Samakal:
2025-07-31@17:03:42 GMT

ব্যয়ের বোঝায় অনাগ্রহী গ্রাহক

Published: 6th, February 2025 GMT

ব্যয়ের বোঝায় অনাগ্রহী গ্রাহক

চট্টগ্রামে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগগুলো পর্যায়ক্রমে প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। মূলত গ্যাসের অপচয় ও চুরি বন্ধে প্রিপেইড মিটারগুলো বসানো হচ্ছে। কিন্তু অতিরিক্ত খরচের ভয়ে গ্রাহকদের একটি অংশ এই প্রিপেইড মিটার বসাতে আগ্রহী নন। 

কেজিডিসিএল কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনামূল্যে মিটার দেওয়া হলেও তিন কারণে প্রিপেইড মিটারে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেক গ্রাহক। প্রিপেইড মিটার বসাতে গেলে বাসাবাড়ির বাইরে থাকা রাইজার থেকে প্রতি চুলায় সংযোগ নিতে পাইপ-ফিটিংসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামে গ্রাহককে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আবার প্রিপেইড মিটার লাগালে সিলিং করা গ্যাসের চেয়ে বেশি ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া এক চুলার গ্যাস কয়েক পরিবারে ব্যবহার করার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ভয় এবং যখন-তখন গ্যাস ফুরালে প্রিপেইড কার্ড সংগ্রহ ও ইনস্টল করাকে বাড়তি ঝামেলা বলে মনে করছেন তারা।

কেজিডিসিএলের একটি প্রকল্পের আওতায় এখন নগরী ও জেলায় এক লাখ প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ চলছে। ২০২১ সালের ১৮ মে আবাসিক সংযোগে এসব মিটার স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে দুই বছরের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মিটার বসানো হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার। অন্য গ্রাহকরা মিটার বসাতে গড়িমসি করছেন। মিটার নিয়ে ফিরে আসছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ জন্য তাদের চিঠি দিয়ে, মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা দিয়ে মিটার বসানোর কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত হার্ডলাইনে গিয়ে মিটার না বসালে সংযোগ বিচ্ছিন্নের মতো সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহকারী এই সংস্থা।

নগরীর বাকলিয়া এলাকার এক ভবন মালিক বলেন, আমার ছয় তলা ভবনে ১২ পরিবার ভাড়াটিয়া রয়েছে। ফলে আমাকে ১২টি প্রিপেইড মিটার নিতে হবে। এতে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু ভাড়াটিয়া থেকে তো আমি সেই টাকা নিতে পারছি না। এ জন্য প্রিপেইড মিটার নিতে চাইছি না।

‘ইন্সটলেশন অব প্রিপেইড গ্যাস মিটার ফর কেজিডিসিএল’ প্রকল্পের পরিচালক ও কেজিডিসিএলের উপব্যবস্থাপক মো.

নাহিদ আলম সমকালকে বলেন, একটি চুলার জন্য মাসে ৮০ ঘনমিটার গ্যাস বরাদ্দ থাকে। যার দাম ১ হাজার ৮০ টাকা। অনেক এলাকায়, বিশেষ করে গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানা অধ্যুষিত এলাকা ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ভবন মালিক কয়েকটি পরিবারের জন্য হয়তো দেখা গেল একটি চুলা রেখেছেন। সেই চুলা সারাদিন জ্বলতে থাকে। আবার অনেক বড় পরিবার রয়েছে, যাদের বেশি গ্যাসের প্রয়োজন হয়। প্রিপেইড মিটার হলে তাদের সমস্যা। এ কারণে অনেকেই অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। জুনের মধ্যে যেহেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে। তাই এ সময়ের মধ্যে প্রিপেইড মিটার লাগানো না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।

কেজিডিসিএলের উপমহাব্যবস্থাপক (ভিজিল্যান্স বিভাগ) প্রকৌশলী সৈয়দ আবু নসর মো. সালেহ বলেন, একটি ভবনে বেশ কিছু গ্যাসের সংযোগ থাকে। এসব সংযোগকে প্রিপেইড মিটারের আওতায় নিয়ে আসতে হলে সেই ভবন মালিককে কিছু অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। কিন্তু সুবিধা পাচ্ছেন ভাড়াটিয়ারা। এ কারণে ভবন মালিকরা বাড়তি খরচ এড়াতে প্রিপেইড মিটারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

কেজিডিসিএলের আওতায় সংযোগ রয়েছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি। এর মধ্যে আবাসিক সংযোগ রয়েছে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১টি। অবশিষ্ট সংযোগগুলো শিল্প-বাণিজ্যিকসহ অন্য খাতের। এর মধ্যে ‘ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রকল্পে’র মাধ্যমে প্রথম দফায় ৬০ হাজার আবাসিক গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনে কেজিডিসিএল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয় সংস্থাটি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক জ ড স এল র প রকল প র ভবন ম ল ক র আওত য় গ র হক পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’

অন্তবর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “বাংলাদেশ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সবাইকে ধৈর্য ধরে বিচার প্রক্রিয়া, সংস্কার এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সারাদেশ এখন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার অপেক্ষায় রয়েছে।”

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাহাঙ্গীরনগর বিবিদ্যালয়ে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, অদম্য ২৪ উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্মিত জুলাইয়ের ভিডিও ও ফটো ডকুমেন্টারি উপভোগ করেন।

আরো পড়ুন:

জবির পরিত্যক্ত ডাস্টবিনগুলো সংস্কার করল ছাত্রদল

রাকসু থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে যারা

আদিলুর রহমান খান বলেন, “১ বছর আগে বাংলাদেশে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেই ঐক্যই পারে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যেতে। বিচার প্রশ্নে বলতে চাই কোনো অবস্থাতেই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সরকার বিচারের ক্ষেত্রে দুর্বলতা স্কোপ রাখবে না। খুব দ্রুতই বেশ কয়েকটি বিচারের কাজ দৃশ্যমান হবে।”

তিনি আরো বলেন, “তরুণ ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি এবং দেশকে বাঁচানোর জন্য জীবন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।” এছাড়া স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য-২৪’ বিভাজন ভুলে একাত্ম হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন।

সমাপনী বক্তব্যে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, “সংঘবদ্ধ আন্দোলনে ৫ আগস্ট আমরা বিজয় অর্জন করেছি। এর মানে এই নয় যে, অন্য যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে আর স্বর আপনারা শুনবেন না। আপনারা দেখবেন, জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা সচেতন এবং কথা বলার ব্যাপারে উন্মুক্ত।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আবার স্মরণ করিয়ে দিলাম, আমরা যদি বাংলাদেশে কোনো অশান্তি দেখি, বৈষম্য দেখি, পরাজয়ের কালো মেঘ দেখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য সংগ্রামীরা আবারো তাদের সেই কার্যক্রম শুরু করবে। গোটা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে, আবার বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।

অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপ -উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব, প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলমসহ জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য দেন।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ