কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শতাধিক দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, রামদা, বল্লম ও লাঠি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। আহত হয়েছেন এক নারীসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ। পৌরসভার চণ্ডিবেড় এলাকার পাগলা বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সেনা সদস্য ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আপেল মোল্লা, সানি, শরীফ আহমেদ ও শাওন নামে গুরুতর আহত চারজনকে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া নাসিমা বেগম, শিফাত মোল্লা, শাহাদাত হোসেন, আরিয়ান, হাবিবুর রহমানসহ অন্যদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পাগলা বাড়ির মিলন মিয়ার ছেলে সাদির ও তার বন্ধুদের সঙ্গে মোল্লা বাড়ির মস্তু মিয়ার ভাতিজা রাহাতের পাওনা টাকা নিয়ে রাত ৯টার দিকে কথা কাটাকাটি হয়। উভয় পরিবারের অভিভাবক ও স্থানীয়রা তখনকার মতো মিটমাট করে দেন। কিন্তু রাত ১০টার দিকে দু’পক্ষ রামদা, বল্লম, লাঠি আর ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে শতাধিক বাড়ি ও দোকানপাট।

এলাকার নূর মোহাম্মদ জানান, রাস্তার পাশে তাদের একটি মুদির দোকান আছে। সেটি রাতে বন্ধ করে যাবার পরই সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করে প্রায় লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। এলাকার কাজী বাড়ির লেলিন কাজী জানান, সংঘর্ষে তাদের এলাকার দোকানপাটও ভাঙচুর করা হয়েছে। 

মোল্লা বাড়ির মোশারফ মোল্লা জানান, তার ভাতিজা রাহাতকে পাগলা বাড়ির কিছু ছেলে ধরে নিতে চেয়েছিল। এ সময় মোশারফের ছোট ভাই মস্তু মোল্লা বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এর পরই দু’পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। অন্যদিকে পাগলা বাড়ির মিলন মিয়া জানান, ছেলেদের ঝগড়ার কথা শুনে তিনি মোল্লাবাড়ির লোকদের নিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করেন। এসময় তাকে মস্তু মোল্লা অপমান করেন। এর পরও মোল্লা বাড়ির লোকদের মিমাংসার কথা বলার পরই তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাগলা বাড়িতে হামলা চালায়। এর পরই দুই পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুল করিম জানান, আহতদের মধ্যে চারজনকে সৈয়দ নজরুল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তারা এবং সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে কোন পক্ষই মামলা দেয়নি, কেউ আটকও নেই। মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ স ঘর ষ র এল ক র র পরই

এছাড়াও পড়ুন:

শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় মাদকসহ একাধিক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে মাদক কারবারিদের হামলায় দুই পুলিশসহ তিনজনের আহতের ঘটনায় দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ী এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা করা হয়। পরে রাতেই নালিতাবাড়ী থানায় পুলিশ মামলা করে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকি দুইজনকে আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দুপুরে শেরপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা জানান, আসামি ধরতে গিয়ে দুই পুলিশসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নালিতাবাড়ী থানার পুলিশ জানায়, উপজেলার বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ী এলাকার মাজম আলীর (৪০) বিরুদ্ধে ইয়াবাসহ একাধিক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করতে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের তিন সদস্যের দল অভিযান চালায়। তখন মাজম আলীসহ অন্য তিন মাদক কারবারি প্রতিবেশী মফিজুলের পতিত বাড়ির রান্নাঘরে বসে ইয়াবা লেনদেন করছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাজম আলীসহ অন্যদের ধরতে চাইলে নারী-পুরুষসহ স্বজনেরা পুলিশের উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। 

আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। আহতরা হলেন, নালিতাবাড়ী থানার এএসআই ওমর ফারুক, কনস্টেবল নাজমুল ও স্থানীয় বাসিন্দা শাহীন।

ঢাকা/তারিকুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪