সাংবাদিকদের ওপর হামলা: ৪ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কোনো আসামি
Published: 7th, February 2025 GMT
শরীয়তপুরের সমকালসহ চার সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ৪ দিন পার হলেও কোনো হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় সচেতন মহলে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলার সচেতন মহল ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, সদর হাসপাতালের সংবাদ প্রকাশের জেরে গত সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে হামলার শিকার হন দৈনিক সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন। হামলাকারীরা হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সুজনের ওপর হামলা করেন। এসময় তাকে বাঁচাতে এলে নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশন ও জাগো নিউজের প্রতিনিধি বিধান মজুমদার অনি, দেশ টিভির সাইফুল ইসলাম আকাশ ও বাংলা টিভির নয়ন দাসের ওপর করে চালায় তারা। পরে সুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, হামলার ঘটনায় সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সুজন বাদী হয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী নুরুজ্জামান শেখ (৪৫), শামিম শেখ (৪০), ইব্রাহিম মোল্লাসহ (৪০) ৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পালং মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পরদিন মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও বুধবার নড়িয়া উপজেলার সামনে মানববন্ধন করেন জেলার সাংবাদিক সংগঠনের নেতা ও কর্মরত সাংবাদিকরা। হামলার ৪ দিন পার হলেও অভিযুক্তরা এখনো রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশ কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো হামলাকারী গ্রেপ্তার হয়নি। এতে অনেকটাই আশঙ্কায় রয়েছে হামলার শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা।
ভুক্তভোগী সমকালের সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বলেন, মামলার পর থেকে অভিযুক্তরা কৌশলে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলছে ও বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমি আমার পরিবার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। অপরাধীরা গ্রেপ্তার না হলে তারা যেকোনো মুহূর্তে আমার ক্ষতি করতে পারে। পুলিশের কাছে একটাই দাবি, দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হোক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, দিনের আলোতে হাতুড়ি দিয়ে যেভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে, তা মব ক্রিয়েটের চেষ্টা। হয়ত হামলায় ওই সাংবাদিক মারাও যেতে পারতেন। আমরা এ ধরনের মবকে সমর্থন করি না। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের প্রতি নিন্দা। আমরা চাই আসামিদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হোক।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলার ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন সদস্য সচিব নুরুল আমিন রবিন বলেন, সাংবাদিকদের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। যার ভিডিও ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বাংলাদেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারছে না। অদৃশ্য কোনো কারণে তাদের গাফিলতি আছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের দাবি, আসামিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে নয়তো আমরা জেলার সাংবাদিকরা বড় ধরনের কর্মসূচি দেবো।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, শরীয়তপুরের সাংবাদিকদের ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমরা উদ্বেগ ও দুঃখপ্রকাশ করছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে হামলার প্রকৃত কারণ ও ঘটনার বিবরণ জানতে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।
জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা যথেষ্ট চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামির গা ঢাকা দেওয়ায় তাদের ধরতে একটু সময় লাগছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই। আসামিরা পলাতক এবং তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় ম্যানুয়ালি চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাদের ধরতে ইতোমধ্যে ২টি অভিযান চালানো হয়েছে তবে তাদের পাওয়া যায়নি। আশা করছি দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ন বল ন ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার
শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সাজেদুল করিম বলেন, “গুচ্ছ প্রক্রিয়া না থেকে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষকরা আজ উপাচার্যের কাছে একটা স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকতে চায় না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এককভাবে ভর্তি পরীক্ষার নেওয়ার জন্য সামনের দিকে কাজ এগোচ্ছি। অতিদ্রুত ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি নির্ধারণ করে প্রকাশ করা হবে।”
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শাবিপ্রবি গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। এবারো একইভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে চিঠি পেলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী