বাউফলে স্ত্রীকে হত্যার পর গভীর রাতে থানায় গিয়ে স্বামীর আত্মসমর্পণ
Published: 1st, August 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে সালমা আক্তার (৩২) নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামী সরোয়ার হোসেনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার দিকে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন সরোয়ার। এ সময় তাঁর সঙ্গে চার বছরের শিশুসন্তান ছিল।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সালমা আক্তারের ভাই মো.
সালমা আক্তার বাউফল উপজেলার নুরাইনপুর নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বাংলা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বাবার বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ধাওয়া গ্রামে। সরোয়ার একই উপজেলার নদমূলা গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১২ বছর আগে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, চাকরির সুবাদে চার বছর আগে বাউফলে আসেন সালমা ও তাঁর স্বামী সরোয়ার। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তাঁরা উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন।
সরোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে গতকাল বিকেলে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সরোয়ার ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে সালমার ঘাড়ে কোপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে লাশ ঘরে রেখে দরজা-জানালা বন্ধ করে সন্তান নিয়ে পালিয়ে যান সরোয়ার। গতকাল গভীর রাতে সন্তানসহ বাউফল থানায় হাজির হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি। বিবেকের তাড়নায় তিনি আত্মসমর্পণ করতে হাজির হয়েছেন বলে এ সময় পুলিশকে জানান।
সরোয়ার হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় সালমা অন্য এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন, এ রকম কাবিননামা দেখতে পান তিনি। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সালমা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে কোপাতে চান। তখন সারোয়ার নিরুপায় হয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
বাউফল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, সরোয়ার থানায় এসে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সালমার মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটিকে তার মামার হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকার বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামি সরোয়ার হোসেনকে আগামীকাল শনিবার আদালতে পাঠানো হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র হত য র ব উফল
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলভীবাজারে পিবিআইর হাজতখানা থেকে আসামির লাশ উদ্ধার
মৌলভীবাজারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাজতখানার ভেতর থেকে মোকাদ্দুস (৩২) নামে আসামির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করেছে পিবিআই।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে মৌলভীবাজার জেলা শহরের টিভি হাসপাতাল সড়কে পিবিআইর হাজতখানা থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
মোকাদ্দুস কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি আলোচিত লিটন হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৯ আগস্ট কমলগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর পতনঊষার ইউনিয়নের কোনাগাঁও (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের ধানক্ষেত থেকে লিটন নামের এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে মোকাদ্দুস পলাতক ছিলেন। রবিবার রাত ৮টার দিকে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন মোকাদ্দুস। পরে তাকে লিটন হত্যার মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করে থানা পুলিশ।
পিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর খাওয়া-দাওয়া শেষে মোকাদ্দুসকে ৭-৮ জন আসামির সঙ্গে হাজতখানায় রাখা হয়। সোমবার ভোর ৬টার দিকে ডিউটি অফিসার গিয়ে দেখেন, মোকাদ্দুস নিজের লুঙ্গি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। পরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও মোকাদ্দুসের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
১১ সেপ্টেম্বর লিটনের বাবা সাত্তার মিয়া অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ মামলায় শামিম নামের আরেকজনকেও গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পিবিআইর পুলিশ সুপার মো. জাফর হুসাইন বলেছেন, লিটন হত্যা মামলার তদন্ত আমাদের হাতে। মোকাদ্দুস রবিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোমবার সকালে হাজতখানায় আত্মহত্যা করেন তিনি। বিষয়টি আমরা সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি।
ঢাকা/আজিজ/রফিক