এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওপর শুল্ক আরোপ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে কবে নাগাদ এ শুল্ক আরোপ করা হবে তা না জানালেও ‘খুব শিগগিরই’ এটি ঘটবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক খুব শিগগিরই কার্যকর হবে।”

ট্রাম্প বলেন, “কারণ তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সত্যিই আমাদের সুবিধা নিয়েছে। আমাদের ৩০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঘাটতি রয়েছে। তারা আমাদের গাড়ি নেয় না, কৃষি পণ্য নেয় না। তারা প্রায় কিছুই নেয় না। কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে সবকিছুই নিই- লাখ লাখ গাড়ি, প্রচুর পরিমাণে খাদ্য এবং কৃষি পণ্য।”

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে ফের বিমান দুর্ঘটনা

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ কানাডা-মেক্সিকোর, মামলা করবে চীন

তিনি আরো বলেন, “আমি বলব না যে এর কোনো সময়সীমা আছে। তবে এটি (শুল্ক আরোপ) খুব শিগগিরই হতে যাচ্ছে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদের কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের ওপর ইতিমধ্যে শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ ও চীনের পণ্যে বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে বলে স্থানীয় সময় শনিবার (১ জানুয়ারি) ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

আর এবার ইউরোপ নিয়েও একই বার্তা দিলেন তিনি। 

এদিকে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কড়া জবাব দিয়েছে ইইউ। তিন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে ইইউ মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। যেকোনো শুল্ক অর্থনীতির অগ্রগতিকে অযথা ব্যাহত করে। মুদ্রাস্ফীতিকে ডেকে আনে। ইউরোপের পণ্যের ওপর অযথা শুল্ক আরোপ করলে আমরাও কঠোর পদক্ষেপ করব। এখনও পর্যন্ত কোনো বাড়তি শুল্কের কথা আমরা শুনিনি।” 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির বিষয়ে আলোচনা করতে সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা একটি বৈঠকে বসবেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ল ক আর প ক র ইউর প র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ