নৌকার জাকিরের ডান হাত খবু বাহিনী বক্তাবলী আলীরটেকে ত্রাসে পরিণত
Published: 2nd, February 2025 GMT
কখনোই বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন না। বিগত দিনে নৌকার টিকেটে বনেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে পট পরিবর্তনের পরেও কমেনি নৌকার জাকিরের দাপট। বরং নৌকার জাকিরের ডান হাত খবু বাহিনী এখন বক্তাবলী আলীরটেকের ত্রাসে পরিণত হয়েছে। খবু বাহিনীর কাছ থেকে রেহাই মিলছেনা বিএনপি নেতাকর্মীদেরও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২২ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাকির হোসেন। নৌকার মাঝি হিসেবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে।
অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরে এবার নিজেকে বিএনপি সমর্থক হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছেন আলীরটেকে নৌকার মাঝি হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত জাকির হোসেন। বিএনপির কতিপয় শীর্ষ নেতাদের ম্যানেজের মাধ্যমে অনেক মামলা থেকেও রেহাই মিলেছে জাকিরের।
বেশীরভাগ ইউপিতে চেয়ারম্যান বদল হলেও আলীরটেকে এখনো বহাল জাকির। জেলা ও মহানগর বিএনপির কতিপয় নেতাদের শেল্টারে ওসমান পরিবারের অতি কাছের লোক ও ঘনিষ্ট সহচর নৌকার জাকিরের ডান হাত খবু এখন বক্তাবলী আলীরটেক পরগনার ত্রাসে পরিণত হয়েছে। জাকিরের পালিত সন্ত্রাসী যখন তখন যাকে খুশি কোপায়।
এর আগেও বহুবার এই কুখ্যাত সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বিএনপিরই অনেককেই হুমকি দিয়েছে। প্রাণের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনি। জাকিরের ক্লাবে খবুর রাত দিন সশস্ত্র আড্ডা বসে। ওই ক্লাব থেকেই এলাকা ব্যাপী মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্ম কান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এলাকার সবাই জানে, কিন্ত চেয়ারম্যান জাকিরের ক্ষমতার দাপটে সবাই ভয়ে মুখ বুঝে থাকে। জাকিরের ক্ষমতার উৎস ছিলো আওয়ামীলীগের আমলে শামীম ওসমানের পরিবার। সেই ক্ষমতা এখনো বিএনপির কিছু নেতার আস্কারায় ও ছত্রছায়ায় আজও বহাল থাকায় জাকিরের ছত্র ছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে খবু ও তার বাহিনী।
সম্প্রতি আলীরটেক ইউনিয়ন নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান জাকিরের ছোট ভাই মাদক ব্যাবসায়ী খবির উদ্দিন (খবু) রামনগরের বিসমিল্লাহ মার্কেটে চাদাবাজী করতে আসলে সেখানে বক্তাবলী ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডর বিএনপি'র সাধারল সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ বাধা প্রধান করলে তাকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে চাপাতি ও বগি দিয়ে আঘাত করে। রাসেল শারীরিক ভাবে মারাত্মক জখম হয়।
বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপি'র নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকার ও গডফাদার শামীম ওসমানের দোসর নৌকার চেয়ারম্যান জাকিরের পোষা ক্যাডার খবুর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। মাদক সম্রাট খবু গংদের শাস্তির জোর দাবী জানাচ্ছি।
স্থানীয়রা জানান, খবু বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়ন এলাকায় অবৈধ বালু ভরাট ও ২০-৩০টি ইটের ভাটায় চাঁদা নিয়ন্ত্রণ করে! কেউ চাঁদা না দিলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। গত মাসেও মোক্তারকান্দি গ্রামের এক ইট ভাটার মালিককে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র ও বগি নিয়ে ধাওয়া দেয় খবু বাহিনী।
খবু ও তার বাহিনী প্রকাশ্যে মদ সেবন করে ও স্থানীয়দের গালমন্দ করে। নৌকার জাকিরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও খবু বাহিনীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বক্তাবলী আলীরটেক এলাকাবাসী।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।