ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড
Published: 9th, February 2025 GMT
শূন্য পদে নিয়োগসহ চার দাবিতে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের সচিবালয়ে অভিমুখী লংমার্চে লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। এতে নারী শিক্ষার্থীসহ ১১ জন আহত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে রোববার বিকেলে শাহবাগ থেকে সচিবালয় অভিমুখে রওনা দেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা ভবনের সামনে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে। পুলিশের তাড়া খেয়ে আন্দোলনকারীরা কদম ফোয়ারা ও মৎস্য ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দিকে চলে যান।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষা ভবনের সামনে এলে প্রতিরোধের জন্য একটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এতে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়, তবে লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেনি।
ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক সাকিব মাহমুদ বলেন, দীর্ঘ তিন মাস একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন করলেও আমাদের দাবি পূরণ করা হয়নি। তাই সড়কে নামতে হয়েছে। মিছিল নিয়ে আমরা সচিবালয়ের দিকে যাচ্ছিলাম। শিক্ষা ভবনের সামনে গেলে পুলিশ লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন মেহরাব, এরশাদুল হক, জাহিদুল হাসান, সোহাগ, আমানুল্লাহ, সায়মা, সুমাইয়া খাতুন, তাহমিনা আক্তার তমা, মোহাম্মদ রাসেল, শিহাব ও আরাফাত।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো.
এর আগে শাহবাগ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি শিক্ষার্থী প্রতিনিধি দলকে সচিবালয়ে নিয়ে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবী। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের আজহারুল হক রামিম, মুজাহিদুল ইসলাম, হাসিবুল ইসলাম শান্ত, আহমদ উল্লাহ মানসুর ও শামীম মিঞা।
তুহিন ফারাবী বলেন, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগের বিষয়ে সোমবারের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীরা এমন আশ্বাস না মেনে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে।
এদিকে দীর্ঘ চার ঘণ্টা শাহবাগ মোড়ে সড়ক অবরোধের কারণে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়। অবরোধের ফলে সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ হয়ে মৎস্য ভবন এবং কাকরাইল থেকে শাহবাগ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অভিমুখী উভয় লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে শাহবাগের সড়কে অবস্থান নেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন পথচারী ও অফিসগামী চাকরিজীবীরা।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে– অবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ ও নতুন পদ সৃষ্টি; প্রতিষ্ঠানের নাম ও কোর্স কারিকুলামের সংশোধন; ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষা এবং স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা। গত জানুয়ারিতেও ম্যাটস শিক্ষার্থীরা এসব দাবিতে কারওয়ান বাজার ও জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন।
দেশে ১৬টি সরকারি ও ৫১টি বেসরকারি অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল আছে। এসব ট্রেনিং স্কুল থেকে তিন বছরের কোর্স সম্পন্ন করলে শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি ডিগ্রি পান। তারা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ হিসেবে চাকরির সুযোগ পান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম য টস শ ক ষ র থ ম য টস শ ক ষ র থ র স মন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস
ইসরায়েলের কাছে আরো তিন জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গতকাল রবিবার রাতে মরদেহগুলো রেডক্রসের হাতে তুলে দেয় তারা।
আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা
পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা বাংলাদেশের
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলেছে, “রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েল তিন মৃত জিম্মির কফিন গ্রহণ করেছে। যেগুলো গাজায় থাকা প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থা শিনবেতের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিচয় শনাক্তে মরদেহগুলো শনাক্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে।”
যদি এই জিম্মির পরিচয় শনাক্ত হয় তাহলে যুদ্ধবিরতির পর হামাসের হস্তান্তর করা মরদেহের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছাবে। গত মাসে যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় তখন তাদের কাছে ২৮ জিম্মির মরদেহ ছিল।
ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে মরদেহগুলো ফেরত দিতে দেরি করছে। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, মরদেহগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এগুলো উদ্ধার করতে তাদের সময় লাগছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড জানায়, রবিবার সকালে দক্ষিণ গাজার একটি সুড়ঙ্গ থেকে তারা মরদেহগুলো উদ্ধার করেছে।
পরে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়, “সব জিম্মিদের পরিবারকে সেই অনুযায়ী আপডেট করা হয়েছে এবং এই কঠিন সময়ে আমাদের হৃদয় তাদের সাথে রয়েছে। আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং শেষ জিম্মিটি ফিরে না আসা পর্যন্ত থামবে না।”
হোস্টেজ এবং মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম গাজা থেকে বাকি সব মৃত জিম্মিকে উদ্ধারের জন্য নেতানিয়াহুকে জরুরিভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।
হামাস ও ইসরায়েল একে অপরকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, রবিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, তারা তাদের সৈন্যদের জন্য হুমকিস্বরূপ এক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।
গত ১৩ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে গাজা থেকে জীবিত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।
ঢাকা/ফিরোজ