বরখাস্ত হচ্ছেন সেই প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা
Published: 2nd, February 2025 GMT
সংবিধান ও ভোটার তালিকা নিয়ে আইন পরিপন্থি বক্তব্য দেওয়ায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হচ্ছেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) সাহাব উদ্দিন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা সূত্রে জানা গেছে, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি ও নির্বাচন আইন লঙ্ঘনের কারণে বিভাগীয় মামলা করা হবে। এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দেন ইসি উপসচিব মাহবুব আলম শাহ।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) সাহাব উদ্দিন গত ২১ জানুয়ারি একটি স্কুল পরিদর্শনকালে এক বক্তব্যে বলেন, ‘কিছু শিক্ষক ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে সম্ভবত চলে গেছেন, তো এই কাজটা শিক্ষকরা এইভাবে করতে পারে না। শিক্ষিত বেকার যুবকদের এ কাজটি করার কথা। এর পরও আমাদের অনেক শিক্ষক আছেন ইন্টারেস্টেড হয়ে ইলেকশন অফিসে বা পরিসংখ্যান অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। ছুটি ছাড়া কেউ স্কুল ত্যাগ করতে পারেন না।’
বক্তব্যে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘একজন লোক শিক্ষকের বেতন নেবেন, আবার ওই দিকে নির্বাচন কমিশন থেকে বেতন নেবেন, এক সঙ্গে একই সময়ে দুইটা সুবিধা পাওয়ার ট্রেজারি রুলের ভাষায় কোনো বিধিবিধান নেই এবং এটা সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ।’
থানা শিক্ষা অফিসার (টিইও) ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের (এইউইও) নির্দেশ দিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘টিইও এবং এইউইও সাহেবরা এটা কঠোরভাবে দেখুন। যদি কোনো স্কুলে এ রকম পাওয়া যায়, তাহলে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা ইসির চিঠিতে বলা হয়, ‘সংবিধানের ১২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ বলা আছে, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হবে। ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ১৯ ধারায় বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি ভোটার তালিকা প্রণয়ন, পুনঃপরীক্ষণ, সংশোধন বা হালনাগাদকরণ কাজে কাউকে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেন, তাহলে তিনি অনধিক এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে।’
এ বিষয়ে ডিপিইও সাহাব উদ্দিনের বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।