মাধবপুরে কৃতি শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি দিল সায়হাম গ্রুপ
Published: 8th, February 2025 GMT
হবিগঞ্জের মাধবপুরে দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান সায়হাম গ্রুপের আয়োজনে মেধাবৃত্তি প্রদান ও কৃতি সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ সঈদ উদ্দিন ডিগ্রি কলেজে এই মেধাবৃত্তি প্রদান ও কৃতি সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
সংবর্ধনা সভায় ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া ৫৭৭ জন কৃতি ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি নগদ ৫ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এসএম ফয়সল মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা কমিটির সভাপতি এস এম শাহজাহান। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন এস এম ফয়সল মেধাবৃত্তির প্রধান পৃষ্টপোষক সৈয়দ মো.
অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্টপোষক সৈয়দ মো. ফয়সল বলেন, ‘আমরা মেধার লালন করতে চাই। মেধাবীরা দেশের সম্পদ। তারা যাতে সুন্দর পরিবেশে লেখাপড়া করতে পারে আমরা এ সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সায়হাম গ্রুপের পক্ষ থেকে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সামাজিক কাজ করে মানুষের কল্যাণ করে যেতে চাই।’
সৈয়দ ঈশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘মাধবপুরের মাটির সঙ্গে আমাদের ৮০ বছরের সম্পর্ক। এখানকার ছেলেমেয়ে যাতে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষা পায় তার জন্য আমরা তাদের পাশে থাকব সবসময়। তবে সবার আগে শিক্ষার্থীদেরকে দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে। সুন্দর আলোকিত মানুষ হতে হবে।’
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদেরকে ১৯৫২, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালকে চেতনায় জাগ্রত রাখতে হবে। সায়হাম গ্রুপ মাধবপুরে যে আলোকবর্তিকা সৃষ্টি করেছে সে আলো আজীবন জ্বলজ্বল করে জলবে।’ তিনি বলেন, ‘সায়হাম গ্রুপের কর্ণধার যারা আছেন তারা বিদেশে টাকা পাচার করেনি, বরং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।
পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।
অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।
একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।