রাশিয়ার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এতে একটি শিল্প স্থাপনায় আগুন লেগেছে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশটির ৯টি অঞ্চলে ১০৪টি ড্রোন দিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে হামলাগুলো ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে রুশ বাহিনী। খবর রয়টার্সের।

রুশ সংবামাধ্যম বলছে, রাশিয়ার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের ব্যাপক ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল। 

আরো পড়ুন:

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে নিহত ১৩, আহত ৩০

রাশিয়ার গভীরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা

বেলারুশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমাঞ্চলীয় স্মোলেনস্ক অঞ্চলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালানোর চেষ্টা করা একটি ড্রোন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে বলে টেলিগ্রাম পোস্টে দাবি করেছেন অঞ্চলটির গভর্নর ভ্যাসিলি আনোখিন।

রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমে বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্র স্মোলেনস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে, প্ল্যান্টের প্রেস সার্ভিসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে জানিয়েছে, পশ্চিম রাশিয়া জুড়ে ১০৪টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন, যার মধ্যে ১১টি স্মোলেনস্ক অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নয়টি অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। ১০৪টি ড্রোনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ড্রোন কুরস্কে অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে। এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করে থাকা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কয়েক মাস ধরে রাশিয়ান বাহিনী লড়াই করছে।

ইউক্রেন থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৭ মাইল) পূর্বে নিঝনি নভগোরোড অঞ্চলের কস্তোভোতে একটি শিল্প স্থাপনায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ থেকে আগুন লেগেছে বলে আঞ্চলিক গভর্নর গ্লেব নিকিতিন টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

রাশিয়ান টেলিগ্রাম নিউজ চ্যানেল বাজা জানিয়েছে, কস্তোভোতে একটি তেল শোধনাগারে আগুন লেগেছে।

ইউক্রেন সীমান্তবর্তী বেলগোরোড অঞ্চলে ড্রোন হামলার ফলে একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গতকাল রাতের ড্রোন হামলা নিয়ে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। কয়েক মাস ধরেই রাশিয়ার বেশ ভেতরে দূরপাল্লার হামলা বাড়িয়েছে তারা। পশ্চিমা প্রযুক্তি ও অর্থের সহায়তায় এসব দূরপাল্লার হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। দেশটি বলছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে তাদের হামলার লক্ষ্য মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টার মূল অবকাঠামো ধ্বংস করা।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ধ ব স কর ইউক র ন

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ