রাশিয়ায় ১০৪ ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের হামলা
Published: 29th, January 2025 GMT
রাশিয়ার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র লক্ষ্য করে রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এতে একটি শিল্প স্থাপনায় আগুন লেগেছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রুশ কর্মকর্তারা বলেছেন, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশটির ৯টি অঞ্চলে ১০৪টি ড্রোন দিয়ে এ হামলা চালানো হয়। তবে হামলাগুলো ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে রুশ বাহিনী। খবর রয়টার্সের।
রুশ সংবামাধ্যম বলছে, রাশিয়ার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের ব্যাপক ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল।
আরো পড়ুন:
রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে নিহত ১৩, আহত ৩০
রাশিয়ার গভীরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা
বেলারুশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমাঞ্চলীয় স্মোলেনস্ক অঞ্চলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালানোর চেষ্টা করা একটি ড্রোন বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে বলে টেলিগ্রাম পোস্টে দাবি করেছেন অঞ্চলটির গভর্নর ভ্যাসিলি আনোখিন।
রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমে বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কেন্দ্র স্মোলেনস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে, প্ল্যান্টের প্রেস সার্ভিসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে জানিয়েছে, পশ্চিম রাশিয়া জুড়ে ১০৪টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন, যার মধ্যে ১১টি স্মোলেনস্ক অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নয়টি অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। ১০৪টি ড্রোনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ড্রোন কুরস্কে অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে। এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করে থাকা ইউক্রেনীয় সৈন্যদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কয়েক মাস ধরে রাশিয়ান বাহিনী লড়াই করছে।
ইউক্রেন থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৭ মাইল) পূর্বে নিঝনি নভগোরোড অঞ্চলের কস্তোভোতে একটি শিল্প স্থাপনায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ থেকে আগুন লেগেছে বলে আঞ্চলিক গভর্নর গ্লেব নিকিতিন টেলিগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
রাশিয়ান টেলিগ্রাম নিউজ চ্যানেল বাজা জানিয়েছে, কস্তোভোতে একটি তেল শোধনাগারে আগুন লেগেছে।
ইউক্রেন সীমান্তবর্তী বেলগোরোড অঞ্চলে ড্রোন হামলার ফলে একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আঞ্চলিক গভর্নর জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গতকাল রাতের ড্রোন হামলা নিয়ে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। কয়েক মাস ধরেই রাশিয়ার বেশ ভেতরে দূরপাল্লার হামলা বাড়িয়েছে তারা। পশ্চিমা প্রযুক্তি ও অর্থের সহায়তায় এসব দূরপাল্লার হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। দেশটি বলছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে তাদের হামলার লক্ষ্য মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টার মূল অবকাঠামো ধ্বংস করা।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ধ ব স কর ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই উৎসের একটি পণ্য রপ্তানি স্বস্তিতে নেই। টানা তিন মাস ধরে দেশের পণ্য রপ্তানি কমেছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৮২ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তারপরের দুই মাস, অর্থাৎ আগস্টে ২ দশমিক ৯৩ এবং সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। তাতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবরে) সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অথচ বিদায়ী অর্থবছর পণ্য রপ্তানি বেড়েছিল সাড়ে ৮ শতাংশ।
পণ্য রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান আজ সোমবার প্রকাশ করেছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ১ হাজার ৬১৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত অক্টোবরে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত চিংড়ি, প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি কমেছে। তবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়াবিহীন জুতা ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। মূলত তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৮ শতাংশ কমে যাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে।
দেশের মোট রপ্তানি ৮০ শতাংশই তৈরি পোশাক। টানা তিন মাস ধরে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলেও অর্থবছরের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। গত জুলাইয়ে ৩৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সাড়ে ২৪ শতাংশ। পরের মাসে রপ্তানি কমে পৌনে ৫ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে কমেছিল প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ। গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ২৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।
দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি খাত বর্তমানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত ইতিবাচক ধারায় আছে এই খাতের রপ্তানি। গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪১ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।
পণ্য রপ্তানিতে তৃতীয় শীর্ষ খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ৩৮ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পৌনে ২ শতাংশ কম। শুধু গত মাসে ১০ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ।
এদিকে চতুর্থ শীর্ষ রপ্তানি খাত হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি গত মাসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ শতাংশ। যদিও সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছিল দশমিক ৫৪ শতাংশ। সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৮ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৯ শতাংশ বেশি।
দেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি এখনো ইতিবাচক ধারায় আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে ২৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি। শুধু গত মাসে ৮ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ।