Samakal:
2025-07-31@21:47:27 GMT

শিশুর প্রথম সলিড খাবার

Published: 21st, January 2025 GMT

শিশুর প্রথম সলিড খাবার

শিশু ছয় মাস পর্যন্ত কেবল মায়ের বুকের দুধ পান করে। ছয় মাস পর শিশু যখন বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খেতে শুরু করে তাকে উইনিং ফুড বলা হয়। এই উইনিং ফুড দিয়ে সলিড খাবার দেওয়া শুরু করা হয়। এ সলিড খাবার অবশ্যই ঘরের তৈরি খাবার দিয়ে শুরু করতে হবে। বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার দিয়ে শুরু করা যাবে না। এ জন্য মা, বাবা কিংবা অভিভাবকদের সলিড খাবার শুরু করার আগে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। 
শিশু প্রথম সলিড খাবারের মাধ্যমে নতুন স্বাদ ও গন্ধের পরিচয় পেতে শুরু করবে। এ জন্য এই সময় সব নতুন খাবার এক দিনে দেওয়া শুরু করবেন না। ধীরে ধীরে একেকটা করে খাবারে অভ্যস্ত করাতে হবে। 
শিশুকে সলিড খাবার দেওয়ার সময় অ্যালার্জি হতে পারে। এ জন্য খাবার গ্রহণের পর অ্যালার্জি হচ্ছে কিনা– অভিভাবকদের চিহ্নিত করতে হবে। যেসব লক্ষণ দেখলে অ্যালার্জি বলে চিহ্নিত করবেন সেগুলো হলো– পেট ব্যথা ও পেট মোচড়, বারবার বমি, গায়ে র‌্যাশ ওঠা কিংবা লালচে ভাব দেখা দেওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। 
কোনো খাবার দেওয়ার পর এ রকম লক্ষণ দেখা দিলে খাবারটি সাময়িক বন্ধ রাখুন। তারপর কিছুদিন পর সেটি আবার খাওয়াতে চেষ্টা করুন। যদি দ্বিতীয়বার শিশুর অ্যালার্জি হয়, তবে নিশ্চিত হোন সে খাবারে তার অ্যালার্জি আছে।
আমাদের দেশে অনেকেই শিশুর প্রথম সলিড খাবার হিসেবে খিচুড়ি দিয়ে থাকেন, যা ঠিক নয়। শুরুতে খিচুড়ি বা প্রোটিনের মতো ভারী খাবার দিলে শিশুর পাকস্থলীর ওপর চাপ পড়ে। এ ছাড়া প্রথম খাবার হতে হবে একটি করে উপাদান। নতুন খাবার দেওয়ার আগে ৩ থেকে ৫ দিন বিরতি দিন।
শিশুকে দিনে ২ থেকে ৩ কাপ পরিমাণ নরম খাবার দিয়ে শুরু করুন। শুরুতে সবজি হালকা চাপিয়ে নরম করে অথবা সেদ্ধ করে ম্যাশ করে দেওয়া উচিত। এ ছাড়া পিউরি করে ফল দিতে পারেন। পাকা ফল চটকে ১ থেকে ২ চা চামচ দিতে হবে। আস্তে আস্তে চাল, ডাল ও দুটি সবজি মিশ্রিত করে খাওয়াতে হবে।
শিশুর সলিড ফুডের কিছু নমুনা 
চটকানো পাকা কলা, মিষ্টি আলুর পিউরি, ডালের পানি দিয়ে চটকানো নরম ভাত বা মাড়, পাকা ফলের রস, জাউ ভাত, সেদ্ধ নরম সবজি ইত্যাদি। ধীরে ধীরে চাল-ডালের খিচুড়ি দিতে হবে। শিশুর রান্না করা খাবারে অবশ্যই ২ থেকে ৩ চা চামচ তেল দিতে হবে। এর বেশি নয়। 
কতটুকু দেবেন 
প্রথম দিন ১ চা চামচ, দ্বিতীয় দিন ২ চা চামচ, তৃতীয় দিন ৩ চা চামচ, প্রতিদিন ১ পোয়া বাটির হাফ বাটি দিনে ২ বার বাড়তি খাবার দিতে হবে। ১ থেকে ২ বার পুষ্টিকর নাশতা দিতে হবে। সারাদিন শিশু ৩ ঘণ্টা পরপর খাবে; যার মধ্যে দুটি বাড়তি খাবার ও দুটি পুষ্টিকর নাশতা থাকবে। শিশুর খাবার  হজম ও পুষ্টি শোষণ নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পানি পান করাতে হবে।
শিশুর সলিড খাবার দেওয়ার সময় লক্ষণীয় বিষয় 
lশিশুর প্রথম সলিড খাবার শুরু করার সময় জাউভাত বা খাবারের সঙ্গে কিছু সবজি যেমন কাঁচা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বরবটি, গাজর ইত্যাদি মিক্সড করে খাওয়াতে হবে।
lদুই বছরের আগে সরাসরি গরুর দুধ না খাওয়ানো ভালো।
lসব খাবার শিশুর পছন্দ নাও হতে পারে। এ জন্য শিশুকে জোর করে খাওয়াবেন না।
lশিশু খেতে না চাইলে ধীরে ধীরে তার খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়াবেন।
lব্লেন্ড করে বা লিকুইড করে শিশুকে খাবার দেবেন না। এতে সে চিবিয়ে খেতে শিখবে না।
lশিশুকে সবসময় ঘরের তৈরি খাবার খাওয়ান এবং নিজ হাতে খেতে শেখান।
lশিশুকে খাওয়ানোর সময় অন্যমনস্ক হয়ে যেমন টিভি দেখতে দেখতে, খেলতে খেলতে, এদিক-ওদিক করে খাওয়াবেন না। v

লেখক: পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, দিনাজপুর।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ জন য র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ