চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ডিসি পার্কে নিয়োজিত আনসার ও প্রহরীদের সঙ্গে মারামারির জেরে নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের করা সড়ক অবরোধ প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের আশ্বাসে আজ বুধবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়েন। এরপর সড়কটি দিয়ে পুনরায় পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু হয়। এর আগে গতকাল রাত ১০টা থেকে সড়কটি অবরোধ করে রাখেন ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকেরা।

গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ডিসি পার্কের দায়িত্বে থাকা আনসার ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডিসি পার্কে ভাঙচুর চালান চালক-শ্রমিকেরা। সেখানে রাত প্রায় ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ট্রাক-লরির চালক ও শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলতে থাকে।

যা ঘটেছিল রাতে

প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রাত আটটার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর একটি লরি ডিসি পার্কের পার্কিং এলাকায় ছিল। এ নিয়ে পার্কের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে চালকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তারক্ষীরা লরিচালককে ধরে নিয়ে মারধর করেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেখে দেন। ওই চালক বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পাশাপাশি অন্য চালকদেরও বিষয়টি জানান তিনি।

পার্কের নিরাপত্তা প্রহরীদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর পার্কের ভেতরে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন মূল ফটক এলাকায় এসে লরির চালকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। চালককে বুঝিয়ে গাড়িতে তুলে দিয়ে চলে যেতে বলেন। ততক্ষণে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন চালক এসে পার্ক এলাকায় ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় পার্কের ভেতরে থাকা দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। দর্শনার্থীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। পার্কের ভেতরে থাকা দোকানদারেরাও দোকান ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রথম আলোকে বলেন, সড়কে দর্শনার্থীদের একটি গাড়ি ও অন্য একটি গাড়ির মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে চালকেরা পার্কে ভাঙচুর করেছেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

ভাঙচুর হওয়া জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন ডিসি পার্কের কর্মীরা। আজ সকালে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ