রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
Published: 22nd, January 2025 GMT
সাবেক দুই উপাচার্যের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত ও স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবিতে অনড় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে অ্যাকাডেমিক ভবনসমূহে তালা লাগিয়ে দিয়েছে তারা। পাশাপাশি দ্বিতীয় দিনের মত বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরবাড়ি বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনসহ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা।
সংগীত বিভাগের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আব্দুল মমিন বলেন, গত সাড়ে নয় বছর আগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজস্ব প্রায় ১২০০ একর জায়গায় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করার কথা থাকলেও অধিকাংশ জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। বারবার বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন প্রকল্প পরিকল্পনায় কাটছাঁট করা হয়। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ তো দূরের কথা স্থানীয় কয়েকটি কলেজের ভবনেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে।
এই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর ভবন ভাড়া দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাবেক দুই বিদায়ী উপাচার্যের মাধ্যমে নিয়োগ-বাণিজ্য ও অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে গত সাড়ে নয় বছরেও নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও সরকারের মাধ্যমে আমাদের দাবি পূরণ করা না হলে আমরা রাজপথ কোনভাবেই ছাড়ছি না, যোগ করেন তিনি।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সমুদ্র ইসলাম, বাংলা বিভাগের আবিদ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের রিদয় সরকার, সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিব সরকার প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ কান্তি বড়ুয়া বুধবার বিকেলে বলেন, স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে শিক্ষার্থীদের দাবি পুরোপুরি যৌক্তিক। বর্তমানে পরীক্ষা কার্যক্রম চললেও শিক্ষার্থীরা পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ও ক্লাসে তালা মেরে আন্দোলন করছে। আমরাও তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। সরকারিভাবে খুব শীঘ্রই হয়তো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের সাথে আলোচনা চলছে। শিক্ষার্থীরা ক্লাসমুখী হবে কিনা আজকে দিনের মধ্যেই আমাদেরকে বিষয়টি জানানোর কথা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ স র জগঞ জ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ সময়ে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই ছিল রাজনৈতিক। গতকাল বুধবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছিল ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে তা বেড়ে ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে গত প্রান্তিকে এ ধরনের ভুল তথ্য ছিল মাত্র ১১টি। সেটি এ বছরের প্রথম তিন মাসে সাত গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭টিতে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট আটটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পেয়েছে ডিসমিসল্যাব।
সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২৩৬টি তথ্য যাচাইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ভুল তথ্য পাওয়া গেছে ৮৬৭টি, যা আগের প্রান্তিকে রেকর্ড করা ৮১৬টির তুলনায় কিছুটা বেশি। ভুল তথ্যের প্রায় অর্ধেকই (৪৫ শতাংশ) রাজনীতি সম্পর্কিত ছিল। এর পর ছিল ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য (১৩ শতাংশ), যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় সামান্য কম।
অপরাধ-সম্পর্কিত ভুল তথ্য বেড়েছে
বছরের প্রথম তিন মাসে প্রচারিত খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতি-সংক্রান্ত খবর ছিল ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ছিল ভারতের, যা বাংলাদেশের বলে ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে হোটেল থেকে লাফিয়ে পড়া এক ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়, কিন্তু সেটি ছিল মূলত ইন্দোনেশিয়ার।
রাজনৈতিক ভুল তথ্য
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই রাজনৈতিক। আগের বছরও রাজনীতি-সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ (৩৪.৮ শতাংশ) ও অন্তর্বর্তী সরকারকে (২১.৮ শতাংশ) নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে প্রচারিত ভুল তথ্যগুলোর অধিকাংশই (৬৮ শতাংশ) ছিল ইতিবাচক। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও সমন্বয়কদের নিয়ে ছড়ানো অধিকাংশ ভুল তথ্য ছিল নেতিবাচক।
ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য
ধর্ম-সম্পর্কিত ভুল তথ্যের সংখ্যা সর্বশেষ প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্যের পরিমাণ ছিল মোট যাচাইকৃত ভুল তথ্যের ১৮ শতাংশ, যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। তবে এর ধরন ছিল একই রকমের। যেমন, পুরোনো বা সম্পাদিত ছবি-ভিডিও সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা।
বেড়েছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্যের পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭টি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন। সেখানে এ বছরের প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪টিতে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ভুল তথ্যের ২৪ শতাংশ ছিল রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট।