নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৩১ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে জুনিয়র কনসালট্যান্টসহ চিকিৎসকের ৯ পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি পদের বিপরীতে বছরখানেক ধরে কোনো চিকিৎসক নেই। একটি পদে কাগজে থাকলেও গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে তিনি বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে অন্য উপজেলার চিকিৎসক এনে জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসাসেবা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, হাওর অধ্যুষিত এলাকার লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ভরসাস্থল খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কাজ হয়নি। এতে জটিল ও জরুরি চিকিৎসাসেবা না পা পাওয়ায় ঝুঁকিতে পড়ছেন রোগীরা। উপজেলায় সরকারি এ চিকিৎসাকেন্দ্রটি ছাড়া তেমন কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক নেই। 

শহরের কলেজ শিক্ষক জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা খুব অসুবিধার মধ্যে আছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসার জন্য অনত্র যেতে হয়। বিষয়টি ভাবতেই কেমন যেন লাগে।’ একই ধরনের কথা বলেন নূরপুর বোয়ালী গ্রামের মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ। তাঁর ভাষ্য, এই যুগে চিকিৎসক ছাড়া হাসপাতাল চিন্তাই করা যায় না। কিছুদিন আগে এক রোগী নিয়ে গিয়ে দেখেন চিকিৎসক নেই। পরে মদনে যেতে হয়েছে। তিনি দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা গেছে, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) পদে ডা.

প্রণব কুমার পাল নামে একজন চিকিৎসক বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাঁকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দিলেও তিনি জবাব দেননি। এর আগেও তিনি বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁকে শোকজ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে প্রণব কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবন থাকলেও তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। ফলে রোগীকে অনেক পথ পেরিয়ে যেতে হয় জেলা সদর, পাশের মোহনগঞ্জ ও মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা সুনামগঞ্জে যেতে হয়। এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি বাড়তি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। ফলে এখানে মা ও শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের কখনও সিজারও হয়নি। চিকিৎসক, যন্ত্রপাতি এবং ব্লাড ব্যাংকের অভাবে অপারেশন থিয়েটার অচল পড়ে আছে। গতকাল সোমবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৌনম বড়ুয়া। তাঁর ভাষ্য, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার একটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। মেডিকেল অফিসারের পদ আছে তিনটি। সেগুলোও শূন্য। 
জুনিয়র কনসালট্যান্টের পদ চারটি। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্ট গাইনি ও অবস পদের বিপরীতে দু’জনের পোস্টিং রয়েছে। তবে তারা যোগদানের পর থেকে একজন সংযুক্তিতে রয়েছেন ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অন্যজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছেন। জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) পদও শূন্য। 
এক মাসের অধিক সময় ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক নেই জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমর্কর্তা ডা. সৌনম বড়ুয়া বলেন, অন্য উপজেলার চিকিৎসক দিয়ে পালাক্রমে এলাকার বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স স ব স থ য কমপ ল ক স চ ক ৎসক ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘দাগি’ সিনেমা দেখতে টাঙ্গাইলে অস্থায়ী হল তৈরি করছেন নিশো ভক্তরা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নেই কোনো সিনেমা হল। তাই প্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো অভিনীত সিনেমা দেখার তীব্র আগ্রহ ও ভালোবাসায় আবারো অস্থায়ী সিনেমা হল তৈরি করছেন তার স্থানীয় ভক্তরা। সেখানে এবার প্রদর্শিত হবে নিশো অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘দাগি’। ভক্তদের ভালোবাসার টানে নিজ এলাকায় যাবেন আফরান নিশো।

শুক্রবার (২ মে) থেকে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্সের দোতলায় ৭ দিনব্যাপী প্রদর্শিত হবে আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। প্রতি টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ১০০ টাকা। প্রতিদিন ৪টি করে শো চলবে। প্রথম শো শুরু হবে বিকেল ৪টা থেকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে অস্থায়ী সিনেমা হল নির্মাণে কাজ করছেন একদল যুবক। জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোকে ভালোবেসে গত বছর ‘সুরঙ্গ’ সিনেমার জন্য অস্থায়ী হল নির্মাণ করেছিলেন তারা। এবারো সেই ভালোবাসা থেকেই ‘দাগি’ সিনেমা প্রদর্শনের জন্য নির্মাণ করছেন প্রেক্ষাগৃহ।

আরো পড়ুন:

প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা

নায়ক রুবেলের মৃত্যু গুজব: সোহেল রানার হুঁশিয়ারি

নিশো ভক্ত তন্ময় বলেন, “আফরান নিশো আমাদের এলাকার সন্তান। তার জন্য আমাদের অগাধ ভালোবাসা। তার অভিনীত সিনেমা ‘দাগি’ দেখার জন্য এখানে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, সেটা সেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভূঞাপুরের মানুষ যেন নিশো ভাইয়ের সিনেমা দেখতে পারেন, তার জন্যই এই আয়োজন। আমরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি সিনেমাটি দেখার জন্য।”

বিশেষ চমক হলো— এই আয়োজনে অংশ নিতে নিজ এলাকাতেই যাবেন আফরান নিশো। প্রিয় নায়কের আগমন আর সিনেমা প্রদর্শনকে ঘিরে ইতোমধ্যে উৎসাহের জোয়ার বইছে ভূঞাপুরে।

ভক্তদের আয়োজনে নির্মিত অস্থায়ী এই সিনেমা হলটি তৈরি হচ্ছে ভূঞাপুর স্বাধীনতা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে। বিশাল স্ক্রিন ও উন্নত সাউন্ড সিস্টেমসহ আধুনিক সুবিধার এই আয়োজন স্থানীয়দের মাঝে এক ভিন্ন আবেগ সৃষ্টি করেছে।

আয়োজক কমিটির সদস্য হাদী চকদার বলেন, “ভূঞাপুরে স্থায়ী হল না থাকলেও আমরা চেয়েছি নিশো ভাইয়ের ‘দাগি’ সিনেমাটি সবাই মিলে একসঙ্গে দেখতে। তিনি আমাদের গর্ব, আমাদের এলাকার সন্তান। তাই এবারো আমরা তাকে দাওয়াত দিয়েছি এবং তিনি আসছেন। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি।”

ভক্তদের আয়োজনে একজন অভিনয়শিল্পীর সরাসরি অংশগ্রহণ, অস্থায়ী হলেও একটি হল নির্মাণ এবং সিনেমা দেখার এই উৎসব— ভূঞাপুরে যেন নতুন করে সিনেমাপ্রেমের আলো জ্বেলে দিচ্ছে।

গত কয়েক বছর ধরে ঈদকে কেন্দ্র করে নির্মিত সিনেমাগুলো নিয়েই অধিক আলোচনা ও সমালোচনা দেখা যাচ্ছে। ঈদুল ফিতরে বেশ কটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম আফরান নিশো অভিনীত ‘দাগি’ সিনেমা। শিহাব শাহীন পরিচালিত এ সিনেমায় নিশোর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা।

ঢাকা/কাওছার/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ