Samakal:
2025-06-16@04:18:17 GMT

নজর কাড়ছে নান্দনিক স্টল

Published: 7th, February 2025 GMT

নজর কাড়ছে নান্দনিক স্টল

কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ ও হুমায়ূন আহমেদ একটি টেবিলে বসে আছেন। এ রকম দুটি বিশাল ক্যানভাস একত্র করে রওশন হাবীব ও শান্ত আহমেদের আঁকা পেইন্টিং ঝুলছে দাঁড়িকমা প্রকাশনীর স্টলে। এ ছাড়া স্টলের ব্যানার ও দেয়ালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাল-হলুদ রঙে আঁকা জুলাই আন্দোলনের স্লোগান।

এবারের বইমেলায় এমন নান্দনিক স্টল দেখা গেছে বেশ কয়েকটি। পাঠকরা ঘুরে ঘুরে পছন্দসই বই খুঁজছেন, আর নান্দনিক স্টল পেলে দাঁড়িয়ে দেখছেন। অনেকে স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলছেন। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছেন।

এমন এক নান্দনিক স্টল তৈরি করেছে বাতিঘর। এখানে পাঠকের ভিড় দেখা গেছে। বই কিনছে কেউ, কেউ স্টলের বাইরে ও ভেতরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে। বিক্রয়কর্মীরা জানান, বাতিঘরের মূল ভবনের মতো করে বানানো এই স্টলে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে থাকে সবসময়। বিশেষত সন্ধ্যার দিকে সব আলো জ্বলে ওঠার পর স্টলটির সৌন্দর্য বাড়ে। এজন্য বইয়ের পাশাপাশি ছবি তুলতে আগ্রহী হন পাঠক।

অন্যদিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্টল ভ্রাম্যমাণ বইয়ের গাড়ির আদলে তৈরি। কেন্দ্রের মার্কেটিং অফিসার সঞ্জয় পাণ্ডে জানান, নকশাবিদ সঞ্জীব কুমার সাহা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সম্পর্কে তাঁর চিন্তার বহিঃপ্রকাশ থেকে বেশ কয়েকটি নকশা তৈরি করেন। এখান থেকে একটি নির্বাচন করেছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ। কেননা, ভ্রাম্যমাণ বইয়ের গাড়ির পাশাপাশি সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ বইমেলার কার্যক্রম চলছে।

সম্পূর্ণ বাঁশ দিয়ে তৈরি একটি স্টল আকাশ প্রকাশনীর। বাঙালিয়ানার লোকজ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস থেকে এবারের স্টল তৈরি করেছেন বলে জানান মালিক আলমগীর সিকদার লোটন।

মেলা ঘুরে দেখা যায় অয়ন প্রকাশনী তাদের বইভিত্তিক বিভিন্ন কাটআউট ছোট ছোট করে তৈরি করে স্টলের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়েছে। আবার পুঁথিনিলয়ের স্টলের চারটি পিলারের জায়গায় রয়েছে বইয়ের কাটআউট। এ ছাড়া মাথার ওপরে বিশাল এক বইয়ের আকৃতির কাটআউট। যেন সবাইকে জ্ঞানের ছায়াতলে নিয়ে আসার জন্য বদ্ধপরিকর।

এ রকম আরও বিভিন্ন ধরনের চিন্তার বহিঃপ্রকাশসমৃদ্ধ স্টল দেখা গেছে বইমেলায়। কেউ তাদের লোগো তুলে এনেছে স্টলে, আবার কেউ বইয়ের প্রচ্ছদের ছবি। তবে বড় স্টলগুলোতে বই দেখা ও কেনার পাশাপাশি পাঠকদের ছবি তুলতে দেখা গেছে।

জুলাই মঞ্চ

গতকাল থেকে মেলার ষষ্ঠ দিনে শুরু হয় ‘জুলাইয়ের গল্প’ শীর্ষক একটি নতুন কার্যক্রম। জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪-এর নিহতদের স্মরণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান। গতকাল অতিথি হিসেবে কথা বলেন নিহত আনাসের বাবা ও মা। সঞ্চালনায় ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল সম্পাদক হাসান ইমাম।

নতুন বই

মেলায় গতকাল নতুন বই আসে ৮০টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নবান্ন প্রকাশনীর সফিকুল ইসলামের গল্পগ্রন্থ দৈত্য পাহাড়ের পিশাচ, কথাপ্রকাশের মফিজুর রহমান রুননুর সংস্কৃতিবিষয়ক গ্রন্থ বাঙালির ধর্ম সংস্কৃতি ও জাতীয়তার সংকট, শিরনী পাবলিকেশন্সের ড.

মুহাম্মাদ সিদ্দিকের ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ স্পেন-পর্তুগালে মুসলিম অবদান ও তার প্রতিদান, অন্যপ্রকাশের মালেক মুস্তাকিমের কাব্যগ্রন্থ আধেক জীবন আধেক ধুলো, ঐকতান প্রকাশনীর আ হ ম আসাদুজ্জামানের কাব্যগ্রন্থ সেই তুমি ফিরে এলে।

মেলামঞ্চ

গতকাল মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: মাহবুবুল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। সৈয়দ আজিজুল হকের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারিক মনজুর। আলোচনায় অংশ নেন মাহবুব বোরহান ও মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

প্রাবন্ধিক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিজ্ঞানী। বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রণয়ন এবং বাংলা বানান সংস্কারে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন।  ভাষা ও ব্যাকরণের অনেক জটিল বিষয়কে সরল ও পরিচ্ছন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে নিবেদিত ছিলেন।

লেখক বলছি মঞ্চে আলোচনা করেন কবি টোকন ঠাকুর ও জাকির আবু জাফর। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি সাখাওয়াত টিপু ও জব্বার আল নাঈম। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আজগর আলীম, সৈয়দ আশিকুর রহমান প্রমুখ।

সময় পরিবর্তন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কারণে ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি বইমেলা বেলা ১১টার পরিবর্তে শুরু হবে দুপুর ২টায়। এই দুই দিন মেলায় থাকবে না পূর্বঘোষিত শিশুপ্রহর।

আজ প্রথম শিশুপ্রহর

আজ বইমেলা শুরু হবে বেলা ১১টায় ও চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এটি উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার। এ ছাড়া সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল কর ছ ন বইম ল বইয় র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে

সরকারের ওপর তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝারি মাত্রায় আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানখাত সম্পর্কিত বিশ্লেষণে করে দেখা গেছে- সম্মিলিতভাবে এসওই খাত দেশের সরকারের জন্য মাঝারি মাত্রার ফিসকাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এসওই এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক অবস্থার ওপর তিনভাবে প্রভাব ফেলে।

প্রথমত, যদি এসওই-এর ঋণের জন্য গ্যারান্টি দেয় এবং তারা সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকারের তা পুনর্ভরণসহ আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। এটি ঘটতে পারে যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে যায় বা তাদের প্রকল্পগুলো আশানুরুপ উৎপাদশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়।

দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি না হলেও যদি তারা ক্রমাগত লোকসান করে, তাহলে তাদের সচল রাখতে সরকারকে বাড়তি পুঁজি যোগান দিতে হতে পারে।

তৃতীয়ত, যদি এসব প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত মুনাফা না করতে পারে তাহলে সেটিও সরকারের রাজস্ব আয়ে চাপ বাড়াতে পারে। সার্বিকভাবে দেখা গেছে যে, এসওই সমূহের সম্পদকে সুচিন্তিতভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন, যাতে সর্ব্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা যায়।

এ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে আট ধরণের নীতি কৌশল গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। এই নীতি কৌশলের মধ্যে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের জনগণকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে সরকার ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্য পণ্য বিক্রি) টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের মতো কর্মসূচি চালু করেছে। সরকার ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরির মাধ্যমে উপকারভোগীর সহায়তাপ্রাপ্তি ব্যবস্থা পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারে।

বিদ্যুৎখাতের পরিকল্পনা বিষয়ে নীতি কৌশলে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎখাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ২০২৬ -২০২৭ অর্থবছরে তিন বছর মেয়াদে একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে, যার মাধ্যমে  বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে ভর্তুকি কমিয়ে এখাতকে আর্থিকভাবে টেকসই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সার ব্যবস্থাপনা পুনঃমূল্যায়ন করছে এবং কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের প্রাপ্যতা ও সরবরাহে যেনন কোনো বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করছে।

ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সরকার অর্থ বিভাগের অধীনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং বন্ড/বিল বাজার উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

নীতি কৌশলের বিষয়ে আরও রয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদারে সরকার আর্থিক লেনদেনের অটোমেশন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।

রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ‘মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল(এমএলটিআরএস,২০২৫)’ ও ‘ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার নীতিমালা’ গ্রহণ করা হয়েছে।  এসব কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ ও কার্যকর করার মাধ্যমে সরকার ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য দক্ষ এসেট ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে বিভিন্ন ঝুঁকি অর্থায়নের উত্তম বিকল্পের মূল্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি সামগ্রিক দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং সাড়া প্রদান কৌশল তৈরি করা যেতে পারে বলে অর্থমন্ত্রণালয়ের নীতি বিবৃতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ