সংগ্রাম পেরোনো সফল তাসকিন অপেক্ষা ফুরাবে কবে?
Published: 28th, January 2025 GMT
দলগুলো নাম পড়লেই পরিস্কার চিত্রটা সামনে চলে আসবে। বিপিএলে শেষ কয়েক আসরে যে-ই দলগুলোর অংশগ্রহণ কেবল ‘নামকাওয়াস্তে’। আর সেসব দলে অংশ করে গড়পড়তার চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে আড়ালে থাকতে হয় তারকা ক্রিকেটারদের।
শেষ কয়েক বছর ধরে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে এমন কিছুই হচ্ছে। ২০২৩ সালে সরাসরি চুক্তি করে খেলেছিলেন ঢাকা ডমিনেটর্সে। নয় ম্যাচ খেলে তাসকিন পেয়েছিলেন ১০ উইকেট। দলের ফলাফল ১২ ম্যাচে ৩ জয়।পরের বছর তার ঠিকানা দুর্দান্ত ঢাকা।১২ ম্যাচে তাসকিনের ১৩ উইকেট। দলের ফলাফল ১২ ম্যাচে কেবল ১ জয়।
তারো পেছনে গেলে মিলবে আরো ভয়াবহ চিত্র। ২০১৯ সালে ১২ ম্যাচে তাসকিনের শিকার ২২ উইকেট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। তার দল সিলেট সিক্সার্সের ফলাফল ১২ ম্যাচে পাঁচ জয়। অতীতের সবকিছুকে তাসকিন ছাড়িয়ে গেছেন এবার। সরাসরি চুক্তি না করে খোলা মনে তাসকিন নাম লিখিয়েছিলেন প্লেয়ার্স ড্রাফটে। কিন্তু এখানেও ভাগ্য তাকে সহায়তা করেনি।
আরো পড়ুন:
বিপিএল নিয়ে ‘সিরিয়াস বিসিবি’, ৭ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বিসিবির ডাক
নিয়তি মেনে বিশ্বমানের হওয়ার স্বপ্ন বোনা
দুর্বার রাজশাহী তাকে দলে ভেড়ায়। যারা টুর্নামেন্টজুড়ে আলোচনায় পরিশ্রমিক দিতে না পারায়, হোটেল বিল দিতে না পারায়, খেলোয়াড়দের দৈনিক ভাতা দিতে না পারায়। মাঠের বাইরের ইসু্যগুলোতে তাসকিন মাথা ঘামাননি। চেয়েছিলেন নিজে পারফর্ম করতে। সেটাই হয়েছে।
১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। এতো ভালো করেও তার মুখ থেকে হাসি উধাও। কেননা বড় দল, গোছানো পরিবেশ, ভালোমানের সতীর্থ এবং পেশাদারিত্ব থাকা একটি দলে কয়েক আসর ধরে খেলতে না পারার আক্ষেপ তার।
তাসকিন এখন বাংলাদেশের পেস ব্যাটারি। নিজেকে ভেঙে নতুন করে গড়ে লাল-সবুজের পতাকাকে উড়িয়ে নিচ্ছেন বিশ্ব দরবারে। বাংলাদেশের পেস আক্রমণের বর্তমান ব্যাটন এখন তার হাতেই। ঢাকা এক্সপ্রেস হাসলে হাসে বাংলাদেশ, বিষয়টি এমনই দাঁড়িয়েছে।
শুধু বোলিংয়ে তাসকিন মুগ্ধ করছেন না। নিজের পরিপক্কতা, কথার সৌন্দর্য, ভাবনার গভীরতা, প্রতিপক্ষকে মূল্যায়ন, নিজের যত্ন, কাজের পরিধি নির্ণয়, আগ্রাসী মনোভাব, হারার আগে না হারার মানসিকতায় অনন্য হয়ে উঠেছেন।
সেই তাসকিনের আক্ষেপ বিপিএলে ভালো ও গোছানো দলে খেলতে না পারার, “এটা কিছুটা আনফরচুনেট। এই নিয়ে চারটা সিজন ব্যাক টু ব্যাক বড় দলে খেলার সুযোগ হয়নি। যার কারণে এই বছরে ড্রাফটে গেলাম। ড্রাফটে প্রথম ডাকেই রাজশাহী আমাকে পিক করে।”
“এখন আসলে কয়েকটা ম্যাচ আছে…সেগুলো উপভোগ করতে চাচ্ছি। আফসোস করলে আফসোস করা ছাড়া কিছু করার নেই। নিজেকে নিজের অনুপ্রাণিত করতে হয়। প্রক্রিয়াতে থাকি তাহলে জিনিসটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ভবিষ্যতে বড় দলগুলো যদি মনে করে আমি তাদের নেওয়ার মতো খেলোয়াড় তাহলে নিবে।”
তাসকিনের বিগত কয়েক বছরে ডাক এসেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ থেকে। বোর্ডের অনাপত্তিপত্র পাননি বলে যাওয়া হয়নি। এছাড়া আরো ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও তার সুযোগ মিলেছে। কিন্তু বাংলাদেশের তারকা পেসারের সব জায়গায় খেলার সুযোগ হয়নি। সেসব নিয়ে আপাতত তার ভাবনায় নেই।
“তকদির বলেও কিছু আছে। ক্রিকেটার হিসেবে আমি এই মুহূর্তে কেবল উপভোগ করতে চাই। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ রাখে এটাই চাওয়া।”
ঢাকা/ইয়াসিন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১২ ম য চ ব প এল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
তীব্র খরার কবলে পড়েছে ইরানের রাজধানী তেহরান। সেখানে বাসিন্দাদের সুপেয় পানির প্রধান উৎসটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শুকিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ গতকাল রোববার এ খবর জানিয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালক বেহজাদ পারসার বরাত দিয়ে আইআরএনএর খবরে বলা হয়, তেহরানে খাবার পানি সরবরাহের পাঁচটি উৎসের একটি আমির কবির বাঁধ। সেটিতে এখন মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ ঘনমিটার পানি আছে। এটি জলাধারটির মোট ধারণক্ষমতার মাত্র ৮ শতাংশ।
বেহজাদ পারসা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমাণ পানি দিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহ তেহরানের খাবার পানির চাহিদা মেটানো যাবে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র খরার মোকাবিলা করছে ইরান। গত মাসে স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, তেহরান প্রদেশে এবার বৃষ্টির যে মাত্রা, তেমনটা গত এক শতাব্দীতে খুব একটা দেখা যায়নি।
এক কোটির বেশি মানুষের নগর তেহরান তুষারাচ্ছন্ন আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত। এই পর্বতমালার সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ হাজার ৬০০ মিটার (১৮ হাজার ৩৭০ ফুট) পর্যন্ত। এই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো বহু জলাধারে পানির জোগান দেয়।
বেহজাদ পারসা বলেন, এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তেহরানে পানি সরবরাহ করা বাকি জলাধারগুলোর বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি এই কর্মকর্তা।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তেহরানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ঘনমিটার পানির প্রয়োজন পড়ে।
এক বছর আগেও আমির কবির বাঁধে ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনমিটার পানি ছিল। কিন্তু তেহরান অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় শতভাগ হ্রাস পেয়েছে।বেহজাদ পারসা, তেহরানে পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিচালকপানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ হিসেবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরানের বেশ কয়েকটি এলাকায় বারবার সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর চলতি গ্রীষ্মে ঘন ঘন পানি সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘটনাও ঘটেছে।
জুলাই ও আগস্টে পানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দুই দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। ইরানে সে সময় তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রতিদিন একাধিকবার লোডশেডিং হয়েছে।
ওই দুই মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়ে গিয়েছিল।
জুলাই ও আগস্ট মাসে তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছুঁয়ে ছিল।ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আজ যেভাবে আলোচনা হয়েছে, পানিসংকট পরিস্থিতি তার চেয়েও গুরুতর।’
ইরানজুড়ে পানিসংকট একটি বড় সমস্যা, বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের শুষ্ক প্রদেশগুলোতে। ভূগর্ভস্থ সম্পদ ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা ও সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহারকে পানি ঘাটতির জন্য দায়ী করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে ভূমিকা রাখছে।
আরও পড়ুনপ্রচণ্ড গরমে পানির ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ইরানিদের কম পানি ব্যবহারের আহ্বান২০ জুলাই ২০২৫