স্কোরবোর্ডে বড় পুঁজি নিয়েও ফরচুন বরিশালের শক্তির কাছে ধরাশয়ী খুলনা টাইগার্স। নিজেদের শক্তির দারুণ প্রদর্শনীতে তারা ম্যাচ জিতেছে অনায়েসে। টানা পাঁচ জয়ে অব্যাহত তাদের জয়রথ।

দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের প্রথম দেখায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। আজকের ম্যাচেও তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষটায় বরিশাল দেখাল কেন তারা শিরোপার বড় দাবিদার। 
মিরপুর শের-ই-বাংলায় টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৮৭ রান করে খুলনা টাইগার্স। জবাবে ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে বরিশাল। নিজেদের খেলা শেষ পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই তারা জিতেছে।

সবশেষ হেরেছিল রংপুর রাইডার্সের কাছে। আজকের জয়ে বরিশাল এখন রংপুরের পাশে। ১০ ম্যাচে দুই দলেরই জয় ৮টিতে। ১৬ পয়েন্ট দুই দলেরই। রান রেটে এগিয়ে রংপুর রয়েছে শীর্ষে। ১.

০৭০ রান রেটে টেবিল টপার রংপুর। ১.০৩৩ রান রেটে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বরিশাল।

আরো পড়ুন:

নাঈম-অঙ্কন ঝড়ে খুলনার বড় পুঁজি

দিনভর নাটক, নতুন অভিজ্ঞতার পর বিপর্যস্ত ও বিরক্ত দলের এক হয়ে ওঠার গল্প

প্রথম ইনিংসের শুরুতে ছিল নাঈম শেখের ঝড়। শেষে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন টানেন দলকে। নাঈম ২৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ রান করেন। ১৮৮.৮৮ স্ট্রাইক রেটে সাজানো ছিল তার ইনিংস। শেষ দিকে দলের দাবি মিটিয়ে ঝড় তোলেন অঙ্কন। ২২৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করা অঙ্কন ১২ বল খেলেন। ২ চার ও ৩ ছক্কায় যোগ করেন ২৭ রান।

খুলনার শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানই এদিন রান পেয়েছেন। কারও স্ট্রাইক রেট একশর নিচে নামেনি। মিরাজ ও নাঈম উদ্বোধনী জুটিতে ৫.৩ ওভারে ৪৭ রান জমা করেন। এবারের বিপিএল আসরে প্রথমবার খেলতে নামা ইবাদত হোসেন ভাঙেন এই জুটি। মিরাজকে টো এন্ড ইয়র্কারে বিট করে বোল্ড করেন দ্রুতগতির এই পেসার। খুলনার অধিনায়ক সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ২৯ রান করেন।

ক্রিজে এসে অ্যালেক্স রস তিন সুইপ শটে ছক্কা, চার ও চার হাঁকান। মোহাম্মদ নবীর বলে সাজঘরে ফেরার আগে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ১৫ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২০ রান। আফিফ হোসেন ২টি করে চার ও ছক্কা হাঁকালেও ২৭ বলে করেন মাত্র ৩২ রান।

আরেক বিদেশী ক্রিকেটার উইলিয়াম বোসিস্টো স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করেন ১৬ বলে ২০ রান করে। তখনও বোঝা যাচ্ছিল না সাতে নামা অঙ্কন কি করবেন। কিন্তু শেষের ব্যাটিং চিত্র পাল্টে দেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। তার ঝড়ো ২৭ রানের সুবাদে খুলনার স্কোরবোর্ডে হাসি ফুটেছে।

বল হাতে বরিশালের হয়ে ৪৯ রানে ২ উইকেট নেন ফাহিম আশরাফ। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন ফুলার, নবী ও ইবাদত।

লক্ষ্য তাড়ায় তাওহীদ হৃদয় ১টি করে চার ও ছক্কায় ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। সেখান থেকে তামিম ও মালান ৯১ রানের জুটি গড়েন। বরিশাল সেখানেই জয়ের ভিত পেয়ে যায়। যে জুটিতে মালানের অবদানই ছিল বেশি। ৩৩ বলে ৬১ রান করেন মালান। তামিম ২৩ বলে করেন ২৭ রান।

বরিশালের অধিনায়কের বিদায়ে এই জুটি ভাঙলে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় তারা। ১৯ রানের ব্যবধানে মালানও তার পথ অনুসরণ করেন। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া মালান ৩৭ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ রান করেন।

এরপর মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে বরিশাল লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। দুজই বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাটিং করে ২৪ রানের দুইটি কার্যকারী ইনিংস খেলেন। দুজন পরপর দুই বলে আউট হলে আবার কিছুটা চাপে পড়ে বরিশাল। কিন্তু ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নবীর দায়িত্বশীল ইনিংসে খুব সহজেই বরিশাল লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। ফাহিম ৬ বলে ১৮ রান করেন ১ চার ও ২ ছক্কায়। নবী ১০ বলে ১ ছক্কায় করেন ১৫ রান।

বরিশালের বিপক্ষে এই হারে খুলনার প্লে অফে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ল। ১০ ম্যাচে ছয়টি ম্যাচ হেরেছে তারা। জিতেছে মাত্র চারটি। পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে তাদের অবস্থান। 

ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর ন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ