রাজবাড়ীতে বালু ব্যবসায়ী সাফিন খান (৪০) হত্যা মামলায় ২ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার বিকেল ৫টায় রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভীন চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত সাফিন খান কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের বক্কার খানের ছেলে। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলো কুষ্টিয়ার খোকসা জেলার আমবাড়িয়া গ্রামের সালাম মন্ডলের ছেলে আরিফুজ্জামান আরিফ ও একই গ্রামের ইব্রাহীম প্রামানিকের ছেলে রুহুল আমিন প্রামাণিক। 

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সেনগ্রামের মুরাদ মন্ডলের ছেলে সামাদ মন্ডল, শাজাহান প্রামাণিকের ছেলে ওয়াহেদ আলী প্রামাণিক, পাবনা সদর উপজেলার আকাই কাজীর ছেলে রশিদ কাজী, খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের সাত্তার মোল্লার ছেলে রাজীব মোল্লা, একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সবুজ মোল্লা ও মোতালেব মোল্লার ছেলে সাগর মোল্লা। 

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, সাফিন খান দীর্ঘ ১৮ বছর সৌদি আরব ছিলেন। সেখান থেকে দেশে ফিরে বালুর ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামে একটি ফসলি ক্ষেত থেকে সাফিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগের দিন ১৬ ডিসেম্বর তারিখে সে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। 

সাফিনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার বড় ভাই ফরিদ হাসান বাদী হয়ে পাংশা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেখানে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে, পুলিশ মামলাটির তদন্ত করতে গিয়ে ওই পাঁচজনসহ আরও ছয়জনের মোট ১১ জনের সম্পৃক্ততা পায়।

তদন্ত শেষে ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দেওয়া হয়। মূলত বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করেই তাকে হত্যা করা হয়। আদালত মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনা ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ছয়জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সাথে ২০১ ধারায় প্রত্যেককে সাত বছরের কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আরিফুজ্জামান আরিফ ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত রশিদ কাজী অনুপস্থিত ছিলেন। 

মামলার অপর তিন আসামি সেলিম রানা, রতন মোল্লা ও কবীরুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে হত্যায় সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রাজবাড়ী আদালতের পিপি আব্দুর রাজ্জাক (২) বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা ছিল। আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে তিনি খুশী। এ রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।

মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।

সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।

জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।

তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।

এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ  রিকোভারীবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ