মুলতানে অনেক রেকর্ডের দিনে পিছিয়ে পাকিস্তান
Published: 25th, January 2025 GMT
মুলতানের পিচকে কী বলা যায়? ঘূর্ণি-ফাঁদ নাকি মরণ-ফাঁদ? উইকেট থেকে সাজঘরে ফিরতে পারলেই যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন ক্রিকেটাররা! দিন কয়েক আগেই এই মাঠে হয়েছিল নতুন রেকর্ড। পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে পড়েছিল ১৯ উইকেট, যা ছিল পাকিস্তানের মাটিতে একদিনে সর্বোচ্চ। রেকর্ডটি টিকল না এক সপ্তাহও। সেই মুলতানেই আজ (২৫ জানুয়ারি, ২০২৫) সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে অলআউট হয়েছে দুই দলই!
একদিনেই ২০ উইকেটর পতনে হয়েছে নতুন রেকর্ড! রচিত হলো নতুন ইতিহাসের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৬৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে হাওয়ায় উড়ছিল পাকিস্তান। কিন্তু পুরো একটা দিন স্বস্তিতে কাটাতে পারলো না স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে মাত্র ১৫৪ রানে গুটিয়ে গেছে পাকিস্তানের ইনিংসও। প্রথম ইনিংসে ৯ রানের লিড নিয়েছে সফরকারী ক্যারিবিয়ানরা।
আরো পড়ুন:
আইএসআই কর্মকর্তাদের ঢাকা ‘সফরের গুজব’, নয়াদিল্লির পাত্তা
তৃতীয় দিনেই ১২৭ রানে জিতলো পাকিস্তান
প্রথম দিনের প্রথম ইনিংসে উইন্ডিজকে ১৬৩ রানে অলআউট করার পথে পাকিস্তানের স্পিনার নোমান আলী গড়েছেন আরেকটি রেকর্ড। পাকিস্তানের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের 'প্রথম স্পিনার' হিসেবে হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছেন এই ৩৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
এশিয়ার মাটিতে পুরুষদের টেস্টে প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি উইকেট পড়ার রেকর্ড এটিই। এর আগের রেকর্ডটি ছিল ১৯৮৭ সালে দিল্লি টেস্টে। ভারত এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সে টেস্টে প্রথম দিনে পড়েছিল ১৮ উইকেট।
মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানি স্পিনারদের তোপের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৮ রানেই তারা হারিয়ে বসেছিল ৭ উইকেট।
কঠিন সে বিপর্যয় থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঘুরে দাঁড়ায় নয়, দশ আর এগার নম্বর ব্যাটসম্যানদের কল্যাণে। কেভিন হজ ২১, কেমার রোচ ২৫, এগার নম্বর ব্যাটসম্যান জোমেল ওয়ারিক্যানের মূল্যবান ৩৬ এবং গুদাকেশ মোতির ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন। স্পিনার নোমান আলি ৪১ রানে একাই শিকার করেন ৬টি উইকেট। আরেক স্পিনার সাজিদ খান নেন ২ উইকেট।
জবাবে দেখেশুনে শুরু করা পাকিস্তান একটা সময় ৪ উইকেটে ১১৯ রানে ছিল। সেখান থেকে আর ৩৫ রান যোগ করতে শেষ ৬ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৯, সৌদ শাকিল ৩২, কামরান গুলাম ও সাদিদ খান ১৬ আর অধিনায়ক শান মাসুদ করেন ১৫ রান। ওয়ারিক্যান শিকার ৪৩ রানে ৪ উইকেট। মোতি এবং রোচ যথাক্রমে ৩টি ও ২টি করে উইকেট পান।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম দ ন র কর ড উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
অজিদের হারিয়ে টেস্টের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার ধস নামে শেষে। জিততে জিততে হারই যেন তাদের নিয়তি। কিন্তু লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রথম ইনিংসেই যেন হারতে বসেছিল তারা। গল্পের যে বহু বাকি দ্বিতীয় ইনিংসে দেখিয়েছে প্রোটিয়ারা। দেখিয়েছেন প্রোটিয়া ক্রিকেটের শাপমোচনের ভার কাঁধে নেওয়া এইডেন মার্করাম। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ২৮১ রান তাড়া করে ৫ উইকেটে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমবার টেস্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘরে তুলেছে আইসিসির দ্বিতীয় শিরোপা।
লর্ডসে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং নিতেই উইকেট পেস বান্ধব হতে যাচ্ছে এই বার্তা পাওয়া গিয়েছিল। উইকেটে ঘাসের সুবিধা নিয়ে কাগিসু রাবাদার দুর্দান্ত বোলিংয়ে গত টেস্ট চক্রের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ২১২ রানে অলআউট করে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অজিরা বল হাতে ছিল আরও বিধ্বংসী। প্যাট কামিন্সের তোপে মাত্র ১৩৮ রানে ধসে যায় প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়া ৭৪ রানের লিড নিয়ে শিরোপায় এক হাত দিয়ে ফেলে।
প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্টিভ স্মিথ ৬৬ রান করেন। বাও ওয়েবস্টার দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া অ্যালেক্স কেরি ২৩ ও মার্নাস লাবুশানে ১৭ রান যোগ করেন। ওই ইনিংসে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা রাবাদা ৫১ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন। মার্কোস ইয়ানসেন নেন ৩ উইকেট। প্রোটিয়াদের হয়ে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা প্রথম ইনিংসে ৩৬ রান করেন। ডেভিড বেডিংহাম ৪৬ রান যোগ করেন। কামিন্স ২৮ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নেন। মিশেল স্টার্ক ২ উইকেট দখল করেন।
দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলা ও তৃতীয় দিন সকালে পুনরায় ব্যাটিংয়ে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। ৬৬ রানে হারায় টপ ও মিডল অর্ডারের নির্ভরযোগ্য ৬ ব্যাটার। এর মধ্যে মার্নাস লাবুশানে ৬৪ বল খেলে ২২ রান করেন। অন্য কোন ব্যাটার ক্রিজে দাঁড়াতে পারেননি।
তৃতীয় দিন সকালে অবশ্য উইকেটের ঘাস মরে যাওয়ায় ও ঝলমলে রোদ ওঠায় পরিস্থিতি বদলে যায়। সুবিধা নিয়ে অ্যালেক্স কেরি ৪৩ রান করেন। তবে ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে কার্যকরী কাজটা করেন স্টার্ক ও জস হ্যালজউড। স্টার্ক ১৩৬ বল খেলে হার না মানা ৫৮ রান করেন। শেষ ব্যাটার হ্যালজউড ৫৩ বল খেলে ১৭ রান যোগ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে রাবাদা ৪টি ও লুঙ্গি এনগিডি নেন ৩ উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ৯ রানে ওপেনার রায়ান রিকেলটনকে হারায়। তবে অলরাউন্ডার ওয়ান মুলদারকে নিয়ে ওপেনার এইডেন মার্করাম ভিত্তি শক্ত করে ফেলেন। মুলদার ২৭ রান করে দলের ৭০ রানে ফিরে যান। মার্করাম ও বাভুমা সেখান থেকে ২১৩ রান তুলে জয়ের সুবাস নিয়ে দিন শেষ করেন। মার্করাম সেঞ্চুরি তুলে নেন। ফিফটি হয় বাভুমারও। চতুর্থ দিনের শুরুতে বাভুমা ৬৬ রান করে ফিরে যান। মার্করাম ২০৭ বল খেলে ১৩৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে আউট হলেও জয় নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হয়নি প্রোটিয়াদের।