প্রতিশোধের নেশায় মগ্ন না থাকলে এমন পারফরম‌্যান্স বের হয়ে আসার কথা না। বোলিং, ব‌্যাটিংয়ে এমন প্রাণবন্ত দিন ঢাকা ক‌্যাপিটালস এবারের বিপিএলে কমই পেয়েছে। চিটাগং কিংসকে ৮ উইকেটে হারানোর ম‌্যাচে প্রাপ্তির খাতায় সবটাই আদায় করে নিয়েছে ঢাকা। সঙ্গে নিয়েছে মধুর প্রতিশোধও।

প্রথম দেখায় চিটাগং কিংস ৭ উইকেটে তাদেরকে হারিয়েছিল। এবার ঢাকা জিতল আরও অনায়েসে, হেসেখেলে। বোলাররা লক্ষ‌্য একেবারে নাগালে রেখেছিলেন। চিটাগং কিংস আগে ব‌্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে ঢাকা ১১ বল আগে লক্ষ‌্যে পৌঁছে যায়।

মামুলি লক্ষ্যে পৌঁছানোর পেছনের কারিগর ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ছন্দে খেলে ৫৪ বলে ৯০ রান করেছেন বাঁহাতি ওপেনার। উইকেটের চারিপাশে দৃষ্টিনন্দন সব শট খেলে ৩ চার ও ৭ ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ২৮ বলে ফিফটি ছুঁতে ১ চার ও ৫ ছক্কা মেরেছিলেন। পরবর্তীতে দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস বড় করে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্য নাগালে রাখল ঢাকা

পুনরায় আলিসের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ

ঢাকার জয়ের থেকে বড় প্রাপ্তি তানজিদের ম‌্যাচ শেষ করে আসা। ফিফটির পর ইনিংসটি ক‌্যারি করে যেভাবে এক-দুই রান ও বাউন্ডারি মেরে চাপ সামলে নিয়েছেন তাতে লেটার মার্কস তারই প্রাপ‌্য। ম‌্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তারই হাতে। এই ইনিংস দিয়ে বিপিএল চারশ রান (৪২০) ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

লিটনের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি ছিল ৭৫ রানের। লিটন ধীরগতিতে ২৮ বলে ২৫ রানে ফিরলেও তাতে ঢাকার সমস‌্যা হয়নি। তিনে নেমে মুনিম শাহরিয়ার ১৮ বলে ১২ রান করেন। তানজিদের সঙ্গে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন সাব্বির রহমান। খালেদের বলে কাভারের ওপর দিয়ে যে ছক্কাটি সাব্বির মেরেছিলেন তা দিনের সেরা শট বলতেই হবে।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে চিটাগং কিংস প্রত্যাশামাফিক রান তুলতে পারেনি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ৬ উইকেটে তাদের সংগ্রহ হয় ১৪৮ রান। আঁটসাঁট বোলিংয়ে লক্ষ্য নাগালে রাখে ঢাকা। দুই দলের প্রথম দেখায় চিটাগং কিংসের কাছে পাত্তা পায়নি রাজধানীর দলটি। এবার তারা প্রতিশোধ নিতে পারে কিনা সেটাই দেখার।

চিটাগংয়ের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ছিল একেবারেই দৃষ্টিকটু। পাওয়ার প্লে’ কাজেই লাগাতে পারেননি দুই ওপেনার নাঈম ইসলাম ও জুবাইদ আকবারি। দুজন মিলে প্রথম ছয় ওভারে ডট বলই খেলেন ২৫টি। বাকি ১১টি স্কোরিং শট। নাঈম ভুগেছেন বেশি। ১৭ ডট বল খেলেন তিনি। পাওয়ার প্লে’তে ২২ বল খেলে মাত্র ১৪ রান যোগ করেন।

রান তোলার চাপ বাড়ায় ব্যাটসম্যানদের ঝুঁকি নিয়ে শট খেলতেই হতো। সেটা করতে গিয়ে কখনো সফল হয়েছেন, কখনো উইকেট বিলিয়ে আসেন। নাঈম প্রতিপক্ষ পেসার মেহেদী হাসান রানাকে স্কুপ করে ছক্কা ও চার হাঁকালেও স্পিনার মোসাদ্দেককে তুলে মারতে গিয়ে সীমানায় তালুবন্দি হন। আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া নাঈম এবার ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ বলে ৪৪ রান করেন। এছাড়া আকবরির ইনিংস থামে ১৯ বলে ২৩ রানে। এই উইকেটও নেন মোসাদ্দেক।

মিডল অর্ডারে চিটাগংয়ের রানের চাকা চেপে ধরেন নাজমুল ইসলাম অপু। বাঁহাতি স্পিনার একই ওভারে গ্রাহাম ক্লার্ক ও হোসেন তালাতকে আউট করেন। নতুন ব্যাটসম্যান হায়দার আলীকেও ফেরাতে পারতেন নাজমুল। কিন্তু সীমানায় সাব্বির তার ক্যাচ মিস করায় নাজমুলের তৃতীয় উইকেট পাওয়া হয়নি।

শেষ দিকে প্রত্যাশামাফিক ঝড় ওঠে শামীম ও মিঠুনের ব্যাটে। শামীম ১৬ বলে ১৫, হায়দার ১১ বলে ১৬ ও মিঠুন ৮ বলে ১২ রান করেন।

উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না। বল একটু ধীর গতিতে আসায় সময় নিয়ে শট খেলতে হয়েছে ব্যাটসম্যানকে। চার-ছক্কার ভাটা পড়েছিল চিটাগংয়ের ইনিংসে। মাত্র ১২ চার ও ৬ ছক্কা আসে তাদের ইনিংসে।

ঢাকার দুই স্পিনার নাজমুল ও মোসাদ্দেক ২টি করে উইকেট নিয়ে ছিলেন দলের সেরা। ১ উইকেট পেয়েছেন রন্সফোর্ড বেটন।

দশ ম‌্যাচে ঢাকার এটি তৃতীয় জয়। পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠে এসেছে তারা। শেষ দুই ম‌্যাচে জয় পেলে ঢাকার সুযোগ থাকবে প্লে’অফে খেলার। অন্যদিকে চিটাগংয়ের এটা নবম ম‌্যাচে চতুর্থ হার। 

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ

চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।

গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ