মুক্তি পেয়েছে শেখ সাদীর নতুন গান ‘কুফা’। এরও আগে মুক্তি পেয়েছে এই তরুণ গায়কের ‘একশোতে ১০০’। ইউটিউবের পাশাপাশি টিকটক ও রিলসে এই গান সাড়া ফেলেছে। তৈরি আছে আরও অর্ধশত গান। ধারাবাহিকভাবে এসব প্রকাশ করা হবে। তরুণ গায়কের কাছ থেকে তাঁর গানের জীবনের গল্প শুনলেন মনজুর কাদের

ছয় বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল ‘ললনা’। মাত্র ১০ হাজার টাকায় তৈরি গানটি শেখ সাদীর জীবন বদলে দেয়। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত দুই ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে এই গানের ভিউ সাড়ে ১৫ কোটির বেশি। গত কয়েক বছরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ৫০টির বেশি গান প্রকাশ করেছেন এই তরুণ। এর মধ্যে ১০টির ভিউ কোটি পার করেছে। সম্প্রতি প্রকাশ করলেন ‘কুফা’। গানটি প্রকাশের পর ফেসবুক রিলস ও টিকটকে আলোচনা হচ্ছে। গানটি নিয়ে মজার গল্প আছে।

শেখ সাদীর মুখেই সেটা শোনা যাক, ‘“কুফা” গানটি আমি এবং আমার ছোট দুই ভাই মিলে বানিয়েছি। তিনজনই আমরা গত বছরের বন্যায় তহবিল সংগ্রহে ঢাকার রবীন্দ্রসরোবরে কনসার্টে গাইতে যাই। সেদিন অনেক বেশি দর্শক ছিল, শেষে বিশৃঙ্খলার কারণে গাইতে পারিনি। পরদিন ঢাকায় আরেক কনসার্টে গাওয়ার কথা ছিল। সবার শেষে ছিল আমার পালা। শেষের দিকে পুলিশ এসে জানায় কনসার্টে গাইতে পারব না। ঠিক পরদিনই গুলশানে ভয়ানক জ্যামে আটকা পড়ি আমরা তিনজন। তখন বলাবলি করি, তিনজন যেখানেই যাচ্ছি, সমস্যা হচ্ছে। কেন? একজন বলল, কুফা লাগছে। তখনই বললাম, কুফা নিয়ে একটা গান বানাই। ওই মুহূর্তে র‍্যানডম বিটে জ্যামের মধ্যে গানটা বানাই। প্রথমে ভাবছিলাম, এমনিতে ছেড়ে দেব। পরে ভাবলাম, গানটা যেহেতু মজার, একটা মজার ভিডিও বানিয়ে ছাড়ি। এভাবেই গানটার জন্ম।’

শেখ সাদী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ