নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক ডিআইজি বিপ্লব কুমার ও সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদসহ ৬৫ জনের নামে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতের নির্দেশে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।  

ভুক্তভোগী মিরাজ হোসেন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আবেদন করলে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে মামলাটি রুজু করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনূর আলম। 

মামলায় অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান হানিফ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদা ও রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, বাদী মো.

মিরাজ হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৮ জুলাই বেলা ৩টায় সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যায়। এ সময় ১ থেকে ১২নং আসামির নির্দেশে সন্ত্রাসীরা গুলি করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন ও মিছিলে থাকা লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে তার চিকিৎসা করানো হয়।

আসামিদের ছোড়া ছিটাগুলি এখনো বাদীর দুই পায়ের রানে ও রানের পিছনের মাংসপেশির ভেতরে রয়েছে। এ ছোড়া গুলি এখন বের করা সম্ভব হয়নি বিধায় বাদী জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে দিনাতিপাত করছেন।

মামলায় আসামি হলেন যারা : -

১। শেখ হাসিনা (৬৫), সাবেক প্রধানমন্ত্রী, পিতা-মৃত সেখ মজিবুর রহমান, সাং-৩২ ধানমন্ডি, ঢাকা।

২। আসাদুজ্জামান কামাল (৬০), (সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী), পিতা আশরাফ আলী খান, সাং-মনিপুরিপাড়া, থানা- তেঁজগাও, ঢাকা।

৩। ওবায়দুল কাদের (৬০), (সাবেক সেতু মন্ত্রী), পিতা- মোশারফ হোসেন, সাং-রাজাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, জেলা- নোয়াখালী,

৪। জাহাঙ্গীর কবির নানক (৬০), (সাবেক মন্ত্রী), সাং- মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

৫। মাহবুবুর রহমান হানিফ (৬০), (যুগ্ম সাধারন সম্পাদক), বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

৬। মোঃ শামীম ওসমান (৫৫), সাবেক সংসদ সদস্য নারায়নগঞ্জ-৪ আসন, পিতা-মৃত এ. কে. এম সামছুজ্জোহা, চাষাড়া, থানা ও জেলা-নারায়নগঞ্জ।

৭। বিপ্লব কুমার দাস (৫৫), সাবেক ডি.আই.জি, ঢাকা।

৮। ডিবি হারুন (৫০) পিতা-অজ্ঞাত, (সাবেক ডিবি প্রধান) ঢাকা।

৯। শাহ নিজাম (৫২) পিতা-শাহ নুরুদ্দিন, যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক, নারায়নঞ্জ। নারায়নগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগ,

১০ । আজমেরী ওসমান (৫০), পিতা-নাসিম ওসমান, সাং- হীরামঞ্জিল, থানা ও জেলা-নারায়নগঞ্জ।

১১। ফরিদা (৬৫), পিতা-আঃ রহমান, স্বামী-খাজা মহিউদ্দিন, সদস্য মহিলা আওয়ামীলীগন, নারায়নগঞ্জ জেলা।

১২। মিজানুর রহমান (৫১), পিতা-অজ্ঞাত, (সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ, জেলা-নারায়নগঞ্জ। খানা-রূপগঞ্জ,

১৩।সজল ওরফে সন্ত্রাসী সজইল্লা (৩০), পিতা মদকা ইবু, উভয় সাং-লালখা, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ, সদস্য কুতুবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ।

১৪। ইয়াবা সাইফুল (৩৩), পিতা-মদদী ইনু, সদস্য যবলীগ, সাং লালখা, থানা-ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

১৫। রাম কৃষ্ণ সাহা (৫০) পিতা স্বদেশ চন্দ্র সাহা, সাং-বাপ্পি চত্তর, নিতাইগঞ্জ, থানা ও জেলা-নারায়নগঞ্জ।

১৬। মাখন বাবু (৫৫), পিতা-মৃত ব্রজ বল্লভ,

১৭। আলম (৩৫), পিতা-রফিকুল ইসলাম, উভয় সাং-ভুইগড়, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ।

১৮। ডালিম (৪৫), পিতা-আইয়ুব আলী,

১৯। বাচ্চু (৫০), পিতা-আইয়ুব আলী, উভয় সদস্য কুতুবপুর, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, থানা-ফতুল্লা, জেলা- নারায়নগঞ্জ।

২০। আব্দুল বারেক ওরফে ফেন্সী আল আমিন (৪০), পিতা- মৃত আব্দুল হাই,

২১ । মোঃ হাসিবুল হাসান শান্ত (৩১), পিতা আমিন উদ্দিন, সাং-রসুলপুর, ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগ সদস্য, তারাব পৌরসভা, রূপগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ।

২২। রোশন আলী (৫২), পিতা-আনছার আলী,

২৩। জাহাঙ্গীর (২৫), পিতা বাচ্চু, সাং-লালখা, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ, সদস্য কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগ।

২৪। হাশেম (৫৫), পিতা আরফান, সদস্য কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, সাং-রামারবাগ, থানা-ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

২৫। রহিম বাদশা (৫৮), পিতা-আনছার আলী, সদস্য কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, রামারবাগ, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

২৬। জাহিদ হাসান পিয়াল (২৮), সদস্য ছাত্রলী, পিতা সফি উদ্দিন, সাং দেওভোগ বেপারীপাড়া, থানা-ফতুল্লা, জেলা নারায়ানগঞ্জ,

২৭। রাশেদুল মোল্লা (৩৫), সদস্য শ্রমিকলীগ, পিতা মৃতঃ আক্কাস আলী মোল্লা,

২৮। দিদার মোল্লা (৪২), সদস্য শ্রমিকলীগ, পিতা মৃত নুর হোসেন মোল্লা, উভয় সাং-মোল্লা বাড়ী (পুরাতন), থানা- বন্দর, জেলা-নারায়নগঞ্জ।

২৯। রাসেল (৩২), সদস্য শ্রমিকলীগ, পিতা মৃত আজগর মাষ্টার, সাং-মোল্লা বাড়ী (পুরাতন), থানা-বন্দর, জেলা- নারায়নগঞ্জ।

৩০। আল আমিন (৩৭), শ্রমিকলীগ, পিতা-কামাল, সাং- কাজীবাড়ী স্কুলের পেছনে, থানা-বন্দর, জেলা- নারায়নগঞ্জ।

৩১। আবু সুফিয়ান (৪২), শ্রমিকলীগ, পিতা আবুল কাশেম, সাং-কাজী বাড়ী স্কুলের পেছনে, থানা-বন্দর, নারায়নগঞ্জ

৩২। সবুজ মোল্লা (৩০), সদস্য শ্রমিকলীগ, পিতা সফি মোল্লা, সাং মোল্লা বাড়ী, থানা-বন্দর, জেলা- নারায়নগঞ্জ।

৩৩। শামীম (৪০), সদস্য শ্রমিকলীগ, পিতা নজরুল ইসলাম, সাং-নুরপুর, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়নগঞ্জ

৩৪। মিঠু (৩৮), শ্রমিকলীগ, পিতা একলাস, সাং- গনপাড়া, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়নগঞ্জ।

৩৫। মোঃ সুমন মিয়া (৩৬), পিতা-মোলজার, সদস্য যুবলীগ, বরাবর বাজার, তারাব পৌরসভা, খানা- রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়নগঞ্জ।

৩৬। আব্দুল সালাম ওরফে দালাল ছালাম (৫০) পিতা- অজ্ঞাত, সদস্য কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, সাং- পূর্ব লামাপাড়া, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৩৭। ফরিদ (৬০) পিতা অজ্ঞাত, সাং বায়তুল ফালাহ মসজিদ সংলগ্ন, দক্ষিন শিয়াচর, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৩৮। ইমরান (২৩), পিতা সাহেব আলী, সদস্য যুবলীগ, সাং-জুজখোলা, পোঃ জুজখোলা, খানা ও জেলা- পিরোজপুর।

৩৯। ইবু মিয়া ওরফে ভূমিদস্যু ইবু (৬০), পিতা মৃত শুকুর আলী, লালখা, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৪০। মোঃ সোহাগ রনি (), সভাপতি ছাত্রলীগ, সোনারগা

৪১। মোঃ আশরাফ হোসেন (৩৩) সদস্য ঢাকা জেলা- ছাত্রলীগ। পিতা-কাজী আজহার হোসেন, পলাশপুর, দনিয়া, কদমতলী, ঢাকা।

৪২। মীর ফখরুল ইসলাম (৪৫), সদস্য আওয়ামীলীগ, পিতা অজ্ঞাত, সাং-সি,এ হামিদ রোড, প্রধান টাওয়ারের পিছনে, ডি প্লট, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ।

৪৩। মীর নাবিল (২৭), সদস্য যুবলীগ, পিতা-মীল ফখরুল ইসলাম,

৪৪। কালা ওরফে ভূমিদস্যু কালা (৫০), পিতা-জুম্মান, সদস্য কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৪৫। ইমরান (৩২), পিতা-অজ্ঞাত, সদস্য ছাত্রলীগ, সাং ইসলামিয়া বাজার, সাং ইসলামীয়া বাজার, কুতুবপুর, থানা-ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৪৬। সাকিল ওরফে ফিলার শাকিল (৪০) পিতা-অজ্ঞাত, যুবলীগ

৪৭। বশির আহম্মেদ (৩৮), সদস্য যুবলীগ, পিতা-ফরিদ উদ্দিন, সাং-শিয়াচর, কুতুবপুর, ফতুল্লা, নারায়গঞ্জ। জেলা-

৪৮। সাইফুল ইসলাম, (৩৫), (যুবলীগ), পিতা-মৃত ফরিদ উদ্দিন, সাং শিয়াচর, কুতুবপুর, ফতুল্লা, জেলা- নারায়নগঞ্জ

৪৯। মোঃ সোহেল কিলার সোহেল, পিতা-মৃত ফরিদ উদ্দিন সাং শিয়াচর, কুতুবপুর, ফতুল্লা, জেলা- নারায়নগঞ্জ।

৫০। ফরিদ আহম্মেদ লিটন (৫০), পিতা অজ্ঞাত, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ফতুল্লা ইউনিয়ন, থানা-ফতুল্লা, জেলা নারায়নগঞ্জ।

৫১। বাচ্চু মিয়া (৫০), পিতা অজ্ঞাত, সাং-ফরিদা ভবন, চাঁনমারী, ফতুল্লা, নারয়নগঞ্জ।

৫২। মীর সোহেল (৫০), সভাপতি যুবলীগ, ফতুল্লা খানা, নারায়নগঞ্জ।

৫৩। আলাউদ্দিন (৫০),

৫৪। মহিউদ্দিন (৪৮), সর্ব পিতা মৃত কুদরত উল্লাহ, সদস্য যুবলীগ, সর্দার বাড়ী, পোষ্ট অফিস, ফতুল্লা, নারায়গঞ্জ।

৫৫। মানিক মিয়া (৪৮), পিতা মৃত কালাচান, সাং নিউ হাজীগঞ্জ মুলি বাশের মোড়, থানা-ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৫৬। সুজন মিয়া (৪০), পিতা আলতাফ সরদার, সাং শান্তিধারা মেইন রোড, খানা-ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৫৭। তাইজুল ইসলাম তাজুল (৪২), পিতা ইউনুছ মিয়া, সাং-নোয়াপাড়া, রঘুনাথপুর, খানা-ফতুল্লা, জেলা- নারায়নগঞ্জ।

৫৮। আশেক মাহমুদ আসকারী (৩৮), আওয়ামী সদস্য, পিতা-আব্দুল হান্নান, সাং-ব্রাহ্মনচক, থানা-মতল উত্তর, জেলা-চাঁদপুর। হাল সাং-৫৮৪ উইলসন রোড, কামরুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া, থানা-বন্দর, জেলা- নারায়নগঞ্জ

৫৯। সাহেবা আনমুন জোতি (২৫) পিতা-মুকুল রহমান, (আওয়ামী মহিলালীগ), সাং-রূপালী, ১০ তলা, থানা- বন্দর, জেলা-নারায়নগঞ্জ।

৬০। ফাতেমা (২৫), পিতা-সাহেব আলী, আওয়ামী মহিলালীগ, থানা-জুজ খোলা, পোঃ জুজ খোলা, থানা ও জেলা-পিরোজপুর।

৬১। মোঃ সাহের (২৬), সদস্য আওয়ামীলীগ, পিতা সুলতান ফারুক, উত্তর চাষাড়া, থানা-ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।

৬২। রফিকুল ইসলাম রাব্বি (২৫), পিতা নুর মোহাম্মদ বাবু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, আওয়ামীলীগ, ৭৭৫ দক্ষিন সন্তাপুর, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ। (চলমান পাতা নং-০৮)

৬৩। মোঃ মহসীন (৪৭), পিতা-মৃত কালু মৃধা, সহ- সভাপতি-ইউনিয়ন যুবলীগ, রূপগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ, সাং-জাহাঙ্গীর, থানা-রূপগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ।

৬৪। মোঃ আসলাম (৫৫), পিতা মৃত ওসমান আলী, সাং তল্লা, থানা-ফতুল্লা, জেলা নারায়নগঞ্জ।

৬৫। মোঃ সাদ্দাম (৩৫) পিতা-ভূমিদস্যু ইকু, সাং পূর্ব শিয়াচর লালখা, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ। সর্ব পূর্ব শিয়াচর লালখা, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ।  

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ শ ম ম ওসম ন ন র য়ণগঞ জ ন আওয় ম ল গ স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ম ওসম ন ল ইসল ম র রহম ন র পগঞ জ মন ত র উভয় স

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ