চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে হঠাৎ অবসরে স্টয়নিস
Published: 6th, February 2025 GMT
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হতে দুই সপ্তাহও বাকি নেই। এর আগে অস্ট্রেলিয়াকে যেন বড়সড় এক ধাক্কাই দিলেন মার্কাস স্টয়নিস। ওয়ানডে থেকে হঠাৎ অবসরের ঘোষণা দিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার।
স্টয়নিস রেখেই গত ১৩ জানুয়ারি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণা করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি হিসেবে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগামী সপ্তাহে দুটি ওয়ানডে খেলবে অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কা সফরের স্কোয়াডেও রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু আজ সকালে বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, টি-টোয়েন্টিতে মনোযোগী হতে ওয়ানডে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্টয়নিস।
অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে স্টয়নিস বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলা আমার জন্য একটি অবিশ্বাস্য যাত্রা এবং আমি সবুজ ও সোনালির সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তের জন্য কৃতজ্ঞ। শীর্ষ পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা এমন একটি বিষয়, যা আমি সব সময় লালন করব।’
স্টয়নিস আরও বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ ছিল না। কিন্তু আমার মনে হয়েছে ওয়ানডে থেকে সরে এসে ক্যারিয়ারের পরবর্তী অধ্যায়ে পুরোপুরি মনোযোগী হওয়ার এটাই সঠিক সময়। রনের (অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের ডাকনাম) সঙ্গে আমার সম্পর্কটা দারুণ। তিনি আমার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানানোয় তারিফ করতেই হয়। আমি সতীর্থদের জন্য উল্লাস করব।’
২০১৫ সালে ওয়ানডে অভিষেক স্টয়নিসের। ৭১ ম্যাচের শেষটি খেলেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে, গত বছরের নভেম্বরে জন্মশহর পার্থে। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ ম্যাচে লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করা স্টয়নিস ৯৩.
২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা স্টয়নিসকে নিয়ে কোচ ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘স্টয়নিস এক দশক ধরে আমাদের ওয়ানডে দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সে শুধু একজন অমূল্য খেলোয়াড়ই নয়, ব্যক্তি হিসেবেও অসাধারণ। সে একজন সহজাত নেতা, একজন ব্যতিক্রমী জনপ্রিয় খেলোয়াড় এবং বড় মাপের মানুষ। ওয়ানডে ক্যারিয়ার এবং তার সব অর্জনের জন্য তাকে অভিনন্দন জানানো উচিত।’
ওয়ানডে থেকে স্টয়নিসের আকস্মিক অবসর জর্জ বেইলির নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচক কমিটির কাজ আরও বাড়িয়ে দিল। পিঠের চোটে পড়ায় ৩১ জানুয়ারি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে ছিটকে পড়েন আরেক অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ। চোটের কারণে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও অভিজ্ঞ পেসার জশ হ্যাজলউডেরও খেলা নিয়ে আছে সংশয়। শ্রীলঙ্কা সফর ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য নির্বাচকদের তাই চারজন পরিবর্তিত খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করতে হবে।
কামিন্স, মার্শ ও হ্যাজলউডের জায়গায় স্পেনসার জনসন, জেইক ফ্রেজার-ম্যাগার্ক ও শন অ্যাবট দলে ঢুকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। আর স্টয়নিস অবসর নেওয়ায় প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেতে পারেন মিচেল ওয়েন। ২২ বছর বয়সী ওয়েন সম্প্রতি বিগ ব্যাশ ফাইনালে বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করে আলোচনায় এসেছেন। অস্ট্রেলিয়ার সফলতম অধিনায়ক রিকি পন্টিংও ওয়েনকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য বিবেচনা করতে বলেছেন।
১৯ ফেব্রুয়ারি করাচিতে স্বাগতিক পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ম্যাচ ২২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন লাহোরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।