ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জে সবজি এখন গলার কাটা। কদিন আগেও প্রতি পিস ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হতো ৩০/৪০ টাকা। সে কপি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫/৭ টাকায়। প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ টাকা।  একই ভাবে সিমের কেজি ১০ টাকা, শাকের আটি ২ থেকে ৫ টাকা। 

সোমবার ( ২০ জানুয়ারি ) কেরানীগঞ্জের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কষ্টে রোপণ করা শাকসবজি বিক্রি করতে না পেরে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে অনেক কৃষকের। কেউ নতুন করে আবাদ করতে শাক-সবজি তুলে ফেলে দিচ্ছেন, কেউবা নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে পরিস্কার করছেন জমি। 

এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, কৃষিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ সার বীজের উর্ধ্বগতি এবং বাজারের সঠিক তদারকি না থাকার কারণেই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

হযরতপুর গ্রামের কৃষক আহসান বলেন,  “খুচরা বাজারে মুলার কেজি ৩০ টাকা, ফুলকপির পিস ৩০/৪০ টাকা, সিমের কেজি ৪০ টাকা, শাকের আটি সর্বনিম্ন ১০/২০ টাকা অথচ আমরা এসব বিক্রি করতে পারছি না। প্রতি মণ  মুলা তোলা এবং পরিবহন খরচ ১০০ টাকার উপর অথচ বিক্রি হয় ১৫০ টাকায়। আবার অনেক সময় বিক্রিও হয় না। ফুল কপি ৫ টাকা পিস, কপি বিক্রি করে পরিবহন খরচও হয় না, তাই এসব বাজারে না নিয়ে ফেলে দিচ্ছি।”

সিম চাষি জামিলা খাতুন বলেন, “প্রতিবছর সিম বিক্রি করে গরু কিনি, সংসার চালাই, টাকা ব্যাংকেও রাখি কিন্তু এবার ২ লাখ টাকা খরচাও উঠবে না। এতো সুন্দর সিম বিক্রি করতে গেলে ১০ টাকার বেশি বিক্রি করা যায় না। অথচ এক কেজি সিম উঠাতেই ১০ টাকা খরচ।”

কলাতিয়ার কৃষক রুহুল মিয়া বলেন,  “বাঁধাকপি কয়েক সপ্তাহ রাখা গেলেও ফুলকপি বিক্রির উপযোগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করতে হয়। না হলে ফুল ফুটে গেলে বিক্রির অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আমার এক বিঘা জমির ফুলকপির বিক্রি করতে না পারায় জমিতে নষ্ট হচ্ছে।” 

কৃষক নুরু বলেন, “সবজির দামে ক্রেতা খুশি হলেও আমরা খরচের টাকা তুলতে না পেরে পথে বসতে চলেছি। আমরা যারা ফসল ফলাই, তারা সব সময়ই কম দাম পাই। এখন বাজারে সবজি বিক্রি করে পরিবহন ও শ্রমিক খরচের টাকাও উঠছে না। ক্রেতা কম থাকায় বেশিরভাগ সবজিই নষ্ট হচ্ছে জমিতে।” 

কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন বলেন, “আগাম চাষ করা সবজিতে কৃষকেরা বিপুল অর্থ পেয়েছে কিন্তু বর্তমান সময়ে সবজির ভরপুর মৌসুম হওয়ায় বাজারে সবজিতে পরিপূর্ণ আর মানুষেরও চাহিদা কমেছে, তাই সবজির দাম কম। গত বছর ভালো দাম পেয়ে কৃষক উচ্চমূল্যে বীজ ক্রয় করে অতিরিক্ত ফসল ফলিয়েছে। এ বছর সবজির বাম্পার ফলন হওয়ায় সবজির দাম কমে গেছে। কৃষকরা কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে আবাদ করলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে।” 

কৃষি অফিস কৃষকদের আগাম এবং বিভিন্ন রকমের সবজি আবাদেরও পরামর্শ দিচ্ছে, জানান তিনি।

ঢাকা/শিপন/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সবজ র দ ম ফ লকপ

এছাড়াও পড়ুন:

সচিবালয়ে আবারও বিক্ষোভ কর্মচারীদের

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার একদিন পর আজ সোমবার আবারও সচিবালয়ের ভেতর বিক্ষোভ করছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা। বিক্ষোভ শেষে আজ সরকারের আরও তিন উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, কর্মচারীরা মিছিল করে সচিবালয়ের বাদামতলায় জমায়েত হন। সেখানে তারা অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিজে জড়ো হয়ে অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানান। তাঁদের স্লোগান ছিল ' অবৈধ কালো আইন মানি না' ইত্যাদি।

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।

ঈদের ছুটি শুরু আগে কর্মচারীরা অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ,আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, খাদ্য, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন।

তারই ধারাবাহিকতায় আজ স্বরাষ্ট্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ