মারামারির ঘটনায় শাস্তির মুখে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
Published: 21st, January 2025 GMT
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ব শত্রুতা এবং নবীনদের কালচার শেখানো নিয়ে মারামারির দায়ে দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া আরো এক শিক্ষার্থীর আজীবন আবাসিকা বাতিলসহ একাধিক শিক্ষার্থীদের মুচলেকা ও সতর্ক করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রেজিস্ট্রার দপ্তর সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দর্শন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোন কার্যকলাপে লিপ্ত হবে না মর্মে মুচলেকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে, রাসেল মিয়ার ১ বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বাতিল ও হলের আবাসিকতা আজীবন বাতিল; আকমল হোসেন শাকিরের হলের আবাসিকতা আজীবন বাতিল।
এছাড়া সাব্বির সরকার রোমন, আবু রুহান, শেখ সুলাইমান শান্ত, নাজমুল উদ্দিন, রবিউল হাসান রবিন, মুনতাসির মারুফ আসিফ, রাকিব ইসলাম, আবিদ হাসান, পারভেজ মাতুব্বর, আজহারুল ইসলাম প্রান্ত ও ইমতিয়াজ আলম ইভান ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোন কার্যকলাপে লিপ্ত হবে না মর্মে মুচলেকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রদান করা হয়েছে।
অন্যদিকে, জাকিয়া, ইবনা, তন্বী ও সানজিদাকে ভবিষ্যতে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের ম্যানার শেখানো বা পরিচয়পর্বের নামে হয়রানিমূলক কার্যক্রম না করার জন্য সতর্ক করার নির্দেশ দেওয়া হয়ে।
গত ২৭ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটক সংলগ্ন রাস্তায় দর্শন বিভাগের দুই গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্য সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা/তৈয়ব/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।