দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বীর নোয়াকান্দি মৌজায় একটি গভীর নলকূপ বসায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। ডিজেলে চলা এই নলকূপ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ওই এলাকার ৩০০ বিঘা জমিতে সেচের চাহিদা মিটিয়ে আসছিল। বছর পাঁচেক আগে সেটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হয়। বসানো হয় ট্রান্সফরমার। অল্পদিন পরই কোনো এক রাতে চুরি যায় সেই ট্রান্সফরমার। এর পর থেকেই বন্ধ হয়ে আছে নলকূপটি। 

কৃষকরা জানিয়েছেন, নলকূপ বন্ধ হওয়ার পর এলাকায় দুটি অগভীর নলকূপ বসানো হয়। এতে মাত্র ৫০ বিঘার মতো জমি আবাদ করা যাচ্ছে। বাকি ২৫০ বিঘা জমিই পড়ে থাকছে অনাবাদি। এক সময় ৩০০ বিঘা জমিতে অন্তত ৩০০ টন ধান উৎপাদিত হতো। এলাকাবাসী এখন ২৫০ টন ধান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

মঙ্গলবার কটিয়াদী পৌরসভার বীর নোয়াকান্দি গিয়ে দেখা যায়, গভীর নলকূপের পাম্প হাউসটি বন্ধ। এর দেয়ালে জ্বালানির জন্য গোবরের ঘুঁটে শুকাতে দিয়েছেন এলাকার নারীরা। পাশেই বাড়ি সেচ প্রকল্পে জড়িত কৃষক মুরছালিন ইসলাম জনি ও নূরু মিয়ার। তারা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই নলকূপটি বসানো হয়েছিল। এখন বন্ধ থাকায় বহু কৃষকের জমি পতিত। বিদ্যুতে নলকূপটি চালাতে পারলে কম খরচে সব জমি আবাদ করা যেত। এখন ডিজেলচালিত দুটি অগভীর নলকূপে কিছু জমি চাষাবাদ করা যায়। এতে খরচা অনেক বেশি। 

তাদের ভাষ্য, কৃষকরা একদিকে জমি পতিত থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অপরদিকে অগভীর নলকূপের জন্যও বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। তারা ধান আবাদই করছেন বেশি। কেউ কেউ সামান্য পরিমাণ পতিত জমিতে ইদানীং সরিষা ও ভুট্টার আবাদ করছেন। 

ওই মাঠে ৩০ বিঘা জমিই প্রয়াত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব আইন উদ্দিনের। মরম সর্দার নামের আরেক কৃষকের আছে ১৫ বিঘা। স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুস সোবহান ও কৃষক প্রিয়লাল রায়েরও আছে সোয়া তিন বিঘা করে জমি। সবার জমিই এখন পতিত। এলাকাবাসী জানায়, বিদ্যুতের সেচে প্রতি বিঘায় খরচ নেওয়া হতো ১ হাজার টাকা; এখন ডিজেলে নেওয়া হচ্ছে দেড় হাজার টাকা। ট্রান্সফরমার চুরি যাওয়ার পর সেচ কমিটির পক্ষ থেকে নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) অফিসে যোগাযোগ করা হয়। তারা ট্রান্সফরমারের দাম বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। সাধারণ কৃষকের এত টাকা বহনের ক্ষমতা নেই। যে কারণে গভীর নলকূপটি ৫ বছর ধরে অকেজো। এতে একদিকে পাম্প হাউসের মেশিন নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ সেচের ড্রেনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বীর নোয়াকান্দির বাসিন্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সোবহান। তিনি গভীর নলকূপটির ব্যবস্থাপকের দায়িত্বেও রয়েছেন। আব্দুস সোবহানের ভাষ্য, পুরো সেচ এলাকায় ভূগর্ভস্থ পাকা সেচ ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল। পাঁচ বছর ধরে সেচ বন্ধ থাকায় ড্রেনগুলোও বেশির ভাগ জায়গায় ভেঙে গেছে। পাম্প চালু করার আগে সেসব ড্রেনও নির্মাণ জরুরি। ড্রেন নির্মাণ ও ট্রান্সফরমার বসানোর মতো বিপুল পরিমাণ খরচ বহনে বিএডিসির অনীহা আছে। যে কারণে এলাকাবাসী অসহায়। 

সেচের বিষয়টি বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ) আওতাভুক্ত হলেও ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এবার কটিয়াদীতে ১২ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখনও আবাদ শেষ হয়নি। ফলে কয়েক দিনের মধ্যে গভীর নলকূপের সমস্যার সমাধান করা গেলে বীর নোয়াকান্দিতে এবারই আবাদ সম্ভব হবে।

বীর নোয়াকান্দি সেচ এলাকাটি বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ) কুলিয়ারচর জোনের অধীনে। কুলিয়ারচর জোনের সহকারী প্রকৌশলী শাওনা মালাকার এই দায়িত্বে এসেছেন দেড় বছর আগে। এই গভীর নলকূপের বিষয়টি তিনি জানতেন না। এ বিষয়ে কেউ যোগাযোগও করেননি। কেউ যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি দেখবেন। শাওনা মালাকারের ভাষ্য, কোনো কিছু চুরি গেলে বিএডিসির পক্ষ থেকে আর সেটা দেওয়া হয় না। এটা নীতিমালার মধ্যেই বলা আছে। কিছু মেরামতের প্রয়োজন হলে সেটা করার সুযোগ থাকে।

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

শফিকুল ইসলাম জানান, একটি ট্রান্সফরমারের জন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা লাগার কথা নয়। কুলিয়ারচর জোনাল অফিসের মাধ্যমে তাঁর কাছে সমস্যাটি এলে তিনি দেখবেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ব দ কর র জন য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জনবল নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পদ ৪৩০

বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। নাবিক, মহিলা নাবিক ও এমওডিসি (নৌ) পদে ৪৩০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এ–সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে। এর মধ্যে ৪০০ জন পুরুষ ও ৩০ জন নারী। সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম ও বিবরণ

১. ডিই/ইউসি (সিম্যান, কমিউনিকেশন ও টেকনিক্যাল)

পদসংখ্যা: ২৮০ (পুরুষ)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), জোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.৫০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬৭.৫ সেন্টিমিটার।

২. রেগুলেটিং

পদসংখ্যা: ১২ (পুরুষ), ৮ (মহিলা)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৭২.৫ (পুরুষ), ১৬০.০২ (মহিলা)।

৩. রাইটার

পদসংখ্যা: ১৮ (পুরুষ), ৪ (মহিলা)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)।

৪. স্টোর

পদসংখ্যা: ১৪ (পুরুষ), ৪ (মহিলা)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)।

৫. মিউজিশিয়ান

পদসংখ্যা: ৮ (পুরুষ)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান [মাদ্রাসা (বিজ্ঞান), ভোকেশনালসহ], জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ)।

আরও পড়ুনবিমানবাহিনী নেবে অফিসার ক্যাডেট, দেখুন চাকরির বিস্তারিত১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

৬. মেডিকেল

পদসংখ্যা: ১০ (পুরুষ), ৬ (মহিলা)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: জীববিজ্ঞানসহ ন্যূনতম এসএসসি (বিজ্ঞান)/সমমান, জিপিএ–৩.৫০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)

৭. কুক

পদসংখ্যা: ২৫ (পুরুষ)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি/সমমান (মাদ্রাসা, ভোকেশনালসহ), জিপিএ–২.৫০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ)

৮. স্টুয়ার্ড

পদসংখ্যা: ১০ (পুরুষ), ৮ (মহিলা)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি/সমমান (মাদ্রাসা, ভোকেশনালসহ), জিপিএ–২.৫০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ), ১৫৭.৪৮ (মহিলা)

৯. টোপাস

পদসংখ্যা: ১৫ (পুরুষ)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাস।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬২.৫ (পুরুষ)।

আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, পদ ৪৭০১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১০. এমওডিসি (নৌ)

পদসংখ্যা: ৮ (পুরুষ)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: ন্যূনতম এসএসসি/সমমান (মাদ্রাসা, ভোকেশনালসহ), জিপিএ–৩.০০ ও তদূর্ধ্ব।

শারীরিক যোগ্যতা: উচ্চতা ১৬৭.৫ (পুরুষ)

বেতন ও ভাতা

সশস্ত্র বাহিনীর বেতনকাঠামো অনুযায়ী।

বয়সসীমা

১ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে—

১. নাবিক: ১৭ থেকে ২০ বছর।

২. এমওডিসি (নৌ): ১৭ থেকে ২২ বছর।

আরও পড়ুনটিআইবিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, নেবে ১২৫ জন১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫অন্যান্য শর্ত (সব পদের জন্য)

১. সাঁতার জানা অত্যাবশ্যক।

২. অবিবাহিত (বিপত্নীক/তালাকপ্রাপ্ত নয়)।

৩. চাকরিরত প্রার্থীদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র আনতে হবে।

আবেদনের নিয়ম

www.joinnavy.navy.mil.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

আবেদন ফি

৩০০ টাকা (বিকাশ/নগদ/রকেট/TAP/Ok Wallet)।

আবেদনের শেষ সময়

৫ অক্টোবর ২০২৫।

আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনসিনিয়র অফিসার নেবে বেসরকারি ব্যাংক, বেতন ৪০০০০১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ