বাড়ি নির্মাণের সময় চাঁদা দাবির অভিযোগে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ মোল্লার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাড়ির মালিক চৌহালী উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সহ-সভাপতি ওসমান আলী চলতি বছর (২১ জানুয়ারি) আদালতে পিটিশন মামলা করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরামুল হোসাইন জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আদালত থেকে আদেশের কপি আসেনি। আদেশের কপি আসলে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ভুক্তভোগী ওসমান আলী বলেন, “যমুনা নদীর ভাঙনে পৈত্রিক বসতবাড়ি বিলীন হওয়ায় খাসকাউলিয়া ইউনিয়নের কুরকি পূর্বপাড়ায় শ্বশুর বাড়ি থেকে প্রাপ্ত ২৭ শতক জায়গায় বেশ কিছুদিন আগে বসতবাড়ি করে বসবাস করছি। সম্প্রতি সেখানেই একটি টিনের ঘরের পাকা দেওয়াল নির্মাণ শুরু করেছি। এ অবস্থায় প্রতিহিংসার কারণে গত ১ জানুয়ারি সকালে ২০-২৫ জনকে সাথে নিয়ে এসে প্রতিবেশী জাহিদ মোল্লা ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তিনি জোরপূর্বক ৩টি সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় এবং টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত দেওয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। অমান্য করলে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকিও দেন তিনি। এ অবস্থায় ২১ জানুয়ারি আদালতে পিটিশন মামলা করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “বিয়ষটি জানার পর জাহিদ মোল্লা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তার অভাবে বর্তমানে অন্যত্র অবস্থান করছি, বাড়িতে যেতে পারছি না। পরিবারের লোকজন বাড়িতে আতঙ্কে বসবাস করছে। প্রায় ১ মাস যাবত নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” 

বাদীর আইনজীবী ফরিদ আলম আলমগীর বলেন, “এ বিষয়ে চৌহালী আমলী আদালতে পিটিশন মামলা করা হয়েছে। মামলায় জাহিদ মোল্লাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।” 

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌহালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ মোল্লা বলেন, “ওসমান আলী আদালতে মিথ্যা মামলা করে বাড়ি ছেড়ে এখন গাজীপুরে অবস্থান করছে। আমি তার কাছে কিসের চাঁদা চাইব। ওসমান নিজেই ১০০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা তুলে খায়। মিথ্যা মামলা করার কারণে এলাকার অনেকেই ক্ষেপে আছে। ওসমান বাড়িতে এলেই ধরবে।”

ঢাকা/রাসেল/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স র জগঞ জ ওসম ন অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে বসতবাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও প্রাননাশের হুমকি
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব