ভৈরবে পাওনা টাকা নিয়ে সংঘর্ষ শতাধিক বাড়ি-দোকান ভাঙচুর, আহত প্রায় অর্ধশত
Published: 1st, February 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শতাধিক দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, রামদা, বল্লম ও লাঠি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। আহত হয়েছেন এক নারীসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ। পৌরসভার চণ্ডিবেড় এলাকার পাগলা বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সেনা সদস্য ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আপেল মোল্লা, সানি, শরীফ আহমেদ ও শাওন নামে গুরুতর আহত চারজনকে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া নাসিমা বেগম, শিফাত মোল্লা, শাহাদাত হোসেন, আরিয়ান, হাবিবুর রহমানসহ অন্যদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পাগলা বাড়ির মিলন মিয়ার ছেলে সাদির ও তার বন্ধুদের সঙ্গে মোল্লা বাড়ির মস্তু মিয়ার ভাতিজা রাহাতের পাওনা টাকা নিয়ে রাত ৯টার দিকে কথা কাটাকাটি হয়। উভয় পরিবারের অভিভাবক ও স্থানীয়রা তখনকার মতো মিটমাট করে দেন। কিন্তু রাত ১০টার দিকে দু’পক্ষ রামদা, বল্লম, লাঠি আর ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষে অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে শতাধিক বাড়ি ও দোকানপাট।
এলাকার নূর মোহাম্মদ জানান, রাস্তার পাশে তাদের একটি মুদির দোকান আছে। সেটি রাতে বন্ধ করে যাবার পরই সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর করে প্রায় লাখ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে। এলাকার কাজী বাড়ির লেলিন কাজী জানান, সংঘর্ষে তাদের এলাকার দোকানপাটও ভাঙচুর করা হয়েছে।
মোল্লা বাড়ির মোশারফ মোল্লা জানান, তার ভাতিজা রাহাতকে পাগলা বাড়ির কিছু ছেলে ধরে নিতে চেয়েছিল। এ সময় মোশারফের ছোট ভাই মস্তু মোল্লা বাধা দিতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। এর পরই দু’পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। অন্যদিকে পাগলা বাড়ির মিলন মিয়া জানান, ছেলেদের ঝগড়ার কথা শুনে তিনি মোল্লাবাড়ির লোকদের নিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করেন। এসময় তাকে মস্তু মোল্লা অপমান করেন। এর পরও মোল্লা বাড়ির লোকদের মিমাংসার কথা বলার পরই তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাগলা বাড়িতে হামলা চালায়। এর পরই দুই পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুল করিম জানান, আহতদের মধ্যে চারজনকে সৈয়দ নজরুল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তারা এবং সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে কোন পক্ষই মামলা দেয়নি, কেউ আটকও নেই। মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ স ঘর ষ র এল ক র র পরই
এছাড়াও পড়ুন:
দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির পাঁচ কর্মী। তাদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য একই দলের অন্য নেতার অনুসারীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পায়েল (২৫)। তাদের বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারোবেকী গ্রামে। আহত সবাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের কর্মী-সমর্থক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারের একটি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিহাব উদ্দিনের ভাষ্য, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। কিছু আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ জন্য চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের ভাষ্য, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে আসার পথে হামলায় তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওই আসামিরাই বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোক।
তবে আলমগীর কবিরের দাবি, হামলায় তাঁর কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন না। এমন অভিযোগ সত্য নয়।
হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপি নেতা তানভীর হায়দার ও আলমগীর কবিরের লোকজনের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।