নাসুম আহমেদ তাহলে পুরো রংপুর রাইডার্সের সাথেই খেলল! যে ভাবনাতে রংপুর আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড, জেমস ভিঞ্চকে উড়িয়ে এনে চমক দেখাতে চেয়েছিল, নাসুম সেই ভাবনার কাছাকাছিতেও নেই। হুট করেই বিদেশিরা এসে অকল্পনীয় কিছু করবেন তেমনটা বিশ্বাস করেন না খুলনা টাইগার্সের এই স্পিনার। তার ভাবনাটা বেশ সরল, ‘‘বিদেশিরা তো আমাদের সহযোগিতা করার জন্য। খেলতে হবে স্থানীয়দের।’’
মিরপুরে সেই কাজটাই করে দেখিয়েছেন নাসুম, মিরাজরা। দুই স্পিনার ৩টি করে উইকেট নিয়ে শুরুতেই রংপুরকে ধসিয়ে দিয়েছেন। তাতে ভিঞ্চ, রাসেল, ডেভিডদের নিয়েও রংপুর গুটিয়ে যায় মাত্র ৮৫ রানে। একপেশে এলিমিনেটর ম্যাচ ৯ উইকেটে জিতে ফাইনালের পথে আরেকটু এগিয়ে গেল মিরাজের দল।
৪ ওভারে ১ মেডেনে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে নাসুম এই জয়ের নায়ক। সংবাদ সম্মেলন কক্ষে নিজের আসনে বসতেই অতি সাধারণ নাসুমের কথা, ‘‘রিমান্ডে এসেছি।’’ গণমাধ্যম সামলনো তার কাছে ‘‘রিমান্ড’’ মনে হলেও রাসেল, ডেভিডদের বল করার কাজটা বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই করেছেন, ‘‘এই উইকেটে আমার বিদেশিদের বল করতে ভালোই লাগে (হাসি)। যে তিন জন বিদেশি খেলবে তা তো আগে জানতাম না। শুনছিলাম আসবে। সেভাবে পরিকল্পনাও করতে পারিনি।’’
আরো পড়ুন:
ধাক্কা সামলে শামীম ঝড়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ল চিটাগং
২৪ ঘণ্টায় দুবাই-ঢাকায় রাসেলের দুই ম্যাচ, আশরাফুল বললেন, ‘আদর্শ নয়’
তবে উইকেট ৮৫ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার মতোও ছিল না বলে মত নাসুমের, ‘‘১৮০ রানের উইকেট ছিল। আমার কাছে মনে হয় প্রথম রান আউটে (সৌম্য সরকার) তারা একটু ব্যাকফুটে চলে গেছে।’’
প্রথম কোয়ালিফায়ারের ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংসের ম্যাচের পরাজিত দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ খেলবে খুলনা। প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা চাইছে কাকে? নাসুমের সহজ কথা, ‘‘যেই আসুক টি-টোয়েন্টিতে সবাই সমান।’’ নিজেদের দলের শক্তি যে তাদের একতা সেটা বলতে ভুল করলেন না নাসুম, ‘‘আমাদের বেঞ্চের সবাই বেশ সামর্থ্যবান। কম্বিনেশনের জন্য খেলতে পারছে না। টিম বন্ডিং খুব ভালো। খেলি না খেলি সবাই এক আছি।’’
নতুন বলে নাসুম শুরুতে ২ ওভার করেন। তার করা প্রথম ওভারটিই ছিল মেডেন। সঙ্গে নেন ভিঞ্চের উইকেট। পরের ওভারে ফিরে আউট করেন সাইফ হাসানকে। নবম ওভারে নিজের শেষ ওভার করতে এসে পেয়ে যান টিম ডেভিডের উইকেট। শুরুতে টানা বোলিংয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাসুম বলেছেন, ‘‘টানা বোলিং করানোর একটাই কারণ তাদের ডানহাতি ব্যাটসম্যান বেশি ছিল। সেখানে আমার বল কার্যকরী ছিল। তাই মিরাজ টানা করিয়ে গিয়েছে।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।