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রবীন্দ্রনাথ চৌধুরী। তিনি বলেন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণ বা তদারকিতে কোনো গাফিলতি থাকলে সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা উচিত।
 হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে কথা বলে খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলে অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্য পাইপ দিয়ে ওভারহেড ট্যাঙ্কিতে পানি ওঠানো হচ্ছে। আগের মোটরটি ছিল ১০ হর্স পাওয়ারের। এখন ১৫ হর্স পাওয়ারের নতুন মোটর বসানো হচ্ছে। দ্রুত পানির সংকট কেটে যাবে বলে আশা তাঁর।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নূর মোহাম্মদ সামছুল আলম বলেছেন, ‘আমরা যে পানি পান করি, তা নতুন বালতিতে করে এনে সিজার করা হয়েছে। এটি নিরাপদ ছিল। এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের জীবাণুনাশক সলিউশন তো ছিলই।’
বিষয়টির ব্যাপারে কথা বলতে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ব যবস থ সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’
ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।