যুক্তরাষ্ট্রের পেমেন্ট সিস্টেমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডজ) প্রবেশাধিকার আটকে দিয়েছেন একজন ফেডারেল বিচারক। এর ফলে লাখ লাখ আমেরিকানের ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্য মাস্কের দল আর দেখতে পারবে না। খবর বিবিসির।

মার্কিন জেলা বিচারক পল এ.

ইংগেলমায়ার স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) একটি প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে মাস্ক ও তার দলকে অবিলম্বে যে কোনো অনুলিপি ধ্বংস করার নির্দেশ দেন।

এমন সময় এই আদেশ আসলো, যখন ১৯টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মাস্ককে বিশেষ সরকারি কর্মী হিসেবে এই ধরনের সংবেদনশীল নথি দেখার সুযোগ দেওয়ায় ফেডারেল আইন লঙ্ঘন হয়েছে, কারণ ডজ কোনো অফিসিয়াল সরকারি বিভাগ নয়।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সহায়তা বন্ধ

ইউএসএআইডি কর্মীদের ছুটিতে পাঠাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আদালতে স্থগিত

রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাস্ক তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে এটিকে ‘সম্পূর্ণ পাগলামি!’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “জনগণের করের টাকা কীভাবে ব্যয় হচ্ছে, তা না দেখলে কীভাবে জালিয়াতি ও অপচয় বন্ধ করব?”

বিচারক ইংগেলমায়ারের আদেশে বলা হয়েছে, এই তথ্য অপ্রত্যাশিতভাবে ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করবে এবং সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়াবে। ফলে, শুধুমাত্র অর্থ বিভাগের সরকারি কর্মীরা যারা ব্যাকগ্রাউন্ড চেক পাস করেছেন এবং ব্যুরো অব ফিসক্যাল সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী, তারা এই নথিগুলোতে অ্যাকসেস করতে পারবেন।

নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিয়া জেমস এই মামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ এবং ডজ টিমের সীমাহীন তথ্য প্রবেশে আমেরিকানরা আতঙ্কিত ছিলেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা জানতাম, ট্রাম্প প্রশাসনের এই প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেওয়া অবৈধ। আজ সকালে ফেডারেল আদালতও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে।”

বিচারকের আদেশ অনুযায়ী, মার্কিন অর্থ বিভাগের অর্থ প্রদান ও ডাটা সিস্টেমে রাজনৈতিকভাবে নিযুক্ত কর্মকর্তা, বিশেষ সরকারি কর্মচারী এবং অন্যান্য সংস্থা থেকে ট্রেজারিতে যোগ দেওয়া কর্মচারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

ট্রাম্প মাস্ককে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডজ) নেতৃত্বে নিয়োগ দিয়েছিলেন, যাতে তিনি সরকারি ব্যয় ও দুর্নীতি চিহ্নিত করতে পারেন। তবে ডেমোক্র্যাট ও বিভিন্ন অ্যাডভোকেসি গ্রুপ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, মাস্ক তার ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করছেন। তারা বলছেন, তিনি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলো বন্ধ করতে চাইছেন এবং ব্যাপক হারে ফেডারেল কর্মীদের বরখাস্ত করার পরিকল্পনা করছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ