‘অপপ্রচারে’ জড়ালে শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে মাউশি
Published: 21st, January 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বা প্রোপাগান্ডা ছড়ালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১৯ জানুয়ারি এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সরকার। ওই দিনই বিজ্ঞপ্তিটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এতে সই করেন মাউশি মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক অধ্যাপক আবেদ নোমানী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার মাসিক সমন্বয় সভায় বর্তমান সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা, গুজবে উদ্বুদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হয়, সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও তৎপর থাকতে বলা হয়েছে। এসব বিষয়ে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোনো শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
জানা গেছে, মাউশি থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে ৬৪ জেলার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে (ডিইও) পাঠানো হয়েছে। কয়েকজন ডিইও মাউশির এ নির্দেশনা পাওয়ার কথা স্বীকারও করেন সমকালের কাছে। তারা জানান, এ ব্যাপারে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে নজরদারি শুরু করে দিয়েছেন।
রাজধানীর একটি খ্যাতনামা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমকালকে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী আছে। তাদের মধ্যে সামাজিকমাধ্যমসহ কে কোথায় কী লিখছে বা করছে, তার সব কি আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব? শিক্ষার্থীর দায় যেন প্রতিষ্ঠানের ঘাড়ে এসে না পড়ে।
হঠাৎ এমন আদেশ কেন জারি করা হলো বা কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য আছে কিনা– এমন প্রশ্নে মাউশির মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখার পরিচালক অধ্যাপক আবেদ নোমানী বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা
আমাদের কাছে এসেছে। মাউশির মনিটরিং উইং থেকে আমারা শুধু আদেশ জারি করেছি। আমাদের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত নেই।’
শিক্ষার্থী অপপ্রচারে লিপ্ত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক নোমানী বলেন, ‘এটা এখনই বলা যাবে না। কারণ শিক্ষার্থীর অপরাধের মাত্রা বিচার করে তার সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায় আছে কিনা সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নেবে। শিক্ষার্থী কর্তৃক সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হলে কেস টু কেস দেখা হবে। যদি শিক্ষার্থীদের
সরকারের নির্দেশনা অবগত করতে ব্যর্থ হয় বা অপপ্রচার রোধে নির্বিকার থাকে, তাহলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উপায় থাকবে কি।’
এসব বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বৃহত্তর সংগঠন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সমন্বয়কারী মো.
স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকারকে যেন সংকুচিত করা না হয়। শুধু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর দেশের মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে বর্তমান সরকারের কাছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দেশের ভালো-মন্দ নিয়ে নাগরিকের মত প্রকাশের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও এ দেশেরই নাগরিক, তারা বিচ্ছিন্ন কোনো গোষ্ঠী নন। সে ক্ষেত্রে তারা
তাদের মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করবেন, তাতে যেন বাধা দেওয়া না হয়। মত প্রকাশে বাধা দেওয়া মানে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া। তাই আমরা প্রত্যাশা করব, শুধু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের কারণে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ