কুড়িগ্রামে সমকাল সুহৃদ সমাবেশের আয়োজনে চলছে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি। এর ধারাবাহিকতায় শীতের উপহার হিসেবে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে পত্রিকা বিক্রেতা ও খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে।

২৩ জানুয়ারি রাতে শহরের উলিপুর ডটকম কার্যালয়ে তৃতীয় দফায় উলিপুরের সংগঠক মারুফ আহম্মেদের সহযোগিতায় পত্রিকা বিক্রেতাদের এবং ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় চর কুড়িগ্রাম এলাকায় দিনমজুরদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করে সুহৃদ সমাবেশের সদস্যরা। 
এ সময় দেশ টিভির সাংবাদিক জুয়েল রানা, নাগরিক টিভির সাংবাদিক ফজলুল হক ফারাজি, পত্রিকা বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সমকালের এজেন্ট মো.

রানা, মো. শহিদুল, সুহৃদ অমিত পাল, জামিল মিয়া, আবু মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদা পারভীন সুহৃদদের শীতবস্ত্র বিতরণ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা এই শীতে সদর উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার ছিন্নমূল মানুষকে কম্বল দিয়ে সহযোগিতা করেছি। এ কাজে সুহৃদরা এগিয়ে এসেছেন। অনেক ধন্যবাদ সুহৃদ টিমকে।’ 

পত্রিকা বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা পত্রিকা বিক্রেতারা পাঠকের কাছে সাংবাদিকদের খবর পৌঁছে দেই। কয়েকজন সাংবাদিক ছাড়া আমাদের কেউ তেমন খোঁজখবর রাখে না। গত ২ বছর ধরে সমকাল সুহৃদ সমাবেশ আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করছে। তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ। 

তরুণ সংগঠক মারুফ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, সমকালের কুড়িগ্রামের সুহৃদরা এই শীতে দারুণ কাজ করছে। আমরা এ কাজে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ তবস ত র ব তরণ সহয গ ত সমক ল ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ