অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে পুতিনের
Published: 23rd, January 2025 GMT
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ না করলে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে– যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন হুমকির মধ্যেই ইউক্রেনের কয়েকটি শহর লক্ষ্য করে অন্তত ৯৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে একজন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া মঙ্গলবার রাতভর হামলায় ২০ হাজারের বেশি বাসিন্দা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। জাপোরিঝিয়ার গভর্নর ইভান ফেডোরভের বলেন, হামলায় সেখানকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সুমি ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর মাইকোলাইভ লক্ষ্য করে অন্তত ৯৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ ছাড়া ইউক্রেনের সামরিক বিমানবন্দর ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলার দাবি করেছে রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কিয়েভের সামরিক অস্ত্র ঘাঁটির পাশাপাশি কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা চালাচ্ছে মস্কো। অন্যদিকে, ৬৫টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি করেছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী। একই সঙ্গে রাশিয়ার তেল ডিপো ও সামরিক কারখানা লক্ষ্য করে পাল্টা আক্রমণ চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার যুদ্ধকালীন অর্থনীতির সংকট নিয়ে ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন। পরিস্থিতি সম্বন্ধে অবগত পাঁচটি সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শ্রমিক ঘাটতি এবং রেকর্ড সামরিক ব্যয়ের কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি চালু করা সুদের উচ্চ হারের দরুন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি কিছুটা চাপে পড়েছে।
অন্যদিকে, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার প্রায় ১ হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা নিহত হন।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলে নানা আলোচনা হলেও, এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মস্কো ও কিয়েভ। তবে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেখা দিয়েছে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।