শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কালিয়াকৈরে বিক্ষোভ
Published: 9th, February 2025 GMT
গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও এক শিক্ষার্থীকে গুলি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ করে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, গত শুক্রবার রাতে গাজীপুরের ধীরাশ্রম দাক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হকের বাসভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীর ওপর গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তার প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
কয়েকজন শিক্ষার্থী আরও জানান, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, গাজীপুরে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলি করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত নয়টার দিকে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর শুরু হয়। তখন স্থানীয় মসজিদে মাইকে ‘মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। এরপর একদল লোক এসে বাড়িটি ঘিরে ফেলে এবং মারধর শুরু করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ও আহত শিক্ষার্থীরা বলেন, ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পর তাঁরা গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রচার করেন, কোথাও ভাঙচুর হলে তাঁদের যেন জানানো হয়। শুক্রবার রাতে তাঁদের কাছে খবর আসে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হচ্ছে। এটি শোনার পর প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীরা রওনা হন। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, লুটপাট হচ্ছে। বাধা দিলে পেছন থেকে হুট করে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যান। মুখ বাঁধা কিছু লোক রামদা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। অন্য শিক্ষার্থীরা আসার আগে ওই ১৫ জনকে ছাদে নিয়ে বেধড়ক পেটান, কুপিয়ে জখম করেন। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের ওপরও হামলা হয়। পুলিশকে জানানো হলে দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে।
হামলার পর আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত সাতজনকে পাঠানো হয় ঢাকায়। আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে রাত তিনটার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের কতিপয় বিপথগামী বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিকেলে অনুষদীয় চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা করেন।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাহা’র নেতৃবৃন্দ ও অনুষদের ডিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ তুলে মতামত দেন।
আরো পড়ুন:
গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫
ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়
আলোচনা সভা শেষে বাহা ও ওই অনুষদ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই কার্যক্রমে অনুষদের সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন ও হেয় করতে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপচেষ্টায় লিপ্ত।
বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয় এবং প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের সমাবেশে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।
এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী বলেন, “আমরা পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন লেভেলের কয়েক’শ গত ১ সপ্তাহ ধরে আমাদের যৌক্তিক দাবি কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদগামী বলে সম্বোধন করছেন, তাদের আমরা এ অনুষদ চত্বর থেকে লালকার্ড দেখাই। কোনো বিবৃতি বা হুমকি দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না।”
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “বাকৃবিতে চলমান যৌক্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাহা’র মহাসচিব ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও, তার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপথগামী বলা হয়। এছাড়া আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর আন্দোলন হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা মিথ্যা, অপমানজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী