ট্রাক-লরি শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর প্রত্যাহার
Published: 5th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে নিয়োজিত আনসার ও প্রহরীদের সঙ্গে মারামারির জেরে নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের করা সড়ক অবরোধ প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের আশ্বাসে আজ বুধবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়েন। এরপর সড়কটি দিয়ে পুনরায় পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে গতকাল রাত ১০টা থেকে সড়কটি অবরোধ করে রাখেন ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকেরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ডিসি পার্কের দায়িত্বে থাকা আনসার ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডিসি পার্কে ভাঙচুর চালান চালক-শ্রমিকেরা। সেখানে রাত প্রায় ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলতে থাকে।
যা ঘটেছিল রাতেপ্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাত আটটার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর একটি লরি ডিসি পার্কের পার্কিং এলাকায় ছিল। এ নিয়ে পার্কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে চালকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তারক্ষীরা লরিচালককে ধরে নিয়ে মারধর করেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেখে দেন। ওই চালক বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পাশাপাশি অন্য চালকদেরও বিষয়টি জানান তিনি।
পার্কের নিরাপত্তা প্রহরীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর পার্কের ভেতরে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন মূল ফটক এলাকায় এসে লরির চালকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। চালককে বুঝিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে চলে যেতে বলেন। ততক্ষণে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন চালক এসে পার্ক এলাকায় ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় পার্কের ভেতরে থাকা দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। দর্শনার্থীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। পার্কের ভেতরে থাকা দোকানদারেরাও দোকান ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রথম আলোকে বলেন, সড়কে দর্শনার্থীদের একটি গাড়ি ও অন্য একটি গাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে চালকেরা পার্কে ভাঙচুর করেছেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
ভাঙচুর হওয়া জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন ডিসি পার্কের কর্মীরা। আজ সকালে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে যাওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হাতিয়া ও রামগতি উপজেলার মাঝামাঝি এই সেতুর অবস্থান। আর ধসে পড়া সংযোগ সড়কটি পড়েছে রামগতির তেগাছিয়া বাজারে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে প্রবল জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ে। এতে স্থানীয় স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ দুই উপজেলার বাসিন্দারা যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুর পশ্চিম পাশের সংযোগ সড়কের একাংশের মাটি সরে ধসে পড়েছে। বিষয়টি রামগতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানানো হয়েছে। তবে বিকেল নাগাদ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ধসের কারণে সড়কটি দিয়ে যানবাহন, এমনকি মানুষজনের চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত সেতু দিয়ে উভয় উপজেলার বাসিন্দারা তেগাছিয়া বাজারে যাতায়াত করেন। তেগাছিয়া বাজারের বড় অংশটি হাতিয়ার মধ্যে। আরেক অংশ রামগতি সীমানার ভেতরে। এ ছাড়া স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়ক ও সেতু।
স্থানীয় টাংকির বাজারের ঘাটে আসা ইলিশ লক্ষ্মীপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় এই সড়ক দিয়ে। তাই সেতুর সড়ক বিধ্বস্ত হওয়ায় দুটি উপজেলার মাছ ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত সংযোগ সড়ক মেরামত না করলে মূল সেতুই ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা ওই এলাকার বাসিন্দাদের।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাতিয়া-রামগতি উপজেলা সড়কের তেগাছিয়া বাজারের খালের ওপর নির্মিত ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির সংযোগ সড়কের কিছু অংশ জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে বলে শুনেছেন। কিন্তু পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে দ্রুত যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন।