চট্টগ্রামের ভূমিপুত্র হয়েও এখন তিনি ‘বরিশাইল্লা’! ফরচুন বরিশালকে টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন করার পর সংবাদ সম্মেলনে মজার আড্ডায় তামিম নিজেই হেসে যোগ দিয়েছিলেন। ‘চিটাগং নেয় না তো আমাকে... আমি কী করব বলেন।’

তামিমকে ঘিরে ফরচুন বরিশালের যে সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, সেটা অন্য দলে সেভাবে এখনও গড়ে ওঠেনি। বিপিএলের পেশাদার ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে বরিশাল ও রংপুর বাদে কেউ সেভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। ঠিক এখানেই আইপিএলের সঙ্গে বিপিএলের বড় একটা পার্থক্য রয়েছে বলে মনে করেন তামিম। ১৩ বছরের আসরের শহরভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকানা বদলেছে অনেকবার। যে কারণে নামও বদলেছে বহু, যা নিয়ে প্রায় প্রতিবারই বিভ্রান্তিতে পড়েন দর্শকরা। আর এমন বিভ্রান্তি নিয়ে আর যাই হোক ‘ফ্যানবেইজ’ তৈরি হয় না। আর এখানেই বিপিএলের একটা নিয়ম বদলানোর সুপারিশ তামিমের। 

আগের দুই আসরের নিয়ম ছিল আগের দল থেকে সর্বোচ্চ তিন ক্রিকেটারকে ধরে রাখতে পারবে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেই সংখ্যাটা আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তামিম ইকবাল। ‘আপনি যদি মাত্র একজনকে ধরে রাখেন, তাহলে এতদিনে গড়া ফ্যানবেইজ শেষ হয়ে যাবে। তাই ৫-৬ বা ৪টা.

.. কমপক্ষে চারজনকে ধরে রাখার সুযোগ দেওয়া উচিত।’

ক্রিকেটারদের রিটেন করা ছাড়াও মালিকানা পরিবর্তনের একটা বড় সুযোগ থাকছে আগামী আসরে। ২০২২ সালে তিন আসরের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকানা দিয়েছিল বিসিবি, যা কিনা এই আসর দিয়েই শেষ হয়েছে। সামনের আসর থেকে পাঁচ বছরের জন্য নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি নেবে বিসিবি। সেখানে পরীক্ষিত পুরোনোরা চাইলে দল ধরে রাখতে পারবে। তবে এবার  মালিকানা দেওয়ার ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক থাকবে বিসিবি। বারবার মালিকানা বদল যে বিপিএলের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না, সেটা দর্শকরাও বুঝে নিয়েছেন। 

তামিম নিজেও তাঁর কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ‘আইপিএলের উদাহরণ দিই আমরা। সেখানে নিয়ম কখনও পরিবর্তন হয় না। তাই মূল ক্রিকেটাররা একই দলে থেকে যায়। আমাদের যেটা সমস্যা হয়, মালিকপক্ষ বদলে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় চিটাগংয়ের কথা। সেখানে চিটাগংয়ের এবার এক মালিক, পরের বছর আরেক মালিক। কিন্তু এটাতেও দল তো একই থাকছে। ক্রিকেটারও একই থাকছে। তাই মালিক পরিবর্তন হোক বা না হোক, অন্য কেউ আসুক বা না আসুক, কেউ যদি চিটাগংয়ের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে, তাহলে তাকে একই স্কোয়াডে ধরে রাখার অনুমতিটা রাখা উচিত।’ তামিম তাঁর এক যুগের বেশি বিপিএলের অভিজ্ঞতা থেকেই এই উপলব্ধি করেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ত ম ম ইকব ল ফ র য ঞ চ ইজ ব প এল র

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

৩. সারভাইক্যাল রিবস

৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে

৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা

৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়

১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ

১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস

১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া

১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

১৬. হাড়ের ইনফেকশন

১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।

বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।

সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।

ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।

হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।

ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

চিকিৎসা

চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়

১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।

২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।

৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।

৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।

৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।

৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।

১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।

১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।

১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ