মানবাধিকার সুরক্ষায় বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান সংশোধনসহ ৯ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি)। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সুপারিশ মানবাধিকারকর্মীসহ দেশের ১৭ কোটি মানুষের দাবি। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার এই সুপারিশ কার্যকর না করলে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি পালন করা হবে।
সুপারিশে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে নিহত, নিখোঁজ (গুম) ও আহত মানবাধিকারকর্মীদের নামের তালিকা তৈরি এবং নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইন প্রণয়ন করে সাধারণ মানুষ যেন ন্যায়বিচার পেতে পারে, এমন কমিশন গঠন করতে হবে। দেশের প্রকৃত ও সিনিয়র মানবাধিকারকর্মীদের কমিশনের কমিটিগুলোয় সম্পৃক্ত করতে হবে। বিগত স্বৈরাচার সরকার এবং কামাল উদ্দিন বাহিনীর হাতে নির্যাতিত মানবাধিকারকর্মীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
আরও বলা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের তিনটি রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রয়েছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। স্থগিত নিবন্ধনগুলো পুনরায় চালুর লক্ষ্যে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ করতে হবে। স্বৈরাচার সরকারের দোসর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ফরমায়েশি বিচারকদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। যে কোনো মামলার বিচারকাজ ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রুয়া নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। এর আগে তাঁরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রুয়া অ্যাডহক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯ মে পুনর্মিলনী এবং ১০ মে রুয়ার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপিপন্থী সাবেক শিক্ষার্থীরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই পক্ষের নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলতে থাকে।
এদিকে গতকাল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে রুয়া নির্বাচন কমিশনের প্রধান কমিশনার পদত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এ পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে নোটিশ জারি করেন রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করছেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘সিলেকশন না ইলেকশন, ইলেকশন ইলেকশন’, ‘প্রশাসন জবাব দে, রুয়া কি তোর বাপের রে’, ‘রুয়া নিয়ে টালবাহানা, চলবে চলবে না’, ‘অ্যাডহক না নির্বাচন, নির্বাচন নির্বাচন’, ‘সিন্ডিকেট না রুয়া, রুয়া রুয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা-কর্মীদেরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। পরে জামায়াত ইসলামীর কয়েকজন নেতাও কর্মসূচিতে যোগ দেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার জন্য বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে। বিকেল ছয়টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ মে রুয়া নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ সেই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাসের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। যারা রুয়া নির্বাচন দিতে পারে না, তারা রাকসু নির্বাচন কীভাবে বাস্তবায়ন করবে? ১০ মের নির্বাচন সেই একই তারিখে হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’